ফড়ে রাজ ঠেকাতে বছর তিনেক আগে তৈরি হয়েছিল কিসান মান্ডি। কিন্তু নীল-সাদা রঙের সেই কিসান মান্ডিতে চাষির দেখা নেই। কোথাও ঝুড়িতে সব্জি নিয়ে কয়েক জন চাষির দেখা মিললেও, দেখা নেই ক্রেতার।
এ বার রাজ্যের কিসান মান্ডিগুলিকে চালু করতে নতুন দাওয়াই বাতলে দিল কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত। বুধবার তিনি নদিয়ার কৃষ্ণনগরে বলেন, ‘‘মান্ডিগুলিকে পরিপূর্ণ বাজারের আকার দেওয়া হবে। সেখানে জামাকাপড় থেকে ইন্টারনেট, ধাবা —সবই থাকবে।’’ প্রশাসনের আশা, এর ফলে কিসান মান্ডিগুলি সতেজ হয়ে উঠবে।
বছর চারেক আগে রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে কিসান মান্ডি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী ১৮৬টি মান্ডি তৈরিও হয়। ফসল ওঠার মুখে চাষিরা তাঁদের ফসল ফড়েদের কাছে অভাবি বিক্রি করতে বাধ্য হন। কৃষি বিপণন দফতরের ভাবনা ছিল, চাষিরা নিজেরাই ফসল নিয়ে মান্ডিতে বসবেন। চাষি নিজেই উৎপাদিত ফসল বিক্রি করবেন।
কিন্তু ভাবনা বাস্তবের সঙ্গে মেলেনি। দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ—কোথাও কিসান মান্ডি সে ভাবে কাজ করছে না। সরকারি হিসেবে, ১৬৪টি মান্ডি চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। সেখানে সকাল-সন্ধ্যায় মুষ্টিমেয় কৃষক ফসল নিয়ে বসেন। কিন্তু সে ক্রেতার ভিড় সে ভাবে থাকে না। দফতরের এক কর্তা জানান, ২২টি মান্ডি তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। বহু কষ্টেও চালু করা যায়নি।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এখন শপিং মল সংস্কৃতি শহরের গন্ডি পেরিয়ে বর্ধিষ্ণু জনপদেও ছড়িয়ে পড়েছে। সে ক্ষেত্রে কেবলমাত্র চাল, ডাল, আলু, পটল বিক্রয়কেন্দ্র মান্ডিতে খদ্দের ভিড় করবে না এটাই স্বাভাবিক। একই ছাদের তলায় যেখানে জামা-জুতো থেকে শুরু করে মুদিখানার মালপত্র ও শাক-সব্জি মিলবে, সেখানেই যাবেন ক্রেতারা। তাই কিসান মান্ডিগুলিকে নতুন সাজে সাজানো হচ্ছে। সেখানে শপিং মালের মতোই এক ছাদের তলায় মিলবে প্রয়োজনীয় সব কিছুই। কাপড়ের দোকান, স্টেশনারি দোকান, জুতোর দোকান, হোটেল, ব্যাঙ্কের সুবিধাও মিলবে মান্ডিগুলিতে। ফলে লোকজন মান্ডিমুখো হবেন।
মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, “কিসান মান্ডিগুলিকে পুরোপুরি বাজারের আকার দেওয়া হবে।’’
এতে ফলে কৃষকদের স্টল পেতে সমস্যা হবে না? মন্ত্রী জানান, এর জন্য অতিরিক্ত স্টল তৈরি করা হবে। যাতে কৃষক তাঁর উৎপাদিত পণ্য বেচতে এসে ফিরে যান।
এ দিন মন্ত্রী জানান, এ ছাড়াও নদিয়াতে ৫টি সুফল বাংলার স্টল তৈরি করা হবে। সেখানে ন্যায্য দরে মালপত্র বিক্রি করে সরকার। শাক-সব্জি, হাঁস মুরগির মাংস সবই মিলবে ওই সব স্টলে।