পাত পেড়ে। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
শুভস্য শীঘ্রম।
তাই সাতসকালে বিয়ে। এবং পিকনিকেই বৌভাত।
মঙ্গলবার এমন পিকনিক-বিয়ের সাক্ষী থাকল লালবাগের নিশাতবাগ।
আমবাগানে চুইয়ে পড়ছে নরম রোদ। পাশে আদিগন্ত সর্ষেখেত। শহর থেকে বেশ কিছুটা দূরে এমন নির্জন জায়গায় সাতপাকে বাঁধা পড়লেন নির্মেলেন্দু মণ্ডল ও শর্মিলা হালদার। সকালে স্থানীয় একটি মন্দিরে বিয়ে মিটে যাওয়ার পরে দু’পক্ষই হাজির পিকনিকে।
পাত্রের জামাইবাবু তোতন মণ্ডল ও তাঁর বন্ধুরা ছিলেন রান্নার দায়িত্বে। মেনু ভাত, মুগডাল, বেগুনি, পনিরের তরকারি, মুরগির মাংস, টম্যাটোর চাটনি, দই ও মিষ্টি। দুপুরে পাত পেড়ে খেতে বসলেন দু’পক্ষের বাড়ির লোকজন। থার্মোকলের থালায় নববধূ বেড়ে দিলেন সাদা ভাত।
ইসলামপুরের বাসিন্দা নির্মলেন্দু পাত্রী খুঁজছিলেন বেশ কিছু দিন ধরেই। শেষতক রানিনগরের শর্মিলা হালদারের সঙ্গে তাঁর বিয়ের ঠিক হয়। কিন্তু গোল বাধাল নোট বাতিলের ঘোষণা। শর্মিলার বাবা সুরেশ হালদার জানিয়ে দেন, তাঁর সামান্য কিছু জমি আছে। সেটা বিক্রি করেও তিনি বিয়ের খরচ মেটাতে পারতেন। কিন্তু টাকাপয়সার এই হাহাকারে কেউ জমি কিনতে রাজি হচ্ছিলেন না।
এ দিকে পাত্র পক্ষও অপেক্ষা করতে রাজি নয়। তাঁরা জানিয়ে দেন, পৌষ মাসে তাঁদের বিয়ে হবে না। মাঘ-ফাল্গুন হলেও অনেক দেরি হয়ে যাবে। অতএব যা হবে অগ্রহায়ণেই। এমন অবস্থায় হাল ধরেন পাত্রের জামাইবাবু তোতনবাবু। তিনি জানিয়ে দেন, বিয়ে নিয়ে পাত্রীপক্ষের কিছু ভাবার দরকার নেই। যা করার তাঁরাই করবেন।
তোতনবাবু জানান, এই মঙ্গলবারেই তাঁর বন্ধুদের নিয়ে পিকনিক করার কথা ছিল। সেই মতো এ দিনই তিনি বিয়ের দিনক্ষণ পাকা করেন। ফলে একই যাত্রায় বিয়েও হল, আবার পিকনিকও। পাশাপাশি খেতে বসে হাসতে হাসতে নবদম্পতি বলছেন, ‘‘যাক, এ বছরে আর পিকনিক করার দরকার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy