Advertisement
১৮ মে ২০২৪

পুরনো নোটে গরু কিনে এনে পাচার খান্দুয়ায়

বাঁশ বাগানের ছায়ায় আপাতত কুয়াশার অপেক্ষায় তারা! এ-ওর গায়ে ঢলে পড়ে দিব্যি নিশ্চিন্ত জাবর কেটে চলেছে তারা। চটের ‘সোয়েটার’ চড়িয়ে কারও বা জুটেঠছে বাড়তি আদর, বাড়ির উঠোনেও।ওরা মাঝ বয়সী এক দঙ্গল গরু-মোষ।

লালগোলায় মজুত করা মোষ। —নিজস্ব চিত্র

লালগোলায় মজুত করা মোষ। —নিজস্ব চিত্র

সুজাউদ্দিন
লালগোলা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৫৫
Share: Save:

বাঁশ বাগানের ছায়ায় আপাতত কুয়াশার অপেক্ষায় তারা!

এ-ওর গায়ে ঢলে পড়ে দিব্যি নিশ্চিন্ত জাবর কেটে চলেছে তারা। চটের ‘সোয়েটার’ চড়িয়ে কারও বা জুটেঠছে বাড়তি আদর, বাড়ির উঠোনেও।

ওরা মাঝ বয়সী এক দঙ্গল গরু-মোষ।

নোটের ধাক্কায় এক লপ্তে কেউ বিশ কেউ বা গোটা চল্লিশ গরু-মোষ কিনে বাড়িতেই হাট বসিয়ে দিয়েছেন।

সীমান্তের আটরসিয়া, তারানগর কিংবা কাঁটাতারের বেড়ার গা ঘেঁষা খান্দুয়ায় পা রাখলে গবাদি পশুর এমন ভিড় দেখে মনে হতেই পারে, হাট বসেছে বেড়ার ধারে!

জেনে রাখুন, হাট নয়, পুরনো নোট বাতিল হতেই, লাইনম্যানেরা (সীমান্তে গরু পাচারকারিরা এ নামেই পরিচিত) পুরনো টাকায় গরু কিনে আপাতত মজুত রেখেছেন ধঘরের দাওয়ায়। বিএসএফের এক কর্তা বলছেন, ‘‘আসলে ওরা অপেক্ষা করছে অগ্রহায়ের কুয়াশার জন্য, সেটা পড়তে শুরু করলেও পদ্মা পার করে পাচারের চেষ্টা করবে!’’

আর সেই অপেক্ষাতেই রয়েছে বিএসএফ।

পাচারের জন্য লালগোলার ‘খ্যাতি’ কম নয়। কখনও মাদক কখনও বা ফেনসিডিস সিরাপ আবার কখনও গরু— পাচার চলছেই।

তবে, পুরনো টাকা সাদ করতে গরু কিনে এমন মজুদ করে রাখার ঘটনা আটরসিয়া বিশেষ দেখেনি।

স্থানীয় এক গ্রামবাসী বলছেন, ‘‘আমাদের গ্রাম ঘেঁষেই রাতে সার দিয়ে গরুর লাইন চলে সীমান্তের দিকে। তবে এমন মজুত করে রাখা আগে দেখিনি।’’

নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়েছে এই গরুর ‘জমায়েত’। গ্রামবাসীদের দাবি, পাচারকারী ছাড়াও, এলাকার কিছু বড় ব্যাবসায়ীও কালো টাকা সাদা করতে ওই পথ বেছে নিয়েছেন। লালগোলা বাজার লাগোয়া তারানগরের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘অনেকে পাচারের সঙ্গে সরাসরি হয়তো জড়িয়ে নেই, কিন্তু এখন গরু কিনে রেখেছেন। সুযোগ বুঝে লাইনম্যানদের বেচে দেবেন।’’

বিএসএফের নজর অবশ্য এড়ায়নি। তাদের এক কর্তা বলছেন, ‘‘আমরা অপেক্ষায় রয়েছি, সুযোগ বুঝে পাচারের চেষ্টা করলেই আমরা তৎপর হব।’’ তবে, জেলা পুলিশের কাছে যতারীতি এ ব্যাপারে কোনও খবর নেই। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (লালবাগ) অংশুমান সাহা বলেন, ‘‘আমাদের নজরে নেই বিষয়টি, অভিযোগও পাইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

banned notes
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE