অনাদর: বেঞ্চ নেই তাই মেঝেয় বসে ক্লাস। নাকাশিপাড়ার রাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
পোশাক মিলেছে। শিক্ষা দফতর থেকে মিলেছে জুতোও। কিন্তু পরিষ্কার পোশাক-জুতো পড়ে পড়ুয়াদের বসতে হচ্ছে মেঝেতে। চটের বস্তার উপর। কেউ কেউ আবার জুতোর উপর বসতে বাধ্য হচ্ছে। এ চিত্র দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলা— নদিয়া, মুর্শিদাবাদের সিংহভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের কর্তারা জানাচ্ছেন, শহরের বেশির ভাগ স্কুলেই বেঞ্চ রয়েছে। কিন্তু গ্রামের দিকে স্কুলের ধুলো-বালি ভরা মেঝেতেই বসতে হয়।
নদিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ রায় বলছেন, ‘‘আসলে সরকারি কোনও প্রকল্পের অধীনে স্কুলগুলিতে বেঞ্চ দেওয়ার বিধান নেই। তাই জন প্রতিনিধিদের অনুরোধ করেছি তাঁদের স্থানীয় এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে কিছু স্কুলে বেঞ্চের ব্যবস্থা করে দিতে। অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা আমাদের অনুরোধ রাখছেন।’’
নদিয়ার বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, বিধায়কেরা বেঞ্চ দেওয়ার ক্ষেত্রে অতটা আগ্রহী নন। তার নিট ফল, মেঝেতেই বসতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। জেলার ২৬২৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাতে গোনা কয়েকটিতে রয়েছে বেঞ্চ। সেখানে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির সব পড়ুয়াই বেঞ্চে বসে ক্লাস করে।
আরও পড়ুন: শব্দবিধি মেনে ‘অমাইক’ প্রচার
একই ভাবে তেঁতুলবেড়িয়া, উদোমপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়েও বেঞ্চ নেই। তেঁতুলবেড়িয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফারুখ রহমান বলেন, ‘‘বেঞ্চের অভাবে খুদে পড়ুয়াদের মেঝেয় বসতে হচ্ছে। চেষ্টা করছি ওদের জন্য বেঞ্চের ব্যবস্থা করার।
জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিক সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, প্রাথমিক স্কুলগুলিকে বছরে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য হাজার দশেক টাকা দেওয়া হয়েছে। হাই স্কুলের ক্ষেত্রে টাকার অঙ্কটা হল ৬১ হাজার টাকায়। অনেক স্কুলই এই টাকা একাংশ দিয়ে বেঞ্চ বানিয়ে নেয়।
অন্য দিকে, মুর্শিদাবাদের প্রায় ৯৮ শতাংশ প্রাথমিক স্কুলেই বেঞ্চ নেই। বস্তা পেতে মাটিতেই বসতে হয় পড়ুয়াদের। সিপিএমের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সম্পাদক নবেন্দু সরকার বলেন, “বিশ বছর আগে কার্পেট দিয়েছিল স্কুলগুলিকে। সেগুলিই কোথাও আছে। কোথাও বা সেটাও নেই। মেঝেতেই বসে পড়ুয়ারা। তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি শুভজিৎ সিংহ বলেন, “বেঞ্চ, ডেস্ক কেনার মত কোনও ফান্ড প্রাথমিক স্কুলগুলি পায় না। ফলে মাটিতে বসা ছাড়া উপায় কী?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy