Advertisement
০২ মে ২০২৪
Kandi Royal Family

সূর্যোদয়ের আগেই শুরু হয় রাজ পরিবারের রাস উৎসব

মন্দিরের কর্তাব্যক্তিরা জানান, অন্যান্য দিনের মতোই রাসের দিন সূর্য উদয়ের আগে প্রথমে রাধাকৃষ্ণের ঘুম ভাঙানো হয়।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কৌশিক সাহা
কান্দি শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:১২
Share: Save:

একে একে সমাপ্ত হয়েছে দুর্গাপুজো, কালীপুজো, জগদ্ধাত্রীপুজো, ছটপুজো। এখন এক দিকে চলছে নবান্ন উৎসব, এরই মধ্যে সোমবার শুরু হয়েছে রাস উৎসব। কান্দি রাজ পরিবারের রাধাবল্লভ মন্দিরে পালিত হচ্ছে রাস উৎসব। টানা ১০ দিন ধরে এই উৎসব চলবে কান্দি রাজ পরিবারের মন্দিরে। মেলা, কীর্তনগান ও বাউলগানের আয়োজন করেছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।

মন্দির কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, সকালের সূর্য উদয় হওয়ার আগে থেকে রাস উৎসব শুরু হয় কান্দি রাজ বাড়ির রাধাবল্লভ মন্দিরে। ওই দিন ভোর থেকেই মন্দিরে দর্শনার্থীরা ভিড় করতে শুরু করেন। টানা তিন দিন ধরে রাস উৎসবের কারণে বিশেষ পুজো হয় এই মন্দিরে। শহরের বাসিন্দারা ছাড়াও বহড়া, আনুখা, পাঁচথুপি, গোকর্ণ-সহ বহু গ্রামের বাসিন্দারা মন্দিরে ভিড় করেন। রাসের দিন থেকে পরপর তিন দিনের বিশেষ পুজোয় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নয় বার ভোগ নিবেদনের রেওয়াজ আজও ধরে রেখেছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।

মন্দিরের কর্তাব্যক্তিরা জানান, অন্যান্য দিনের মতোই রাসের দিন সূর্য উদয়ের আগে প্রথমে রাধাকৃষ্ণের ঘুম ভাঙানো হয়। তার পর গোলাপ জল দিয়ে স্নান করানো হয় রাধাকৃষ্ণের মূর্তি যুগলকে। স্নান সমাপ্ত হওয়ার পর ভোরের জামাকাপড় পরানোর সঙ্গে সোনা ও রুপোর গহনা দিয়ে সাজিয়ে মন্দিরের সিংহাসনে রাখা হয় মূর্তি। মঙ্গলারতির মাধ্যমে মিঠাই ভোগ দেওয়া হয়। ওই ভোগে মতিচুরের লাড্ডুর সঙ্গে জল ছাড়া আর কিছুই থাকে না। ফের দু’ঘণ্টা পরে বাল্যভোগ নিবেদন করতে হয়। মুগ ডাল ভিজে, গোটা ছোলা ভিজে, পাঁচ রকমের সন্দেশ ও পাঁচ রকমের ফল দিয়ে বাল্যভোগ নিবেদন করা হয়। ঘণ্টাখানেক পরে দুধ ও ছানা দিয়ে ভোগ দেওয়া হয়। আবার কিছু পরে ফলার ভোগ দেওয়া হয়। ওই ভোগে গাওয়া ঘিয়ে ভাজা লুচি ও পাঁচ রকমের ভাজা, তরকারি ও মিষ্টি থাকে।

দুপুর বারোটা থেকে একটার মধ্যে অন্নভোগ দেওয়া হয়। ওই ভোগে কামিনীভোগ আতপ চালের সাদা ভাত, ঘি, মুগডাল, শাক, আলু ভাজা, পটল ভাজা, বেগুন ভাজা, কাঁচা কলাইয়ের বড়ার মতো পাঁচ রকমের ভাজা থাকে। একটি পাঁচ তরকারি, ফুলকপি ও ছানাবড়া দিয়ে রসা করা হয়। সেখানেই সাদা ভাতের সঙ্গে লুচি ও ক্ষীরের পায়েস দেওয়া হয়। শেষ পাতে থাকে চাটনি। মধ্যাহ্নভোজনে কোনও রকম মিষ্টির ব্যবস্থা থাকে না। মধ্যাহ্নভোজনের পর রাধাকৃষ্ণের দুপুরের বিশ্রামের সময়। ওই ভোগের পর রাধাকৃষ্ণের মূর্তি থেকে সমস্ত গহনা ও সকালের পোশাক খুলে, বিশ্রামের পোশাক পরানো হয়।

বিশ্রামের পর বিকেল চারটের সময় তাঁদের বৈকালিক ভোগের আয়োজন করতে হয়। সেই সময় লুচি ও মিষ্টি দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয়। রাসমঞ্চে লুচি, ফল ও মিষ্টি দিয়ে ভোগ নিবেদন করতে হয়। সেখান থেকে মূর্তি যুগলকে মন্দিরের গর্ভগৃহে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিড়ে ও ক্ষীরের ভোগের মাধ্যমে সন্ধ্যারতির ব্যবস্থা করা হয়। রাতে শয়ন কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় মূর্তি যুগলকে। এই ভাবেই পালিত হয় কান্দি রাজবাড়ির রাধাবল্লভ মন্দিরের রাস উৎসব।

মন্দিরের প্রধান সেবায়ত প্রশান্ত অধিকারি বলেন, “রাধাবল্লভ মন্দিরে গোপালকে বালক রূপে পুজো করা হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rash Festival Kandi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE