সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রায় ২৫ হাজার পরিযায়ী শ্রমিকের অনুপস্থিতি প্রদত্ত ভোট শতাংশ অনেকটাই প্রভাবিত করেছে। —প্রতীকী চিত্র।
বুধবার রাত পোহালেই ভাগ্য নির্ধারণ সাগরদিঘি উপনির্বাচনের প্রার্থীদের। ইতিমধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বী তিন দলের বুথভিত্তিক ফলাফল বিশ্লেষণের পর প্রায় সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থীই দাবি করছেন প্রত্যাশা মতো ভোট পেয়েছেন। তবে বুথভিত্তিক প্রাপ্ত ভোট বিশ্লেষণের পর বিজেপি খানিকটা ব্যাকফুটে বলে জানাচ্ছেন বিজেপিরই কয়েক জন নেতা। তবে তাঁরা আশাবাদী, জয়ী যে দলই হোক, বিজেপি থাকবে দ্বিতীয় স্থানে।
ফলপ্রকাশের সময় যত এগিয়ে আসছে চাপ বাড়ছে তৃণমূল এবং কংগ্রেস প্রার্থীর উপর। বুথভিত্তিক ভোট বিশ্লেষণ করে হাত শিবিরের নেতারা আত্মবিশ্বাসী। অন্য দিকে সংখ্যালঘু এলাকায় ভোটপ্রাপ্তি কত হবে, তা নিয়ে এখনও হিসাব কষছে তৃণমূল। খোদ তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ই বলছেন, ‘‘জয়ী হলেও আমাদের মার্জিন অনেকটাই কমবে। সর্বোচ্চ ব্যবধান ১৫,০০০ মতো হতে পারে।’’ তবে আত্মবিশ্বাসী কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের কথায়, ‘‘সংখ্যালঘু এলাকায় খুব ভাল ভোট পেয়েছি। তৃণমূলের ‘গড়’ যে পঞ্চায়েতগুলি, সেখানে এ বার চমকে দেওয়ার মতো ফল হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জয়ের ব্যবধান কোনও ভাবেই ২০ হাজারের নীচে নয়।’’
সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রায় ২৫ হাজার পরিযায়ী শ্রমিকের অনুপস্থিতি প্রদত্ত ভোট শতাংশ অনেকটাই প্রভাবিত করেছে। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে সাগরদিঘি বিধানসভায় যেখানে ভোট দানের হার ছিল ৭৮.৮৭ শতাংশ। সেই হার খানিকটা কমে উপনির্বাচনে হয়েছে ৭৫.১৮ শতাংশ। তা ছাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রায় ৮০ হাজারের কাছাকাছি হিন্দু ভোট রয়েছে। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে ধর্মীয় মেরুকরণের হওয়ায় বিজেপি পেয়েছিল ৪৪,৯৮৩টি ভোট। যা মোট হিন্দু ভোটের ৫০ শতাংশের কিছু বেশি। এনআরসি নাগরিকত্ব ও ধর্মীয় মেরুকরণের আবহে প্রাপ্ত হিন্দু ভোটকে ধরে রাখা বিজেপির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। অন্য দিকে, প্রাপ্ত ভোট ছিল ৩৬,৩৪৪টি। শতাংশ নিরিখে ১৯.৪৫ শতাংশ। তবে ‘হাতের’ নেতারা বলছেন, ফল আরও ভাল হতে পারত। আসলে ওই আসনে প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে মতানৈক্য হয়েছিল দুই জোটসঙ্গীর। যার জেরে সামগ্রিক ভাবে বাম শক্তিকে পাশে পায়নি কংগ্রেস। এমনটাই অভিযোগ করেছেন খোদ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
উপনির্বাচনে অবশ্য অধীর এবং সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে এক মঞ্চে দেখা যায়নি। তবে স্থানীয় স্তরে বাম-কংগ্রেসের বোঝাপড়া এবার অনেক বেশি পোক্ত বলে দাবি দুই শিবিরের। সম্ভাবনার সব অঙ্ক বিশ্লেষণ করলেও কংগ্রেস প্রার্থীর জয়ের জন্য ন্যূনতম ৫০ হাজার ভোট প্রয়োজন। গত নির্বাচনে প্রাপ্ত ৩৬ হাজার ভোটকে ৫০ হাজারের গণ্ডি ছোঁয়ানো নিঃসন্দেহে চ্যালেঞ্জ। তবে তাদের বুথফেরত হিসাব কষে কংগ্রেস বলছে, সংখ্যাটা ৬০ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিজেপির ভোট শতাংশ খুব বেশি হেরফের হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
আপাতত আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। বৃহস্পতিবার মোট ১৬ রাউন্ডের কাছাকাছি গণনা হতে পারে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy