Advertisement
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বিধায়ক খুনে পুরনো ক্ষত জেগেছে শীলবাড়ির

সরস্বতী পূজের দিন কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুন হওয়ার পর পুরনো ক্ষত যেন দগদগে হয়ে উঠেছে চাকদহের শীল বাড়িতে।

বাড়ির বারান্দায় শান্তনু শীলের স্ত্রী ও ছেলে। নিজস্ব চিত্র

বাড়ির বারান্দায় শান্তনু শীলের স্ত্রী ও ছেলে। নিজস্ব চিত্র

সৌমিত্র সিকদার
শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:০৫
Share: Save:

সেই ফেব্রুয়ারি মাস, সেই জলসায় খুন!

সরস্বতী পূজের দিন কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুন হওয়ার পর পুরনো ক্ষত যেন দগদগে হয়ে উঠেছে চাকদহের শীল বাড়িতে।

গত বছর ১১ ফেব্রুয়ারি চাকদহ শহরের কে বি এম এলাকায় পাড়ার ক্লাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন মোবাইল ব্যবসায়ী বছর ত্রিশ বয়েসের শান্তনু শীল। মঞ্চের সামনের চেয়ারে বসেছিলেন তাঁর স্ত্রী সোমা শীল এবং বছর দশেকের ছেলে সৌম্য। তাঁদের চোখের সামনে মঞ্চে দাঁড়ানো শান্তনুকে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। তাঁকে চাকদহ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনায় ধরা পড়ে বিশ্বনাথ দেবনাথ ওরফে বিশু, সুমন রায় ওরফে হাম্পি, হাম্পির ভাই অমন রায় ওরফে কালু, বিশ্বজিৎ ঘোষ ওরফে ছ্যাঁকা বিশু এবং গৌতম মণ্ডল ওরফে পুচু। কালু জেলে থাকলেও বাকিরা ওই মামলায় জামিনে রয়েছে। এরা সকলেই চাকদহের প্রাক্তন পুরপ্রধান দীপক চক্রবর্তীর কাছের লোক বলে পরিচিত।

ঠিক এক বছরের মাথায় আবার সেই ফেব্রুয়ারি মাসে ৯ তারিখে সরস্বতী পুজোর জলসায় খুন হয়েছেন সত্যজিৎ বিশ্বাস। সংবাদমাধ্যমে সেই খবর দেখার পর থেকে শান্তনুর খুনের ঘটনা নতুন করে ধাক্কা দিয়ে যাচ্ছে শীল পরিবারের সদস্যদের মনে। ভুলতে চাওয়া সে দিনের কথা বার বার মনে পড়ছে। কারণ দু’টি ঘটনার মধ্যেই মিল অনেক। সোমবার সকালে চাকদহ শহরের কে বি এমের বাড়িতে বসে শান্তনু শীলের বৃদ্ধা মা কল্পনা শীল বলেন, “টি ভি তে দেখছিলাম ঠিক আমার ছেলের মতো সত্যজিৎ বিশ্বাসকে খুন করা হয়েছে। ওঁর মাকে দেখছিলাম কাঁদতে। তার পর থেকে কিচ্ছু ভাল লাগছে না। আমিও তো এক জন মা।”

শান্তনুর স্ত্রী সোমা-র কথায়, ‘‘খুনের মুহূর্তটা ভোলার চেষ্টা করি। কিন্তু গত শনিবার থেকে বারবার সে দিনের কথা মনে পড়ছে।” তাঁর কথায়, “দিদি( চাকদহের বিধায়ক রত্না ঘোষ) এবং সাধনদা (চাকদহ শহর যুব তৃণমূলের সভাপতি সাধন বিশ্বাস) আমার কাজের জন্য চেষ্টা করছেন। আশা করছি কিছু একটা হবে। এখন কোনও রকমে দিন কাটাচ্ছি।”

শনিবার শান্তনুর ছেলে সৌম্যজিতের স্কুলে সরস্বতী পুজো হয়েছে। বন্ধুরা অঞ্জলি দিয়েছে। সে দিতে পারেনি। কারণ, তার বাবার মৃত্যুর পর এক বছর কাটেনি তখনও। মুখ নিচু করে সে বলে, ‘‘আমার বাবা মারা গিয়েছেন। তাই আমার অঞ্জলি দিতে নেই। খুব কষ্ট হচ্ছিল।’’ কথাগুলো বলতে বলতে মায়ের কোলে ঢুকে পরে ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র সৌম্য। পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ওঠার বার্ষিক পরীক্ষায় খুব একটা ভাল ফল করতে পারেনি বলে জানান মা সোমা। ছটফটে ছেলে চুপচাপ হয়ে পড়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Shantanu Seal Krishnaganj TMC MLA Murder Death Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy