Advertisement
E-Paper

ধরা নিষেধ, তবু বাজার ছেয়েছে ছোট ইলিশেই

বহরমপুর, ডোমকল, জলঙ্গি, ইসলামপুর, লালবাগ, লালগোলা, কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর, রানাঘাট— সব বাজারেই এই ছবি। ডায়মন্ডহারবার বা দিঘায় ধরা ইলিশ তো আছেই,  ফরাক্কা-ধুলিয়ানের গঙ্গায় ধরা ছোট ইলিশও রমরমিয়ে বিকোচ্ছে।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৪৮
বাজার ছেয়েছে ছোট ইলিশে। বহরমপুরে। নিজস্ব চিত্র

বাজার ছেয়েছে ছোট ইলিশে। বহরমপুরে। নিজস্ব চিত্র

বর্ষা চলে গিয়েও বর্ষণ ফিরেছে। কিন্তু বাজারে আর প্রমাণ লাইজের ইলিশ ফিরছে না।

ফিরবেই বা কী করে? তাদের বে়ড়ে ওঠার সুযোগ কই? তার বদলে বাজার ছেয়েছে সব নিয়মকানুনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ধরা ছোট ইলিশে। একশো, দু’শো, আড়াইশো, তিনশো গ্রাম বড় জোর। নদিয়া-মুর্শিদাবাদে প্রশাসনের মাছের ডগায় দেদার বিক্রি হচ্ছে সে সব। কর্তারা দেখেও দেখছেন না।

বহরমপুর, ডোমকল, জলঙ্গি, ইসলামপুর, লালবাগ, লালগোলা, কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর, রানাঘাট— সব বাজারেই এই ছবি। ডায়মন্ডহারবার বা দিঘায় ধরা ইলিশ তো আছেই, ফরাক্কা-ধুলিয়ানের গঙ্গায় ধরা ছোট ইলিশও রমরমিয়ে বিকোচ্ছে।

মৎস্য দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, নিয়ম অনুযায়ী ২৩ সেন্টিমিটারের (৯ ইঞ্চির) চেয়ে ছোট ইলিশ ধরা যাবে না, বিক্রি করা যাবে না, পরিবহণও করা যাবে না। করলে জেল-জরিমানা দুই’ই হতে পারে। তা হলে এ সব চলছে কী করে?

নদিয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অব ফিশারিজ অমলেন্দু বর্মন বলছেন, “ভাগীরথী লাগোয়া ব্লকগুলিতে ছোট ইলিশ ধরা বন্ধ করতে মৎস্যজীবীদের বোঝানো হয়েছে।” তাঁর দাবি, এই জেলায় ভাগীরথীতে ইলিশ তেমন ধরা পড়ে না। মোহনার উৎসমুখে ছোট ইলিশের কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

মুর্শিদাবাদের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অব ফিশারিজ জয়ন্তকুমার প্রধানও বলেন, “ভাগীরথী লাগোয়া ১১টি ব্লকে মৎস্যজীবীদের সচেতন করা হচ্ছে।” তাতে কী লাভ হচ্ছে? জেলায় যদি ধরা না-ও হয়, কিনে এনে বিক্রি করা তো চলছেই। জয়ন্ত জানান, গত বছর পুলিশ নিয়ে অভিযান চালানো হয়েছিল। এ বার তা হচ্ছে না কেন? নদিয়ার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “আমাদের কাছে নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।”

মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষায় ডিম পাড়ার সময়ে ঝাঁক-ঝাঁক ইলিশ মোহনা ছাড়িয়ে ভাগীরথীতে ঢুকে পড়ে। তবে ভাগীরথীতে ইলিশ ঢোকার পরিমাণ কমেছে। সেই ঘাটতি মেটাতে সমুদ্র এবং অংশত নদীতেও কিছু মাঝি বড় ইলিশের পাশাপাশি ছোট ইলিশ ধরছেন। কৃষ্ণনগরের এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, দিঘা আর ডায়মন্ডহারবার থেকে বড় ইলিশের সঙ্গে ছোট ইলিশও আসছে। ছোটর দাম কম হওয়ায় তা বিক্রিও হচ্ছে।

ছোট ইলিশ ধরা বন্ধ করতে ‘ইকোনমিক জোন’-এ (১২ নটিক্যাল মাইল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত) ১৪ এপ্রিল থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্র। সমুদ্রতট থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এবং রাজ্যের নদীগুলিতে জুন থেকে অগস্ট পর্যন্ত মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে রাজ্য সরকারও। ওয়েস্টবেঙ্গল ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, “মাছ ধরার নিষিদ্ধ করার সময়সীমা নিয়ে দেশ জুড়ে এক নীতি হওয়া দরকার। দু’মাসের জায়গায় সময়সীমা চার মাস করা উচিত। তবেই ছোট মাছ ধরা বন্ধ হবে।”

Hilsa Market
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy