প্রতীকী ছবি।
দেশের খাদ্যসুরক্ষা ও মান নির্ণয় কর্তৃপক্ষ (এফএসএসআই) সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে, এ বার থেকে মিষ্টির প্যাকেটের গায়ে লিখতে হবে মিষ্টি তৈরি ও মেয়াদ শেষের তারিখ। রাজ্য সরকারের কাছেও এই মর্মে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার থেকেই রাজ্যে এই নিয়ম চালু হওয়ার কথা। তা নিয়েই বিপাকে পড়েছেন জেলার মিষ্টি প্রস্তুতকারক এবং দোকান মালিকরা। এতদিন ওষুধ বা অন্য কয়েকটি খাদ্যসামগ্রীর গায়ে এ ধরনের তারিখ লিখে রাখা বাধ্যতামূলক ছিল। তবে মিষ্টির প্যাকেটের গায়ে তা লেখা হত না। যদিও ওই সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, মিষ্টির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম অনেক দিন ধরেই চালু। তবে তা বাধ্যতামূলক করা হল এ বার।
তবে কেন্দ্রের ওই নির্দেশ নিয়ে জেলার মিষ্টি বিক্রেতাদের কাছ থেকে তেমন সাড়া মেলেনি। প্রায় সকলেই বলেছেন, ওই নির্দেশ তাঁদের পক্ষে মানা কঠিন। লকডাউনের ফলে এমনিতেই বিক্রি কমেছে মিষ্টির। করোনা আবহে দূরত্ববিধি মানতে গিয়ে দোকানে ভিড় কমেছে। কেন্দ্রের নয়া নিয়মে নতুন করে ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে অভিযোগ মিষ্টি ব্যবসায়ীদের। সাধারণত রসের মিষ্টি তৈরির পর সেটি খাওয়ার উপযুক্ত থাকে ২৪ ঘণ্টা। ফ্রিজে রাখলে আরও কয়েক দিন রাখা গেলেও তা অস্বাস্থ্যকর। কড়া রসের মিষ্টি যেমন রাজভোগ, চমচম, ছানাবড়ার মতো মিষ্টি ভাল থাকে ৪৮ ঘণ্টা। সন্দেশ জাতীয় মিষ্টি সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খেয়ে নেওয়াই বিধি। বহরমপুরে মিষ্টি ব্যবসায়ী সুজিত সাহা বলেন, “এই নিয়ম আরও কিছুদিন পরে চালু হলে ভাল হত। প্রতিদিন মিষ্টির ট্রে-তে লিখে রাখা কিংবা প্যাকেটের গায়ে তারিখ লিখে রাখা অসম্ভব। পুজোর পর এই নিয়ম চালু করলে সুবিধা হত।” পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির বহরমপুর শাখার সম্পাদক সাধন ঘোষ বলেন, “আইন যখন হয়েছে তখন তা তো মানতেই হবে। এ ব্যাপারে রাজ্য কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পর। তারা বললে আমাদেরও নিয়ম চালু করতে হবে।”তবে জেলায় খাদ্যের মান নির্ণয়ের কোনও পরীক্ষাগার নেই। সরকারি আধিকারিকরাও নিয়মিত তদারকি করতে রাস্তায় নামেন না বলে অভিযোগ। সেক্ষেত্রে আইন বলবৎ হলে অনেক বিক্রেতাই অসাধু উপায় অবলম্বন করবেন বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। বহরমপুরের বাসিন্দা নন্দিনী মুখোপাধ্যায় বলেন, “এমনিতেই মিষ্টি বিক্রেতারা দু’দিন পরেও অবিক্রিত মিষ্টি বিক্রি করেন। পরীক্ষাগার না থাকায় সেই বিক্রেতাকেই বিশ্বাস করে মিষ্টি কিনতে হয়। তবে নতুন নিয়ম কতটা মানা হবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।’’প্রসঙ্গত, জেলায় খাদ্য সুরক্ষা ও মান নির্ণয়ের জন্য খাবারের নমুনা কলকাতায় পাঠানো হয়। ওই বিভাগের জেলা শাখার এক আধিকারিক জানান, ওই রিপোর্টে যদি নিয়মবিরুদ্ধ কিছু পাওয়া যায় তবে বিক্রেতাকে প্রথমে সতর্ক করা হয়। দ্বিতীয় বার ঘটনা ঘটলে আইনি পদক্ষেপ করা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy