Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সবুজেও ‘লাল’ দেখছেন মুর্শিদা, রেকিয়ারা

সময় নাকি এক আশ্চর্য মলম! কিন্তু তাতেও কি সব ক্ষত শুকোয়? ডোমকলে পুরভোটের দামামা বাজতেই ভিতরে ভিতরে অস্থির হয়ে পড়েছিলেন মুর্শিদা বেওয়া। মাঝেমধ্যেই শিউরে উঠছিলেন, ‘‘আবার ভোট, আবার অশান্তি, আবার রক্ত, আবার লাশ!’’

হাহাকার: মৃত তহিদুল ইসলামের মা ও স্ত্রী। ডোমকলে। —নিজস্ব চিত্র ।

হাহাকার: মৃত তহিদুল ইসলামের মা ও স্ত্রী। ডোমকলে। —নিজস্ব চিত্র ।

অনল আবেদিন
ডোমকল শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৭ ১৪:১৫
Share: Save:

সময় নাকি এক আশ্চর্য মলম! কিন্তু তাতেও কি সব ক্ষত শুকোয়?

ডোমকলে পুরভোটের দামামা বাজতেই ভিতরে ভিতরে অস্থির হয়ে পড়েছিলেন মুর্শিদা বেওয়া। মাঝেমধ্যেই শিউরে উঠছিলেন, ‘‘আবার ভোট, আবার অশান্তি, আবার রক্ত, আবার লাশ!’’ গত বিধানসভা ভোটে বুথের কাছেই খুন হন ডোমকলের হরিডোবা গ্রামের মুর্শিদার স্বামী, সিপিএম কর্মী তহিদুল ইসলাম। মুর্শিদার অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁর স্বামীকে খুন করে। তিনি জানান, বিধানসভায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে কংগ্রেস ও সিপিএম আলাদা ভাবে লড়েছিল। এ বার পুরভোটে কংগ্রেস-সিপিএম জোট বাঁধায় ভরসা পেয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভেবেছিলাম, ভোট হবে অবাধ, শান্তিপূর্ণ। স্বামীর আত্মা শান্তি পাবে। কিন্তু পুলিশ-প্রশাসনের সরাসরি মদত ও নীরবে সন্ত্রাস চালিয়ে জিতে গেল তৃণমূল। জোট করেও কিছু হল না। এর পরে যে কী হবে, কে জানে!’’

মুর্শিদা যে ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, সেই ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী একা পেয়েছেন ৩৬৫৯ ভোট। বিরোধী ৩ জন প্রার্থী মিলে পেয়েছেন মাত্র ২৬৮ টি ভোট। তার মধ্যে বিজেপির প্রার্থী পেয়েছেন ৬৯ টি ভোট, নির্দল প্রার্থী পেয়েছেন ৫৮টি ভোট। আর জোটের কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছেন সাকুল্যে ১৪১টি ভোট। মুর্শিদা বলেন, ‘‘আমাদের নিজেদেরই ভোট রয়েছে তিনশোরও বেশি। তবুও জোট প্রার্থী সাকুল্যে ১৪১টি ভোট পায় কী করে?’’

সে উত্তরও তিনিই দিচ্ছেন, ‘‘ভোটের আগের দিন বাড়িতে এসে ওরা শাসিয়ে গিয়েছিল, ভোটের দিন বুথে গেলেই আমরাও ‘তহিদুল’ হয়ে যাব। আমরা কেউ ভোট দিতেও যেতে পারিনি। তবুও সবার ভোট পড়ে গিয়েছে।’’

২০০৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটের দিন ডোমকল পুরসভা লাগোয়া সারাংপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পঞ্চাননপুর গ্রামের কংগ্রেস কর্মী সাজেম আলি ও সিপিএম কর্মী সাগর আলি খুন হন। ২০০৮ সালের যুযুধান দুই পক্ষ— কংগ্রেস এবং সিপিএম জোট বেঁধে লড়াই করায় গোটা গ্রাম তাকিয়ে ছিল ডোমকলের দিকে। সাজেমের স্ত্রী রাসিয়া বেওয়া ও সাগরের মা রেকিয়া বেওয়া বলেন, ‘‘জোট করে কী লাভ হল? দু’ পক্ষ মিলে দু’টি খুনের মামলা আদালতের বাইরে আপসে মিটিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Municipality election TMC Domkal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE