নাগাড়ে বৃষ্টি ও জমা জলের চাপে রেললাইনে ধস নামায় পূর্ব রেলের আজিমগঞ্জ–ফরাক্কা শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেল। রবিবার ভোর ৪টে ৪০ মিনিট নাগাদ সুজনিপাড়া ও আহিরণ স্টেশনের মাঝে প্রায় ১০০ মিটার এলাকা জুড়ে রেল লাইনে ধস নামে। তারপর থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয় ওই শাখার নবদ্বীপ-মালদহ এক্সপ্রেস-সহ সমস্ত প্যাসেঞ্জার ট্রেন। আচমকা এমন ঘটনায় দুর্ভোগে পড়েন কয়েক হাজার যাত্রী।
সাপ্তাহিক গরিব রথ ও কামাক্ষাগুড়ি–পুরী এক্সপ্রেস এবং ভায়া আজিমগঞ্জ ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে গুমানী স্টেশন হয়ে বোলপুরের পথে। ভাগলপুর–আজিমগঞ্জ প্যাসেঞ্জারকে নিমতিতা থেকে এবং বারহারোয়া–আজিমগঞ্জ প্যাসেঞ্জারকে ধুলিয়ান থেকেই ফেরত পাঠানো হয়েছে। হাওড়া–মালদহ প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে জঙ্গিপুর রোড স্টেশনেই আটকে দেওয়া হয়। পরে আজিমগঞ্জ কারসেডে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়েছে ট্রেনটিকে। এ ভাবে হঠাৎ করে একাধিক ট্রেন বাতিল ও মাঝপথ থেকে ঘুরিয়ে দেওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েন কয়েক হাজার যাত্রী। দীর্ঘক্ষণ বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করলেও রেল কর্মীরা ট্রেন চলাচলের ব্যাপারে তাঁদের কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি।
ফলে তড়িঘড়ি বাসের জন্য যাত্রীদের ছুটতে হয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। মালদহে বাড়ি ফিরবেন বলে সাতসকালেই ছেলেমেয়েদের নিয়ে জঙ্গিপুর স্টেশনে এসেছিলেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী সনাতন দাস। ধস নামায় নবদ্বীপ এক্সপ্রেস বাতিল হয়েছে শুনে স্টেশন থেকে উমরপুরে উদ্দেশে রওনা দেন। রাস্তায় টুকটুক উল্টে জখম হন তাঁর স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়ে। গ্রামীণ চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁরা ফের বাসে গন্তব্যে পৌঁছন।
এ দিন সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ ঘটনাস্থলে আসেন মালদহের ডিআরএম রাজেশ অর্গল-সহ রেলের কর্তারা। আপাতত জনা ত্রিশ শ্রমিক লাগিয়ে লাইন মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে। ডিআরএম জানান, এর আগেও এই এলাকায় বর্ষার সময় লাইনে একাধিক বার ধস নামার ঘটনা ঘটেছে। তাই এ বারেও এই এলাকায় নজর রাখছিলেন ইঞ্জিনিয়াররা। গত ক’দিন ধরে টানা বৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সকাল ১১টা থেকেই লাইনের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। সতর্কতা হিসেবে গতি কমিয়ে শনিবারে ট্রেনগুলি চালানো হচ্ছিল। রবিবার সুজনিপাড়া স্টেশন থেকে দক্ষিণে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে ২২৩/৩/৪ পিলারের কাছে ১০০ মিটার এলাকা জুড়ে মাটি ধসে রেললাইনটি বসে যায়। বন্ধ করে দিতে হয় সমস্ত ট্রেন। লাইন সারানোর চেষ্টা হচ্ছে। তবে কখন থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে সেটা অবশ্য স্পষ্ট করে বলতে পারেনি রেলকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy