Advertisement
E-Paper

ভোজবাজিতে পাল্টেছে ইস্কুলে দুপুরের ভোজ

লালগোলার রথের সময়ে কলাই ডালের অমৃত্তি-জিলিপি, জন্মাষ্টমীতে তালের বড়া, শীতে পিঠেপুলি। নলেন গুড়ের পায়েস। মাঝে-মাঝে জিভের তার বদলাতে কড়াইশুঁটি দিয়ে আলুর ডালনা বা ফ্রায়েড রাইস-কষা মাংস।

অনল আবেদিন

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৩০
পাতে পিঠে। নিজস্ব চিত্র

পাতে পিঠে। নিজস্ব চিত্র

বাইরে ঝাঁ-ঝাঁ রোদ। মিড-ডে মিলে আম-লিচু।

জানলায় ছাঁট তোলা ঝমঝমে বৃষ্টি তো খুদেদের পাতে ভাপা ইলিশ।

লালগোলার রথের সময়ে কলাই ডালের অমৃত্তি-জিলিপি, জন্মাষ্টমীতে তালের বড়া, শীতে পিঠেপুলি। নলেন গুড়ের পায়েস। মাঝে-মাঝে জিভের তার বদলাতে কড়াইশুঁটি দিয়ে আলুর ডালনা বা ফ্রায়েড রাইস-কষা মাংস।

পৌষ কবেই শেষ হয়ে গিয়েছে। মাঘেরও মাঝ পেরিয়ে গিয়েছে। গত শুক্রবার পদ্মাপাড়ে শতাব্দী-প্রাচীন লালগোলা এম এন অ্যাকাডেমির হাজার দেড়েক ছাত্রছাত্রী পাত পেড়ে খেল মাংস-ভাত, পায়েস, দুধ-পিঠে আর নলেন গুড়ের রসগোল্লা। কৌটো ভর্তি নলেন গুড়ের পায়েসও পাঠানো হল তাদের বাড়িতে।

বছর চরেক আগেও কিন্তু মিড-ডে মিল বলতে ছিল ভাত, জলের মতো ডাল আর কুম়ড়ো-আনাজের ঘ্যাঁট। বদল গেলে ২০১৬ থেকে।

রাজা যোগীন্দ্রনারায়ণ রায়ের দান করা ওই স্কুলটি রয়েছে লালগোলা পঞ্চায়েতের অধীনে। ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অজয় ঘোষের ছেলে অন্বেষণ পড়ে স্কুলের সপ্তম শ্রেণিতে। তার কথায়, ‘‘কয়েক বছর আগেও স্কুলে মি়ড-ডে মিল খাওয়া হত খোলা মাঠে, রোদ-বৃষ্টি মাথায় করে। গরু-ছাগল-কুকুর চরত চার পাশে। তাই আমি খেতাম না। আমার মতো অনেকেই খেত না।’’

২০১৬-র ডিসেম্বরে লস্করপুর হাইস্কুলের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক জাহাঙ্গির মিঞা বদলি হয়ে আসেন লালগোলা এমএন অ্যাকাডেমি হাইস্কুলে। তাঁরই নেতৃত্বে কয়েক জন সহ-শিক্ষকের উদ্যোগের ফলে এখন ডাইনিং টেবিলের উপরে থালা রেখে সুস্বাদু মিড-ডে মিলের খাবার খায় ছাত্রছাত্রীরা। রাতারাতি যেন ভেল্কিতে পাল্টে গিয়েছে সব।

লালগোলা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অজয় ঘোষ বলেন, ‘‘জাহাঙ্গির মিঞা লস্করপুর হাইস্কুল থেকে লালগোলা এমএন অ্যাকাডেমি হাইস্কুলে বদলি হয়ে আসার পরেই এই স্কুলের মিড-ডে মিলের লক্ষাধিক টাকা নয়ছয়ের ঘটনা ধরা পড়ে। কয়েক জন উদ্যমী শিক্ষককে নিয়ে তৈরি হয় মিড-ডে মিলের ‘ব্রিগেড’। তাঁরাই মিড-ডে মিলের মান, পরিমাণ ও রুচিতে বদল ঘটান। মিড-ডে মিল খাওয়ার লাইনে ভিড়ও বাড়ে।’’

বছর পঁয়ত্রিশের জাহাঙ্গির মিঞার মতে, ‘‘এতে মরসুমি খাবার খাওয়া ও তার আয়োজনের সময়ে সেই সব খাবারের উপকারিতা, উৎপাদন ও বাঙালির ঋতুনির্ভর খাদ্য সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞানলাভও করে পড়ুয়ারা।’’

পডুয়াদের বাড়িতে নলেন গুড়ের পায়েস ভর্তি কৌটো পাঠানো কেন? শিক্ষকদের একাংশের জবাব, মিড-ডে মিলের মান যে বাড়ির থেকে খারাপ নয়, সেটা বোঝাতেই এই ‘ভেট’ পাঠানো। বাবা-মায়েরা ভরসা না পেলে ছেলেমেয়েকে স্কুলের খাবার খেতে দেবেন কেন?

Mid Day Meal Foods Student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy