জয়ের হাসি।— নিজস্ব চিত্র
‘না’ এবং ‘হ্যাঁ’, মাঝে দেড়খানা সপ্তাহ। তাঁর অনুগামীরা বলছেন, ‘‘ক’টা দিন বড় উৎকণ্ঠায় ছিলেন।’’
স্বাভাবিক, একেবারে হারিয়ে যাওয়ার মুখে ফের ভেসে উঠেছেন যে!
বাণীকুমার রায়, নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেই, জেলায় তিন পরাজিত প্রার্থীর নালিশের জেরে যাঁকে পদ থেকেই ছাঁটাই করে দিয়েছিলেন দলনেত্রী। রুষ্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘ওকে আর দরকার নেই।’ কালীঘাটের বাড়িতে বাণীর পরিবর্তও একরকম সেরে ফেলেছিলন দিদি— দীপক বসু।
কৃষ্ণনগরে তাঁর বাড়িতে পরের দিনই দলের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত। ব্যাস ‘ছুটি’ হয়ে গিয়েছিল বাণীকুমারের।
চাকাটা ঘুরতে শুরু করেছিল দিন তিনেক পরে। জেলার বেশ কিছু নেতা দলনেত্রীর কাছে দরবার করে জানান, ‘উন্নয়নের’ নিরিখে রাজ্যে প্রথম দিকেই রয়েছে নদিয়া। তার পরেও বাণীকে সরালে অন্য বার্তা যাবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তার ফলও ভুগতে হতে পারে দলকে ‘ডুবিয়েছেন’ তিনি কিন্তু নিছক অভিযোগের ভিত্তিতে এক জন সফল সভাধিপতিকে ছেঁটে ফেলা কী ঠিক?
প্রশ্নটা মনে ধরেছিল তাঁর। দলের তিন মাথা— মুকুল রায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সির সঙ্গে এক প্রস্থ আলোচনা সেরে বুঝতে পেরেছিলেন, কাজটা হঠকারিতা হয়ে গিয়েছে। কালীগাটের বাড়িতে পরের দিনই তলব হয়েছিন বাণীর। এ বার পুনর্ভিষেক পালা।
সোমবার রাতেই কৃষ্ণনগরের একটি হোটেলে দলীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে গৌরীবাবু সকলকে শুনিয়ে দিয়েছিলেন দিদির নির্দেশ। মঙ্গলবার, পদত্যাগপত্র দাখিল করা বাণীকুমার ফের ২৭-১৮ ভোটে জয়ী হয়ে পুরনো পদেই ফিরেছেন।
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই জেলার নির্বাচিত, পরাজিত বিধায়ক, জেলা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওঁর নেতৃত্বে জেলা পরিষদ ভাল কাজ করেছে। সে জন্যই সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পুনর্নির্বাচিত করা হল বাণীকে।’’ বিধানসভা ভোটে রানাঘাটের তিনটি আসনেই হেরে গিয়েছিলেন দলের তিন প্রার্থী। দলনেত্রীর কাছে পরাজিত তিন প্রার্থীই নালিশ করেছিলেন ‘অন্তর্ঘাতের’। তাঁদের লক্ষ্য ছিল বাণীকুমার।
শুধু বাণীবাবুই নয়। রানাঘাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তাপস ঘোষের ঘাড়ের উপর থেকেও এ বার শাস্তির খাঁড়া উঠতে চলেছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। বাণীবাবুর পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে রানাঘাটের তিনটি কেন্দ্রই দলীয় প্রার্থীকে হারাতে জোটের হয়ে প্রচার করার অভিযোগ ছিল। তাপসবাবু বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত যে নেত্রী আমার উপরে আস্থা রেখেছেন তাকেই আমি কৃতজ্ঞ।’’
পুরনো চেয়ারে ফিরে বাণীও বলছেন, ‘‘নেত্রীর নির্দেশ বরাবর পালন করেছি। এ বারও তাই করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy