Advertisement
১৮ জুন ২০২৪

মহিলাদের প্রতিরোধে এলাকা ছাড়ল দুষ্কৃতীরা

সম্মিলিত প্রতিরোধে পিঠটান দিল জমি মাফিয়ারা। বৃহস্পতিবার সকালে জিয়াগঞ্জের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লি বস্তি এলাকার ঘটনা।

তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে মহিলাদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র

তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে মহিলাদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জিয়াগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৩৪
Share: Save:

সম্মিলিত প্রতিরোধে পিঠটান দিল জমি মাফিয়ারা। বৃহস্পতিবার সকালে জিয়াগঞ্জের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লি বস্তি এলাকার ঘটনা।

এ দিন ওই এলাকার খেলার একটি খেলার মাঠ সংস্কার শুরু করে তৃণমূল পরিচালিত জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভা। সকালে সেখানে পুরকর্মীরা মাটি ফেলতে যান। মাটি ভর্তি ট্রাক্টর দেখে পাশের তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে ছুটে আসে দুষ্কৃতীরা। তারা কাজে বাধা দেয়। দাবি করে, ওই জমি সরকারের সম্পত্তি নয়। তারা ওই জমির মালিক। এ নিয়ে ঝামেলা শুরু হতেই সংঘবদ্ধ হন এলাকার মহিলারা। তারা তাড়া খেয়ে‌ দুষ্কৃতীরা দ্রুত এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়। লোকজন মাঠ সংলগ্ন তৃণমূলের পার্টি অফিস ভাঙচুরের চেষ্টাও করেন। পুরপ্রধান শঙ্কর মণ্ডল ও জনাকয়েক কাউন্সিলর গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। শুরু হয় মাঠ সংস্কার।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় প্রায় সাড়ে সাত বিঘে খাস জমি রয়েছে। ওই জমিতে অনেক পরিবারের বসত। জিয়াগঞ্জের এক সময়ের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী মহারাজ বাহাদুরের ওই সম্পত্তি। ওই জমি খাস হয়ে যাওয়ার পরে সেখানে কলোনি গড়ে ওঠে। তার পাশেই রয়েছে মাঠটি। এলাকার ছেলেপুলে বিকেলে সেখানে খেলাধুলো করে। আশপাশের এলাকার তুলনায় মাঠটি নিচু। ফলে এক পশলা বৃষ্টিতেই সেখানে জল জমে। ফলে মাটি ফেলে মাঠটি উঁচু করার সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা।

এলাকার লোকজনের দাবি, এই ধরনের খাস জমির দখল নিতে তৃণমূলের সিন্ডিকেট বাহিনী মুখিয়ে রয়েছে। জিয়াগঞ্জ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস সরকার বলেন, ‘‘গত বিধানসভা ভোটের আগে ওখানে দলের নির্বাচনী কার্যালয় গড়ে তোলা হয় সেখানে। ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পরে সেখানে আমরা কেউ যাই না। এখন কেউ যদি তৃণমূলের পতাকা টাঙিয়ে জমি কেনাবেচা করে তার দায় তাকেই নিতে হবে।’’

পুরপ্রধানও বলেন, ‘‘ওই পার্টি অফিসের কোনও বৈধতা আছে বলে আমার জানা নেই। তৃণমূলের পার্টি অফিস খুলে যারা অসামাজিক কাজকর্ম চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ও প্রশাসনের উচিত পদক্ষেপ করা। পুরনো তৃণমূলের নেতাদের বিষযটি খতিয়ে দেখা উচিত।’’

সিপিএমের লালবাগ জোনাল কমিটির সম্পাদক দীপঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুরবোর্ড শাসক দলে যোগ দেওয়ার পুরেই নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। পুলিশ ও প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে পদক্ষেপ করা।’’

স্থানীয় বাসিন্দা বেবি বিবি ও মৌসুমী দাসদের কথায়, ‘‘ওই পার্টি অফিসের সামনে সন্ধ্যার পর থেকে বহিরাগত ওই দুষ্কৃতীরা মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে রেখে দেওয়ায় যাতায়াত করতে পারি না। তাদের ভয়ে সন্ধ্যার পরে বাড়ির বাইরে বের হতে পারি না।’’ পার্টি অফিসের গা-লাগোয়া বাড়ি কল্পনা বিবির। তাঁর অভিযোগ, ‘‘প্রতি দিন সন্ধ্যার পর সেখানে মদের আসর বসে। রাত ১২টা পর্যন্ত হৈ-হট্টগোল চলে। চেঁচামেচিতে ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করতে পারে না।’’

সব মিলিয়ে ওই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে একটা চাপা ক্ষোভ ছিলই। এ দিন সরাসরি প্রকাশ ঘটল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Women Drive away miscreants
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE