প্রতিবন্ধকতা রয়েছে পদে পদে। তারপরেও হাল ছেড়ে দেয়নি ধুবুলিয়া ৮ নম্বর কলোনির শুভঙ্কর ঘোষ। জেদ আর অদম্য অধ্যাবসায়ের জোরে এবার উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৩৩ পেয়েছে ধুবুলিয়া দেশবন্ধু হাই স্কুলের ছাত্র শুভঙ্কর। অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। বাবা শঙ্করবাবু পেশায় রং মিস্ত্রির জোগাড়ে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে রোজদিন কাজেও যেতে পারেন না। শুভঙ্করের নজরকাড়া সাফল্যে ঘোষ পরিবার গর্বিত ঠিকই। কিন্তু সেই সঙ্গে রয়ে গিয়েছে উদ্বেগের কাঁটাওএরপর কী হবে? শঙ্করবাবু বলেন, “আমার একার রোজগারেই সংসারটা কোনওমতে চলে। কিন্তু অসুস্থতার কারণে এখন প্রায় দিনই কাজে যেতে পারি না। এত কষ্টের মধ্যে পড়াশোনা করে এমন রেজাল্ট করে শুভঙ্কর সত্যিই আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে। কিন্তু এই আনন্দের সময়ে দুশ্চিন্তাও যেন পিছু ছাড়ছে না। সারাক্ষণ শুধু একটাই কথা ভাবছি, এরপর কীভাবে চলবে ওর পড়াশোনা?” পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধবদের লাগাতার শুভেচ্ছা বার্তার মধ্যেও কপালে চিন্তার চওড়া ভাঁজ শুভঙ্করেরও। কারণ, মেধা থাকলেও অর্থাভাবে কলকাতার কোনও ভাল কলেজে সে ভর্তি হতে পারবে না। তাঁর কথায়, ‘‘খুব ইচ্ছে ছিল কলকাতার কোনও ভাল কলেজে পড়াশোনা করার। কিন্তু টাকা-পয়সার কারণেই সেটা বোধহয় আর সম্ভব হবে না।” আর শুভঙ্কর এখন কৃষ্ণনগর সরকারি মহাবিদ্যালয়ে ইংরেজি অনার্সে ভর্তি হওয়ার কথা ভাবছে। পড়াশুনা শেষ করে আমলা হতে চায় শুভঙ্কর। শুভঙ্কর বলছে, “একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে সুবীর পাল নামে পাশের পাড়ার এক দাদা বিনা পয়সায় ইংরেজি পড়াতেন। এখন যে কীভাবে কী হবে কিছুই বুঝতে পারছি না।”