Advertisement
E-Paper

নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে পোস্টার

সামশেরগঞ্জের বাসুদেবপুরে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করলেন গ্রামবাসীদের একাংশ। সেই একই দাবিতে স্থানীয় একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের তরফে এলাকায় পোস্টারও পড়েছে। ঘটনার পরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রাজনীতি থাকুক রাজনীতির জায়গায়। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করুক। কারণ এটা গ্রামের মানুষের নিরাপত্তার প্রশ্ন। তার সঙ্গে কোনও আপস করা চলবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৫২

সামশেরগঞ্জের বাসুদেবপুরে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করলেন গ্রামবাসীদের একাংশ। সেই একই দাবিতে স্থানীয় একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের তরফে এলাকায় পোস্টারও পড়েছে। ঘটনার পরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রাজনীতি থাকুক রাজনীতির জায়গায়। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করুক। কারণ এটা গ্রামের মানুষের নিরাপত্তার প্রশ্ন। তার সঙ্গে কোনও আপস করা চলবে না।

বুধবার রাতের বিস্ফোরণের পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বম্ব স্কোয়াডের একটি দল বাসুদেবপুরে বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করে গিয়েছে। পুলিশের কাছে একটি প্রাথমিক রিপোর্টও তারা জমা দিয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “ঘরের ভিতরে কোনও বিস্ফোরণ ঘটেনি। দুষ্কৃতীরা বাইরে থেকেই ছোড়া শক্তিশালী সকেট বোমা ফেটে ওই ঘরের দেওয়াল-সহ ছাদ ভেঙে পড়েছে। বাড়ির মালিকের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে চৌধুরী পরিবার ওই এলাকায় যথেষ্ট বিত্তশালী বলে পরিচিত। দিশি ও বিলিতি মদের ব্যবসা রয়েছে তাঁদের। তৃণমূল নেতা সুনীল চৌধুরী ও তাঁর দাদা দীনেশবাবু বাসুদেবপুর বাজারে বাড়ির নীচের তলায় অসংখ্য ছোট ছোট ঘরগুলির মধ্যে একটাতে বসে রাজনৈতিক কাজকর্ম চালান। তার থেকে ফুট দশেক দূরে বিড়ি কোম্পানিকে ভাড়া দেওয়া বাড়িতেই বিস্ফোরণ ঘটে।

সুনীল চৌধুরীর বাবা জগন্নাথবাবু একসময় সিপিএম করতেন। পরে তিনি ফরওয়ার্ড ব্লকে যোগ দেন। পরে ক্ষমতায় তৃণমূল এলে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁকে তৃণমূলের জঙ্গিপুর মহকুমার সভাপতি করা হয়। ছেলে সুনীল হন তৃণমূল যুব সংগঠনের জেলা সম্পাদক। আর এক ছেলে দীনেশকে করা হয় ব্লক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি। এর ফলে এলাকায় তাঁদের প্রভাব বাড়তে থাকে। অন্য দিকে, মদ বিরোধী আন্দোলন জোরদার হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠে মদবিরোধী নাগরিক মঞ্চ। কিন্তু শাসক দলের নেতা হওয়ায় পুলিশ প্রশাসন বরাবরই তাঁদের পক্ষে থেকেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

লোকসভা নির্বাচনে জগন্নাথবাবু প্রার্থী হতে চাইলে দল তাঁকে টিকিট দেয়নি। এর ফলে দলের সঙ্গে মনোমালিন্য শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে, নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছেন তিনি। ফরাক্কায় নির্বাচনী প্রচারে এসে এ কথা জানতে পেরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্য জনসভায় চৌধুরীদের সকলকেই দলের দায়িত্ব থেকে অপসারণের নির্দেশ দেন। পরে সামশেরগঞ্জে তৃণমুলের ব্লক সভাপতি করা হয় হাবিবুর রহমানকে। হাবিবুর বরাবরই জগন্নাথ চৌধুরীর বিরোধী বলে এলাকায় পরিচিত।

এমন অবস্থায় চৌধুরী বাড়িতে বিস্ফোরণ নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা উঠে পড়ে লেগেছেন। তার ফলে যারপরনাই বিরক্ত জেলাস্তরের নেতারা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মান্নান হোসেন বলেন, “বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্ত করছে পুলিশ। তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই দলের নেতাদের এমন কোনও মন্তব্য করা উচিত হয়নি যা পুলিশি তদন্তে প্রভাব ফেলতে পারে। রাত আড়াইটের সময় কীভাবে বিস্ফোরণ ঘটেছে তা কেউ জানে না। সে ক্ষেত্রে দলের নেতারা প্রকাশ্যে মুখ খুলে ঠিক করেননি। এ ব্যাপারে যা বলার পুলিশই বলবে। তাদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দিতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “খুব শীঘ্রই জেলা জুড়ে সাংগঠনিক স্তরে পরিবর্তন করা হবে। নিষ্ক্রিয় নেতাদের সরিয়ে কর্মঠদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হবে।”

এ দিকে বিস্ফোরণের ঘটনায় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে বাইরে থেকে বোমা মারার একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন জগন্নাথবাবু। শুক্রবার থেকেই ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে বিস্ফোরণে ধসে যাওয়া দেওয়ালটি নতুন করে গাঁথার কাজ শুরু হয়েছে।

samsherganj blast case unbiased investigation claimed poster raghunathganj
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy