লণ্ডভণ্ড বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কার্যালয়। -নিজস্ব চিত্র
বিশ্বকাপ ফুটবলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে না পেয়ে কাশিমবাজার গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে ভাঙচুর করে এলাকার বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ কাশিমবাজার এলাকার শতাধিক জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই পরিষেবা কেন্দ্রের চারটে কম্পিউটার, দুটো লেজার প্রিন্টার, চেয়ার-টেবিল, ফ্যান, টিউবলাইট ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ। সেই সময়ে ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে কর্তব্যরত সিএফও (কল ফরওয়ার্ডিং অফিসার) মৃণাল দে’র মোবাইল কেড়ে নিয়ে তাঁকে পরিষেবা কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে ওই ভাঙচুর চালানো হয় বলে জানা গিয়েছে। খবর পেয়ে বহরমপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু কাউকে গ্রেফতার যায়নি।
কাশিমবাজারের স্টেশন ম্যানেজার গৌতম মণ্ডল বলেন, “ওই রাতের ঘটনায় কয়েক লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে। গোটা বিষয়টি জানিয়ে শুক্রবার বহরমপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।”
বিদ্যুৎ দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দফায় দফায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এলাকা অন্ধকারে ডুবে যায়। এতে বিশ্বকাপ ফুটবলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও ফুটবল ম্যাচ দেখা থেকে বঞ্চিত হন বাসিন্দারা। পাশাপাশি হাঁসফাস করা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন তাঁরা। ক্ষি প্ত হয়ে ওই পরিষেবা কেন্দ্রে
ভাঙচুর চালায়।
বহরমপুর ডিভিশন্যাল ম্যানেজার সুকান্ত মণ্ডল বলেন, “১১ হাজার ভোল্টের দুটি ফিডারের মধ্যে দিয়ে কাশিমবাজার গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়ে থাকে। চোঁয়াপুর সাব-স্টেশন থেকে কাশিমবাজার ফিডার এবং গড় বহরমপুর সাব-স্টেশন থেকে মধুপুর ফিডারের মধ্যে দিয়ে ওই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে দেখা যায়ওই কাশিমবাজার ফিডার ওভার লোড হয়ে যাওয়ায় বার বার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।” কাশিমবাজার সাব-স্টেশন ট্রান্সফর্মারের বিদ্যুৎ বহন ক্ষমতা ২৫৭ অ্যাম্পিয়ার। কিন্তু ওই রাতে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল
অনেক বেশি।
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কিন্তু ওই ঘটনার পরেই এ দিন সকাল থেকে এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ট্রান্সফর্মারের বিদ্যুৎ বহণ ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। ওই সাব-স্টেশনের ৫০ অ্যাম্পিয়ার মত বিদ্যুৎ বহণের ক্ষমতা কমিয়ে খাগড়া সাব-স্টেশনের একটি ফিডারের মধ্যে সংযোগ করা হয়েছে। এর ফলে দফায় দফায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনা থেকে মুক্তি পাবে কাশিমবাজার এলাকা।
কাজটা আগে করলেই কোনও সমস্যা থাকত না বলে জানাচ্ছেন অধিকাংশ বাসিন্দাই। সুকান্তবাবু বলেন, “যে ফিডারগুলিতে ওভার লোড রয়েছে, সেই ফিডারগুলি ভাগ করার জন্য আমরা নতুন কতকগুলি ফিডার লাইন করা হয়েছে। যেমন বহরমপুর থেকে খাগড়া সাব-স্টেশনে এবং কারবেলা রোড হয়ে কাশিমবাজার সাব-স্টেশনে। কিন্তু নতুন ফিডার লাইন টানার সময়ে কোথাও গাছ কাটার, কোথাও আবার খুঁটি সরানোর প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু তা না হওয়ায় ফিডার ভাগ করার কাজটি থমকে রয়েছে। এতেই সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তবে দ্রুত ওই সমস্যা সমাধান করা যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy