Advertisement
১৯ মে ২০২৪

বাড়ি তৈরিতে নয়া উদ্যোগ প্রশাসনের

‘নির্মল ভারত অভিযান’-এর সঙ্গে একশো দিনের কাজকে যুক্ত করে তৈরি ‘সবার শৌচাগার’ প্রকল্পে সাফল্য মিলেছে হাতেনাতে। সারা দেশে তা প্রশংসিতও হয়েছে। এখন ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পকে যাতে দ্রুত বাস্তবায়িত করা যায় তার জন্য সবার শৌচাগার প্রকল্প ও একশো দিনের কাজকে জুড়ে এক নয়া প্রকল্পের সূচনা করল নদিয়া জেলা প্রশাসন। প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, প্রায় সময় উপভোক্তাদের সচেতনতার অভাবের জন্য ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর তৈরির কাজ সঠিক সময়ে শেষ হয় না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৪ ০০:২৬
Share: Save:

‘নির্মল ভারত অভিযান’-এর সঙ্গে একশো দিনের কাজকে যুক্ত করে তৈরি ‘সবার শৌচাগার’ প্রকল্পে সাফল্য মিলেছে হাতেনাতে। সারা দেশে তা প্রশংসিতও হয়েছে। এখন ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পকে যাতে দ্রুত বাস্তবায়িত করা যায় তার জন্য সবার শৌচাগার প্রকল্প ও একশো দিনের কাজকে জুড়ে এক নয়া প্রকল্পের সূচনা করল নদিয়া জেলা প্রশাসন।

প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, প্রায় সময় উপভোক্তাদের সচেতনতার অভাবের জন্য ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর তৈরির কাজ সঠিক সময়ে শেষ হয় না। আবার তিন কিস্তিতে বাড়ি তৈরির জন্য উপভোক্তাকে যে টাকা দেওয়া হয় তা বাড়ি তৈরির জন্য যথেষ্ঠ নয়। তাই প্রাপকদের হাতে আরও একটু বেশি টাকা তুলে দিতে ওই বিশেষ প্রকল্পের সূচনা বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা। শুধু তাই নয় যে সব উপভোক্তা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাড়ি তৈরি করে ছবি জমা দিতে পারবেন তাঁদেরকে বিশেষ উপহার দেওয়া হবে। জেলা শাসক পিবি সালিম বলেন, “নানা কারণে ঘর তৈরির কাজ আটকে থাকে। আমারা কারণগুলিকে চিহ্নিত করে সমাধানের পথ বের করেছি। প্রকল্পকে দ্রুত রূপায়ণের জন্য আরও দু’টি প্রকল্পকে যুক্ত করা হয়েছে। আশা করছি এবার একশো শতাংশ সাফল্য আসবে।”

ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে প্রতিটা বাড়ি তৈরির জন্য তিন কিস্তিতে উপভোক্তাদের ৭০ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু সেই টাকা বাড়ি তৈরির জন্য যথেষ্ট নয়। সেই কারণে এই প্রকল্পের সঙ্গে একশো দিনের কাজের প্রকল্প যুক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি উপভোক্তা পরিবারের এক জন সদস্যকে বাড়ি তৈরির ৯০ দিনের পারিশ্রমিক হিসাবে ১৪৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে। সেই টাকা তাঁরা বাড়ি তৈরি করার কাজে খরচ করতে পারবেন। এছাড়াও সেই পরিবারে ‘সবার শৌচাগার’ প্রকল্পের মাধ্যমে শৌচাগারও তৈরি করে দেওয়া হবে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে নদিয়া জেলা ২৫৪৪৬টি ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের ঘর তৈরির টাকা পেয়েছে। সেইমতো পঞ্চায়েতগুলির কাছ থেকে উপভোক্তাদের তালিকাও সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রায় ২৩ হাজার উপভোক্তার নামের তালিকা জেলা প্রশাসনের কাছে জমা পড়েছে। ব্যাঙ্ক অ্যকাউন্ট না থাকায় যাতে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে কোনও রকম প্রতিবন্ধকতা না তৈরি হয় তার জন্য প্রশাসনের উদ্যোগে শিবির করে উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট করে দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, মূলত উপভোক্তাদের প্রকল্প সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় তাঁরা সঠিক ভাবে ও সঠিক সময়ের মধ্যে বাড়ি তৈরি করতে পারেন না। আবার তাঁদের এই অজ্ঞানতার কারণে নানা ভাবে প্রতারিতও হন। এইসব সমস্যা সমাধানের জন্য সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের তরফে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় উপভোক্তাদের নিয়ে একটি বিশেষ শিবিরের আয়োজনও করা হয়েছিল। সব শিবিরেই উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। সেখানে প্রকল্প উপভোক্তাদের সচেতন করার পাশাপাশি তাঁদের কী করা উচিত ও কী করা উচিত নয় তা বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছে। বাড়ি তৈরির তিন রকম নক্সা-সহ একটি বইও দেওয়া হয়েছে। উপভোক্তাদের তাতে ইন্দিরা আবাসন যোজনা প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে।

জেলা শাসক জানান, যাতে ওই প্রকল্পের বাড়ি তৈরির কাজ সহজে ও নিদির্ষ্ট সময়ের মধ্যে হয় তার জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েত স্তরে দু’জন করে ‘মোটিভেটর’ নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরা প্রতিটি বাড়ি তৈরি হয়ে গেলে দু’শো টাকা করে পাবেন। এছাড়াও প্রতিটি ব্লকে ‘ফেসিলেটর’ নিয়োগ করা হয়েছে। এ ছাড়াও উপভোক্তাদের জমি থাকলে সেখানে ফলের গাছ পুঁতে দেওয়া হবে। সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে ওই পরিবারের মহিলাদের হাঁস ও মুরগি পালনের জন্য দেওয়া হবে।

যদিও নদিয়া জেলা পরিষদের বিরোধী দল নেতা সিপিএময়ের স্বপন ঘোষ বলেন, “তালিকা তৈরিতেই দুর্নীতি হচ্ছে। তৃণমূল দলবাজি করছে। তাই জেলা প্রশাসন যতই উদ্যোগ নিক ,তা কতটা সফল হবে তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।”

অন্য দিকে, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বাণীকুমার রায় বলেন, “আমরা সবার শৌচাগার প্রকল্পের মতোই ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পকেও সফল করব। তার জন্য কোনও রকমের দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেব না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE