Advertisement
২১ মে ২০২৪

বড়ঞায় তিন স্কুলে বন্ধ মিড-ডে মিল

কোন গোষ্ঠী রান্না করবে তাই নিয়ে স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মধ্যে গণ্ডগোলের জেরে ভাঙচুর করা হল রান্নাঘর, বাসনপত্র। শুধু তাই নয় বিদ্যালয়ে যদি রান্নার কাজ শুরু হয় তাহলে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। ফলে সাহস কুলোচ্ছে না শিক্ষকদের বন্ধ মিড ডে মিলের রান্না শুরু করার। অন্য দিকে, রাঁধুনির অভাবে দুপুরের খাওয়া শিকেয় উঠেছে শ’তিনেক পড়ুয়ার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বড়ঞা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:১১
Share: Save:

কোন গোষ্ঠী রান্না করবে তাই নিয়ে স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মধ্যে গণ্ডগোলের জেরে ভাঙচুর করা হল রান্নাঘর, বাসনপত্র। শুধু তাই নয় বিদ্যালয়ে যদি রান্নার কাজ শুরু হয় তাহলে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। ফলে সাহস কুলোচ্ছে না শিক্ষকদের বন্ধ মিড ডে মিলের রান্না শুরু করার। অন্য দিকে, রাঁধুনির অভাবে দুপুরের খাওয়া শিকেয় উঠেছে শ’তিনেক পড়ুয়ার। প্রায় এক মাস ধরে এমনই পরিস্থিতি চলছে বড়ঞা ব্লকের কুরুন্নরুণ গ্রাম পঞ্চায়াতে এলাকার কুরুন্নরুণ গ্রামের শিশু শিক্ষা কেন্দ্র, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রে।

স্কুল ও ব্লক সূত্রের খবর, ওই এলাকায় তিনটি স্কুলেই মিড ডে মিল রান্নার কাজ করতেন দুই স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। সম্প্রতি ওই পঞ্চায়েতে ১৪টি স্ব-নির্ভর গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। দাবি তাঁদেরকেও স্কুলে মিড ডে মিলে রান্না কাজ করতে দিতে হবে। পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে ওঠে গত ১৩ অগস্ট। ১১টি গোষ্ঠীর মহিলারা একত্রিত হয়ে স্কুলগুলিতে চড়াও হয়। পরদিন এলাকার শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের রান্নাঘর, উনুন, বাসনপত্র ভেঙে দেয়। তিন বিদ্যালয়ে রান্নাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। তুফান ভল্লা, মল্লিকা বাগদিদের মতো পড়ুয়ারা জনালেন, “প্রায় একমাস হয়ে গেল আমরা স্কুলের খাবার দিচ্ছে না। কবে আবার খাবার পাব স্যারেরা বলতে পারছেন না। আমাদের বাড়ি থেকে খাবার খেয়ে আসতে হয়।”

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, বিদ্যালয়ে রান্না বন্ধ হয়ে যোায়ার পর থেকে ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতির হারও কমে গিয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজিত ঘোষ ও মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের প্রধান শিক্ষক অনিল ঘোষ বলেন, “গ্রামের গোষ্ঠীর মহিলারা শিক্ষকদের নামে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। ব্লক প্রশাসন রান্নার কর্মী ঠিক করে দেয়। তাই প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত আমাদের কিছুই করার নেই। আমরা বিষয়টি বিডিওকে জানিয়েছি।”

যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অন্যান্য স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। শিখা রানী ভল্লা, বীণা ভল্লা বলেন, “শিক্ষকদের শ্লীলতাহানির কোনও হুমকি দেওয়া হয়নি। কেন একটা স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েরা রান্নার কাজ পাবেন আমরা তার জানতে চেয়েছি মাত্র।” এলাকার বাসিন্দা তথা অভিভাবক গৌতম ঘোষ, মন্টু পালরা বলেন, “প্রশাসনের উদাসীনতায় স্কুলের খাবার থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। ঘটনার পরে একদিনের জন্যও এলাকায় এসে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেনি প্রশাসন।”

বড়ঞা ব্লকের বিডিও বাদশা ঘোষাল বলেন, “উভয় পক্ষের সাথে বৈঠক করে সমাধান খোঁজার চেষ্টা চলছে। তবে যারা রান্না করছিল তারাই করবে।” বড়ঞা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক মামন হাইদার ইসলাম বলেন, “এমন ঘটনা আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যাবস্থা নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mid day meal violence self help group
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE