দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে গিয়েছে বিজেপি-র। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছে সবে। এরই মধ্যে জঙ্গিপুরে প্রচারে নেমে পড়ল সমস্ত রাজনৈতিক দল।
এদিনই ঘোষণা হয়েছে তৃণমূল ও বামফ্রণ্টের প্রার্থী তালিকা। বিজেপি তাদের প্রার্থী ঘোষণা করে আগেই নেমে পড়েছে দেওয়াল দখলে।
২০০৯ সালে জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কংগ্রেসের জয়ের ব্যবধান কমিয়ে দেওয়ার পিছনে বিজেপি-র ভোট কাটাকুটিটা নজর কেড়েছিল অনেকের। ৮৫ হাজার অর্থাৎ প্রায় ১০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। এ বার সেই বিজেপিই ভোট বাড়ানোর আশা করছে মোদী হাওয়ায় পাল তুলে। সেই লক্ষ্যেই নির্বাচন ঘোষণার আগেভাগে জঙ্গিপুরে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে তারা। প্রার্থী সম্রাট ঘোষ বয়সে নবীণ। আসছে মে’তে ৩০ বছরে পড়বেন সম্রাট। স্থানীয় আদালতের আইনজীবী সম্রাটের কথায়, “গতবারের অঙ্কের হিসেব ছাড়িয়ে এবারে বিজেপি চমক দেবে জঙ্গিপুরে। ইতিমধ্যেই এলাকায় এক দফা ঘুরেও ফেলেছি আমি।”
তবে বাস্তব পরিস্থিতিটাও ভাল ভাবেই জানেন সম্রাট। জঙ্গিপুরের ৩৫ শতাংশ বুথে দল যে এজেন্টই দিতে পারবে না, সেটাও বিলক্ষণ জানেন বইকি। মাঝে বছর আড়াই ছাড়া ২০০৪ সাল পর্যন্ত জঙ্গিপুর ছিল বামেদের দখলে। ২০০৪ সালে প্রণববাবু প্রথম জঙ্গিপুরে জয়ী হন ৩৭ হাজারে। ২০০৯-এ সে জয়ের অঙ্ক তিন গুণ বেড়ে গেলেও তাঁর জায়গায় ছেলে অভিজিতকে জঙ্গিপুর সে ভাবে বরণ করে নেয়নি। গত উপনির্বাচনে অভিজিৎ জিতলেও ভোট কমে ভালই।
জঙ্গিপুরে ভোটারদের প্রায় ৬০ শতাংশই সংখ্যালঘু। সিপিএম এবারেও প্রার্থী করেছে রাজ্য কমিটির সদস্য গতবারের প্রার্থী মোজাফফর হোসেনকে। গত উপনির্বাচনে ৩.৩০ লক্ষ ভোট পেয়েছিলেন তিনি। প্রণবপুত্র অভিজিৎ সেখানে পেয়েছিলেন প্রায় ৩.৩৩ লক্ষ ভোট। এই দুই মূল প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে হার-জিতের নিয়ন্ত্রক শক্তি হয়ে উঠেছিল বিজেপি, এসডিপিআই ও ওয়েলফেয়ার পার্টি অফ ইন্ডিয়া৬৬ হাজার ভোটে ভাগ বসিয়ে।
আর এক পক্ষ আছে। গত উপনির্বাচনে অনুপস্থিত তৃণমূল এ বারে প্রার্থী দিয়েছে জঙ্গিপুরে। রাজ্যের শাসকদল হিসেবে অন্য জেলার মতো মুর্শিদাবাদে ততটা শক্তিশালী হয়ে উঠতে না পারলেও ডানপন্থী কংগ্রেসি ভোটে তৃণমূল কিছুটা হলেও যে প্রভাব বিস্তার করেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু, বসিরহাটের জয়ী সাংসদকে জঙ্গিপুরের মতো অনিশ্চিত কেন্দ্রে প্রার্থী করার কারণ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। দলের বহু কর্মী ও নেতা প্রার্থী নিয়ে সন্তুষ্ট নন। তবে প্রকাশ্যে এই নিয়ে এখনই মুখ খুলছেন না কেউ। হাজি নুরুলকে স্বাগত জানিয়ে তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সদস্য শেখ ফুরকান বলেন, “রাজ্য হজ কমিটির সভাপতি উনি। যথেষ্ট কর্মতৎপর। আমরা ভাল ফলের ব্যাপারে আশাবাদী।”
কিন্তু সাগরদিঘি ছাড়া সে ভাবে জঙ্গিপুরে তৃণমূলের অস্তিত্ব কোথায়? সাগরদিঘিতেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে নিজের পঞ্চায়েত সমিতিতেই বাজেট পাশ করাতে পারেনি তৃণমূল। লোকসভা ভোট সেখানে বহু দূর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy