খেলোয়াড় থেকে ক্লাবের কর্তা সকলেই ব্যস্ত ভোটের ময়দানে। ফলে ডোমকল, করিমপুর কিংবা তেহট্টের খেলার মাঠগুলো এখন খাঁ খাঁ করছে। মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের ডোমকল ও করিমপুরে ভোট মিটে গেলেও ভোটের ফলাফল না জেনে মাঠে নামতে নারাজ ক্লাবগুলো। অন্যদিকে তেহট্ট এলাকায় ১২ মে ভোট থাকায় প্রায় দেড় মাস পিছিয়ে যাচ্ছে ইন্টার কোচিং ক্যাম্প ও ফুটবল লিগ। তবে এই পিছিয়ে যাওয়ার জন্য ভোটের পাশাপাশি আবহাওয়াকেও কিছুটা দায়ী করছেন ডোমকল ও তেহট্ট মহকুমার ক্রীড়া সংস্থার কর্তারা। তাঁদের দাবি, একদিকে নির্বাচন। অন্য দিকে প্রচণ্ড গরম ও বৃষ্টি না হওয়ার ফলে মাঠের অবস্থাও ভাল নয়।
সীমান্তঘেঁষা তেহট্ট ও ডোমকল মহকুমায় ফুটবল আর ক্রিকেট ছাড়া তেমন কোনও খেলার ব্যবস্থা নেই। এই সময় বিকেল হলেই এলাকার মাঠগুলোতে ফুটবল টুর্নামেন্ট বা লিগের খেলা দেখতে ভিড় উপচে পড়ে। রোদ, গরম উপেক্ষা করেই শুরু হয় লিগ, নক-আউট কিংবা একদিনের ফুটবল প্রতিযোগিতাগুলো। তেহট্ট আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক সুমিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘ এ বছর ভোটের কারণে ইন্টার কোচিং ক্যাম্প থেকে লিগ সবই আমাদের পিছিয়ে দিতে হচ্ছে। সকলেই এখন কমবেশি ভোট নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সেভাবে কাউকে মাঠে পাওয়া যাচ্ছে না। অন্য বছর যেখানে মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইন্টার কোচিং ক্যাম্প শুরু হয় এবার সেখানে জুনের শেষ সপ্তাহ ছাড়া সম্ভব নয়।” একই কথা বলছেন করিমপুর আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থার অন্যতম কর্মকর্তা সুজিত বিশ্বাসও। তাঁর কথায়, “সাধারণত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলেই মাঠে ফুটবল নেমে যায়। কিন্তু এ বছর একদিকে ভোট ও অন্য দিকে এমন আবহাওয়ার কারণে মাঠমুখো হয়নি খুদে খেলোয়াড়রা। এই মরসুমে তিনটি পর্যায়ে লিগ কীভাবে শেষ হবে বুঝতে পারছি না।”
ডোমকল মহকুমার রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক তৌফিক আনোয়ার বলেন, ‘‘ভোট না শেষ করে কেউ মাঠে নামতে চাইছিলেন না। এখন ভোট মিটে গিয়েছে, তারপরেও সকলেই তাকিয়ে ফলাফলের দিকে। মে মাসের শেষ সপ্তাহ ছাড়া লিগ শুরুর কোনও সম্ভাবনা নেই।’’ ডোমকলের কুশাবাড়িয়া গ্রামের প্রবীণ খেলোয়াড় ওহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘একদিকে ভোট অন্য দিকে খরা। এই দুইয়ে মিলে এবছর ফুটবলে আমরা বেশ কিছুটা পিছিয়ে। কিছুদিন আগে খেলার মাঠে জল দিয়েও কাজ হয়নি। ঘাস পুড়ে শুকনো বালি দেখা যাচ্ছে। মাঠের এই দশা দেখে খেলোয়াড়েরা খেলতেই চাইছেন না।”
কুপিলা গ্রামের সম্মিলনী সঙ্ঘের এক কর্তা মনিরুল ইসলাম বলছেন, “বিভিন্ন ক্লাব কর্তা থেকে খেলোয়াড়েরা সকলেই কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িয়ে। ফলে ভোটের মরসুমে কেউই তেমন ভাবে মাঠমুখো হচ্ছেন না। তাছাড়া খেলোয়াড়েরা তরুণ প্রজন্মের হওয়ার ফলে দেওয়াল লিখন থেকে শুরু করে ভোটের নানা কাজে তাদের ব্যবহার করছিল রাজনৈতিক দলগুলি। ফলে ওই সময়ে মাঠে বল নামানো সম্ভব হয়নি।’’ ভোটের পর চাতক পাখির মতো বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে রয়েছেন সকলেই। ক্রীড়া সংস্থার কর্তাদের দাবি, ভোটের লড়াই প্রায় শেষের দিকে। বৃষ্টি নামলেই শুরু হবে খেলা। বিকেল হলেই মাঠগুলোকে দেখা যাবে চেনা চেহারায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy