Advertisement
E-Paper

দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের ‘সহজ পাঠ’ হবে নয়া সফ্‌টওয়্যার

হেডফোনের স্পিকারে কথা বলছে একটি দৃষ্টিহীন কিশোর। তার নির্দেশ শুনে ‘সাড়া’ দিচ্ছে সামনে খুলে রাখা ল্যাপটপ। স্ক্রিনে খুলে যাচ্ছে একের পর এক বিষয়।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৫ ০০:০৭
চলছে সেই সফ্‌টওয়্যারের পরীক্ষা। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

চলছে সেই সফ্‌টওয়্যারের পরীক্ষা। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

হেডফোনের স্পিকারে কথা বলছে একটি দৃষ্টিহীন কিশোর। তার নির্দেশ শুনে ‘সাড়া’ দিচ্ছে সামনে খুলে রাখা ল্যাপটপ। স্ক্রিনে খুলে যাচ্ছে একের পর এক বিষয়। যে বিষয়ে কিশোর জানতে চাইছে, সেটাই কানে বাজছে ওই কিশোরের! প্রয়োজন মতো মুখের নির্দেশেই থেমে যাচ্ছে বিষয় পাঠ। আবার শুরুও হচ্ছে মুখের নির্দেশে!

শব্দ শুনে ওয়েবসাইট সার্চ করার পদ্ধতি অবশ্য অনেক দিন আগেই তৈরি করেছে গুগ্‌ল। কণ্ঠস্বর শুনে সেই সব শব্দ মোবাইলের স্ক্রিনে ফুটে উঠবে, এমন অ্যাপও নেট জগতে বিরল নয়। সেই ধারণাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন লিলুয়ার এমসিকেভি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তিন পড়ুয়া দেবজ্যোতি দে, দীপঙ্কর সিংহ এবং শেখ সাহির হালিম।

তিন পডুয়ার দাবি, এত দিন মুখের নির্দেশে যে ধরনের কম্পিউটার চালানোর কাজ হয়েছে, তাতে ফাইল খুঁজে পাওয়া যেত। কিন্তু তাকে খোলা কিংবা ইচ্ছে মতো নিয়ন্ত্রণ করা যেত না। সে দিক থেকেই এই সফটওয়্যার অনেক বেশি উন্নত। শুধু মৌখিক নির্দেশে অডিও ফাইল খোলাই নয়, তাকে নিয়ন্ত্রণও করা যাবে। ফলে বইয়ের পাতা ওল্টানোর কায়দাতেই ‘অডিও বই’ নাড়াচাড়া করতে পারবে দৃষ্টিহীন পডুয়ারা।

অনেকেই অবশ্য বলছেন, প্রযুক্তিগত দিক থেকে ওই তিন জনের এই আবিষ্কার বিরাট কিছু গুরুত্বপূর্ণ নয়! বরং কম্পিউটার বিজ্ঞানের যে জ্ঞান, তাকে কাজে লাগিয়ে ফলিত স্তরে কিছু তৈরি করা। অর্থাৎ তাত্ত্বিক জ্ঞানকে সাধারণ মানুষের উপযোগী জিনিস তৈরিতে কাজে লাগানো। এই ধরনের ভাবনা-চিন্তা পড়ুয়াদের শিল্পক্ষেত্রে কাজেও সাহায্য করবেন বলে মনে করছেন কলেজের অধিকর্তা পরাশর বন্দ্যোপাধ্যায়।

এ রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্গে শিল্পক্ষেত্রের যোগাযোগও তুলনায় কম। তার ফলে অনেক ক্ষেত্রেই পড়ুয়ারা বিভিন্ন প্রযুক্তি শিখলেও তা প্রয়োগ করার জায়গায় পৌঁছতে পারে না বলে ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষকদের একাংশ মনে করেন। বিদেশের ক্ষেত্রে এই ছবিটা কিন্তু অনেকটাই আলাদা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক বলছেন, ‘‘এই কারণেই বিদেশি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্টিভ জোবস, ল্যারি পেজ, মার্ক জুকেরবার্গের মতো প্রতিভারা বেরোন। যাঁদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা পৃথিবীটাকেই পাল্টে দেয়।’’ এ রাজ্যেও ক্রমশ এমন উদ্ভাবনী ক্ষমতা ক্রমশ প্রকাশ পাচ্ছে। কখনও অফিস থেকে ফিরে খবর, রেলের টিকিট কাটার মতো বিভিন্ন সাইটকে একটি ওয়েবসাইটের ছাতার তলায় নিয়ে এসেছেন বেলঘরিয়ার এক বাসিন্দা। সেটাকে মোবাইলের অ্যাপেও রূপান্তরিত করেছেন তিনি। কম্পিউটারে আগ্রহ থেকেই কাঁকুড়গাছির এক স্কুলপডুয়া
তৈরি করেছে একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট।

শিক্ষাজগতের অনেকেই বলছেন, ইদানীং বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় কিছুটা হলেও শিল্প ও শিক্ষার এই সম্পর্কের কথা বুঝছেন। তার ফলে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গাঁটছড়াও বাঁধছে শিল্পসংস্থা বা বণিকসভাগুলি। পরাশরবাবু বলছিলেন, ‘‘আমাদের পড়ুয়াদের প্রকল্প আরও কী ভাবে শিল্পমুখী করা যায়, সে বিষয়ে একটি বণিকসভার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে।’’

Liluah software engineering student blind student headphone Education
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy