কলেজে নির্দিষ্ট আসনের চেয়ে বেশি ছাত্রছাত্রী ভর্তি ঠেকাতে কড়া অবস্থান নিয়েছেন তিনি। সরকারি স্কুলেও কোনও চাপে বা অনুরোধে অতিরিক্ত পড়ুয়া নেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
‘‘ছাত্র ভর্তিতে সুপারিশ বা অনুরোধ কিছুই মানা হবে না। লটারি পদ্ধতিও ত্রুটিহীন বলে মনে করি না আমরা। লটারি পদ্ধতির পর্যালোচনায় বসার সময় এসে গিয়েছে। মেধা গুরুত্ব পাচ্ছে কি না, সেটা ভেবে দেখা জরুরি,’’ বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
‘উপর মহল’ থেকে চাপ দিয়ে সমানে অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তি করানো হচ্ছে সরকারি স্কুলে। এমনিতেই ওই সব স্কুলে বহু শিক্ষক-পদ ফাঁকা। এই অবস্থায় ক্লাস করাতে হিমশিম খাচ্ছেন স্কুল-কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা শিবিরের খবর, বাড়তি পড়ুয়া ভর্তির নির্দেশ আসছে স্কুলশিক্ষা দফতর থেকেই। প্রধান শিক্ষকেরা তাই সেই নির্দেশ অগ্রাহ্য করতে পারছেন না। নির্দেশ অগ্রাহ্য করতে চাইলে বদলির খাঁড়া নামছে। অভিযোগ, অতিরিক্ত পড়ুয়া ভর্তি নিয়ে আপত্তি তোলায় কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষককে বদলি হতে হয়েছে।
সরকারি স্কুলগুলিতে বছরের পর বছর প্রধান শিক্ষক এবং অন্য বহু শিক্ষক-পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে। ৪১টি সরকারি স্কুলের একটিতেও গ্রন্থাগারিক নেই। এই পরিস্থিতিতে উপর থেকে চাপ দিয়ে বাড়তি পড়ুয়া ভর্তি করানোয় স্কুলের দমবন্ধ হওয়ার অবস্থা। কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুল, বারাসত প্যারীমোহন সরকার সরকারি স্কুলে গত বছর অতিরিক্ত পড়ুয়া ভর্তির সংখ্যাটা ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ওই সব স্কুলে প্রাক্-প্রাথমিকে লটারির মাধ্যমে ভর্তি নেওয়াটাই নিয়ম। প্রয়োজনে ফের লটারি হয় পঞ্চম শ্রেণিতে। কিন্তু স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে যে-হারে বাড়তি পড়ুয়া নেওয়ার সুপারিশ আসছে, তাতে নিয়মের অর্থই থাকছে না বলে মন্তব্য করলেন একটি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের সময়ে কোচবিহার সদর সরকারি স্কুলের কর্তৃপক্ষ শিক্ষক ও কর্মীদের শূন্য পদে নিয়োগের দাবিতে স্কুলের সামনে শিক্ষক, পড়ুয়া, অভিভাবকদের নিয়ে জমায়েত করেন। মুখ্যমন্ত্রী তা জেনেই শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ দেন। পরের দিন শিক্ষামন্ত্রী ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ফোন করেন। সেই সময় স্কুলে কেন অতিরিক্ত পড়ুয়া ভর্তি করা হয়, সেই প্রশ্নও তোলেন পার্থবাবু। সরকারি স্কুল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর অভিযোগ, লটারি প্রক্রিয়া এড়িয়ে বছরের পর বছর এটা চলছে। স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে আসা সুপারিশ মেনে ভর্তি নিতে গিয়ে প্রবল চাপে পড়ছে স্কুল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy