Advertisement
০৪ মে ২০২৪

হয়নি শিবির, বানভাসি মালদহে রক্ত-সঙ্কট

‘ও’ নেগেটিভ রক্ত না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ইংরেজবাজারের মহদিপুরের বাসিন্দা রফিকুল শেখও। তাঁর বোনের পেটের টিউমার অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজন ওই রক্তের। শুধু তফিকুল কিংবা রফিকুলই নয়, রক্তের জন্য লাইন দিয়ে অনেককেই খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১১:৪০
Share: Save:

তিনদিন আগে খাদ্যনালীর অস্ত্রোপচার হয়েছে ছেলের। তাই প্রয়োজন ‘এ’ পজিটিভ রক্ত। কিন্তু ব্লাড ব্যাঙ্কে মজুত নেই ওই গ্রুপের রক্ত। তাই রক্ত সংগ্রহের জন্য হন্যে হয়ে দাতার খোঁজ শুরু করেছেন মালদহের কালিয়াচকের বাসিন্দা তফিকুল ইসলাম।

‘ও’ নেগেটিভ রক্ত না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ইংরেজবাজারের মহদিপুরের বাসিন্দা রফিকুল শেখও। তাঁর বোনের পেটের টিউমার অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজন ওই রক্তের। শুধু তফিকুল কিংবা রফিকুলই নয়, রক্তের জন্য লাইন দিয়ে অনেককেই খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে। সপ্তাহ দুয়েক ধরে জেলার একাংশ বন্যার জলে ডুবে থাকায় বন্ধ রক্তদান শিবির। তাই ব্লাড ব্যাঙ্কের ভাঁড়ার শূন্য বলে জানা গিয়েছে।

অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সামাল দিতে মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়ার ডাক্তাররাই বুধবার কলেজে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন। সেই শিবিরে শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী রক্তদান করে। ফলে আপাতত সমস্যা কিছুটা হলেও মিটবে বলে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার অমিতকুমার দাঁ বলেন, ‘‘বন্যার জন্য একাধিক রক্তদান শিবির বাতিল হয়ে গিয়েছে। চলতি মাসে পর্যাপ্ত শিবির না হওয়ায় ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত মজুত নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের এই উদ্যোগে সামান্য কয়েকদিন চলে যাবে।’’ সমস্যা মেটাতে সবাইকে এগিয়ে আসার আবেদন করেছেন অমিতবাবু।

জানা গিয়েছে, মালদহ মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কের উপর বাইরের একাধিক নার্সিংহোম ও জেলার ১৫টি গ্রামীণ হাসপাতাল নির্ভরশীল। দৈনিক কমপক্ষে ৮০ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। তবে বর্তমানে মাত্র সাত ইউনিট রক্ত মজুত রয়েছে। এরমধ্যে ‘এ’ পজিটিভ পাঁচ, ‘ও’ পজিটিভ দুই এবং ‘এবি’ পজিটিভ এক ইউনিট রয়েছে। অন্যান্য গ্রুপের রক্ত নেই বলে সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজে দৈনিক গড়ে ২০টি অস্ত্রোপচার হয়। রক্তের অভাবে সমস্যায় পড়েছেন রোগীর আত্মীয় থেকে শুরু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অনেক সময় রক্ত না পেয়ে রোগীর আত্মীয়দের বিক্ষোভের মুখেও পড়ছেন কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে রক্তদাতা জোগাড় করে আনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে রোগীর আত্মীয়দের। চলতি মাসে মাত্র পাঁচটি রক্তদান শিবির হয়েছে। বন্যার জন্য বাতিল হয়ে গিয়েছে আটটি শিবির। জুনিয়র ডাক্তারদের শিবির থেকে যে পরিমাণ রক্ত মিলেছে তাতে চলবে আর দু’দিন। তার পর? চিন্তায় কপালে ভাঁজ ব্লাডব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crisis Blood Flood Maldah মালদহ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE