Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভিড় কম, অলীক দুষলেন প্রশাসনকে

নকশাল নেতা অলীক চক্রবর্তীর ডাকা ওই সভায় বেলা ৩টের পরে আসতে থাকেন ‘ভাঙড় সংহতি মঞ্চে’র সদস্য সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক প্রবোধ পণ্ডা, আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্যরা।

সভা: ভিড় শুধু মাঠের সামনেটুকুতেই। বৃহস্পতিবার ভাঙড়ে। ছবি: সামসুল হুদা।

সভা: ভিড় শুধু মাঠের সামনেটুকুতেই। বৃহস্পতিবার ভাঙড়ে। ছবি: সামসুল হুদা।

শুভাশিস ঘটক
ভাঙড় শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৩
Share: Save:

ছবিটা পাল্টে গেল এক বছরে!

গত বছরের গোড়ায় ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড বিরোধী সভাগুলিতে উপচে পড়ত ভিড়। কিন্তু বৃহস্পতিবার নির্ধারিত সময় বেলা ২টোয় খামারআইট সংলগ্ন তপোবন মাঠে ডাকা তেমনই একটি সভা কার্যত ফাঁকা!

নকশাল নেতা অলীক চক্রবর্তীর ডাকা ওই সভায় বেলা ৩টের পরে আসতে থাকেন ‘ভাঙড় সংহতি মঞ্চে’র সদস্য সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক প্রবোধ পণ্ডা, আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্যরা। তাঁদের দেখে অবশ্য গ্রামবাসীরা বেরোতে থাকেন। সভার জন্য চৌকি আসে। মাইক আনা হয়। মাছিভাঙা, খামারআইট এবং পদ্মপুকুর থেকে তিনটি মিছিল আসে। স্লোগানে বেশি শোনা গিয়েছে আরাবুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে হাকিবুলের শাস্তির দাবি।

অলীক আসেন এ সবেরও আধঘণ্টা পরে। বিকেল ৪টে নাগাদ। মাঠে তখন মেরেকেটে হাজার দুয়েক লোক। ভিড় কম হওয়ার পিছনে অলীক দুষেছেন প্রশাসনকেই। তাঁর অভিযোগ, প্রশাসনের দমন-পীড়নের জন্যই অনেকে সভায় আসতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘‘এই আন্দোলন এখন শুধু ভাঙড় বা এ রাজ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। অসম থেকে ‘কৃষক মুক্তি সংগ্রাম কমিটি’র সদস্যেরা এবং আরও অনেকে আসতে চেয়েছিলেন। পুলিশ তাঁদের ধরেছে। দমন-পীড়ন করে আন্দোলন থামানো যাবে না।’’ পুলিশের প্রতি অলীকের চ্যালেঞ্জ, ‘‘পুলিশের ক্ষমতা থাকলে আমাকে গ্রেফতার করুক। আমি আত্মসমর্পণ করতেও রাজি। কিন্তু আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।’’

এডি়জি (আইনশৃঙ্খলা) সঞ্জয় সিংহ, ডিআইজি (প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ) ভরতলাল মিনা-সহ পুলিশের বড় কর্তারা সভাস্থল থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ডিবডিবায় হাজির থাকলেও কেউই অলীককে গ্রেফতারের পথে যাননি। প্রচুর র‌্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছিল। এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যাতে শান্তিপূর্ণ থাকে, সেই কারণেই বাহিনী মোতায়েন করা হয়। কোথাও কোনও অশান্তি হয়নি।’’

সকালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭০ জন ছাত্রছাত্রী ভাঙড় যাওয়ার চেষ্টা করলে আটক করে তাঁদের বাগুইআটি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বেলঘরিয়ার একটি ফ্ল্যাট থেকে আটক করা হয় অসম থেকে আসা ১১ জন এবং কলকাতার এক বাসিন্দাকে। ওই ব্যক্তি সিপিআইএমএল (রেড স্টার)-এর সক্রিয় কর্মী বলেও দাবি পুলিশের। সকলে ভাঙড়ে প্রকল্পের বিরোধিতা করতে যাচ্ছিলেন বলে কলকাতা পুলিশের এসটিএফের থেকে জানতে পারে বেলঘরিয়া থানা। অশান্তির আশঙ্কাতেই ওই সব বহিরাগতদের আটক করা হয় বলে এক পুলিশকর্তা জানান। পরে অবশ্য তাঁেদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

সভায় ভিড় কম হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে শাসকদল। তৃণমূল নেতা কাইজার আহমেদের দাবি, ‘‘নকশাল নেতারা এখন খামারআইট এবং মাছিভাঙা গ্রামেও জনসমর্থন হারিয়েছেন। সকাল থেকেই ওঁরা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে তালিবানি কায়দায় সভায় না-গেলে একঘরে করা হবে বলে ফতোয়া জারি করেছিল।’’ আরাবুল বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে ওঁরা নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখলেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE