বিসিকেভিতে শেষ সমাবর্তন।—ফাইল চিত্র
দু’বছর পেরিয়ে গিয়েছে, স্থায়ী উপাচার্য নেই কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছেদ পড়েছে তাই দু'দুটো সমাবর্তন। পাশ করেও পড়ুয়ারা তাই আনুষ্ঠানিক ডিগ্রিটা আর হাতে পাননি।
তবে এটাই নিছকই বাহ্যিক দিক। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলছেন, ‘‘আরও কত যে হাজারো সমস্য়ার মধ্যে পঠনপাঠন চলছে তা বলে বোঝানো যাবে না।’’ কেন?
ব্যাখ্যাটা দিচ্ছেন, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রবীণ শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় উপাচার্য থাকা এবং না-থাকা, তফাৎটা অনেকটা পাকা দাঁত আর কাঁচা দাঁতের মতো। শক্ত খবার খাওয়া যায় না! স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় কত সিদ্ধান্ত যে নেওয়া যাচ্ছে না বলে বোঝানো যাবে না। নড়বড় করে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়।’’
আগামী ১৬ জুন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সমাবর্তন হওয়ার কথা। কিন্তু, বর্তমান অস্থায়ী উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হচ্ছে এ মাসের ২১ তারিখ। ফলে অন্য কেউ নতুন উপাচার্য হয়ে এলে, এত অল্প সময়ের মধ্যে তাঁর পক্ষে সমাবর্তনের মতো অনুষ্ঠান সামলানো কঠিন হবে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ।
বর্তমান অস্থায়ী উপাচার্য অসিত চক্রবর্তী মনে করেন, পড়ুয়াদের মুখ চেয়েই সমাবর্তনের মতো উৎসব যথাসময়েই হওয়া দরকার। উপাচার্য বদল হলে সমাবর্তন উৎসবে তার প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই।
২০১৩ সালে বিসিকেভি-তে শেষ সমাবর্তন হয়েছিল। ২০১৪ সালে অস্থায়ী উপাচার্য হয়ে এসেছিলেন চিত্তরঞ্জন কোলে। স্থায়ী দায়িত্ব না পাওয়ায় তিনি সমাবর্তনের আয়োজন করতে চাননি। যদিও ছ’মাস পরে মেয়াদ বাড়লেও সমাবর্তনের দায় আর নিতে চাননি তিনি।
পরের বছর অস্থায়ী উপাচার্য হন অসিত চক্রবর্তী। তাঁরও মেয়াদ দ্বিতীয়বারের জন্য বাড়ানো ফলে ২০১৫ সালে সমাবর্তন অনুষ্ঠান করা যায়নি। অসিতবাবু বলেন, ‘‘অস্থায়ী দায়িত্বে স্বাভাবিকভাবেই একটা চিন্তা থেকেই যায় যে, আর কতদিন দায়িত্ব থাকবে। ফলে এই ধরনের দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা করাটা কঠিন হয়ে পড়ে।’’ তবে ব্যক্তিগতভাবে তাঁর মত, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন ডিগ্রিধারীদের স্বার্থেই জরুরী। সেই জন্য তাঁর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তিনি সমাবর্তন আয়োজনের ব্যবস্থা করেছেন।
যাঁরা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কোর্স শেষ করেছেন, তাঁদের মতে, সমাবর্তন তাঁদের কাছে একটা অন্য উদ্দীপনা। তা না হলে নিয়ম অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক ডিগ্রি ডাকযোগে তাঁদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু, উৎসবের মঞ্চে সমাবর্তনের পোষাকে আচার্যের হাত থেকে ডিগ্রি নেওয়াটা রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা।
পর পর দু’বছর সমাবর্তন না হওয়ায় এবার স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি মিলিয়ে প্রায় ৮০০ জনকে ডিগ্রি দেওয়া হবে। পড়ুয়াদের প্রশ্ন, বছরের পর বছর পার হয়ে যাচ্ছে, অথচ সরকার কোনও স্থায়ী উপাচার্য দিচ্ছে না কেন। সার্চ কমিটি গড়া হলেও স্থায়ী উপাচার্যের সমস্যা মেটেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy