বাজেট বক্তৃতায় লক্ষ্মীর ভান্ডারে অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধির উল্লেখ নেই। রাজ্য সরকারের বাজেট বইয়ে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর উল্লেখ এবং ওই প্রকল্পের জন্য কত মহিলা উপকৃত হয়েছেন তার উল্লেখ থাকলেও ওই প্রকল্পের জন্য বাড়তি অর্থ বরাদ্দ বা মাথাপিছু অর্থ বাড়ানোর কথার কোনও উল্লেখ নেই। প্রসঙ্গত, এখন লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে প্রত্যেক মহিলাকে মাসে এক হাজার টাকা এবং তফসিলি জাতি-উপজাতি ভুক্ত এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির মহিলাদের মাসে ১,২০০ টাকা করে দেওয়া হয়।
তবে ২০২৬ সালের ভোটের আগে ওই পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে বলেই প্রশাসনিক মহলের ধারণা। অনেকের ধারণা, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ভোটের ছ’মাস আগে ওই বর্ধিত পরিমাণ ঘোষণা করতে পারেন। অনেকের আবার বক্তব্য, তার আগেও আলাদা করে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে মাথাপিছু অর্থের পরিমাণ বাড়াতে পারেন মমতা। অনেকেই ভেবেছিলেন, বাজেটেই ওই মাথাপিছু অর্থের পরিমাণ বাড়ানো হবে। জল্পনা ছিল ডিএ-র পরিমাণ বাড়ানো নিয়েও। তা অবশ্য করা হয়েছে। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ-র পরিমাণ ৪ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে ওই পরিমাণের ফারাক রয়ে গিয়েছে প্রচুর। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা ৫৩ শতাংশ ডিএ পান। রাজ্যের কর্মচারীরা পাবেন ১৮ শতাংশ। অর্থাৎ, এখনও তফাত রয়ে যাচ্ছে ৩৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের উল্লেখ অবশ্য বাজেট পুস্তিকায় রয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, “নারী ক্ষমতায়ণ বৃদ্ধির উদ্দেশে রাজ্য সরকার একগুচ্ছ জননীতিভিত্তিক প্রকল্প রূপায়িত করছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী প্রকল্প, রূপশ্রী প্রকল্প ইত্যাদি। এই প্রকল্পগুলি রাজ্যের নারীদের জীবনের বিভিন্ন পর্বকে গভীর ভাবে ছুঁয়ে আছে।” বাজেট বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে ২.২১ কোটি মহিলা উপকৃত হয়েছেন। লক্ষ্মীর ভান্ডারে মাথাপিছু অর্থ বৃদ্ধি করা হবে কি না, সে বিষয়ে বিকেলের সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন করা হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি জানান, সেটি পরবর্তী সময়ে দেখা হবে।
পাশাপাশি কন্যাশ্রী, সবুজসাথী, ঐক্যশ্রীর মতো অন্য প্রকল্পগুলিতে কত জন উপকৃত হয়েছেন সে কথাও উল্লেখ করা হয়েছে বাজেট পুস্তিকায়। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের রাজ্য বাজেটে মহিলা ও শিশুবিকাশ এবং সমাজকল্যাণ বিভাগের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৩৮,৭৬২.০৩ কোটি টাকা।
আগামী বছরে রাজ্যে বিধানসভা ভোট রয়েছে। তার আগে এটিই মমতার তৃতীয় দফার মুখ্যমন্ত্রিত্বের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। আগামী বছর নির্বাচন থাকায় ‘ভোট অন অ্যাকাউন্ট’ পেশ করা হবে। সে ক্ষেত্রে এ বারের রাজ্য বাজেটে কোন কোন বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়, সে দিকে নজর ছিল সকলের। রাজ্যের এ বারের বাজেট উল্লেখ করা হয়েছে, কন্যাশ্রী প্রকল্পের ফলে মাধ্যমিক স্তরে স্কুলছুট এবং বাল্যবিবাহ বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। এই প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত প্রায় এক কোটি ছাত্রী সাহায্য পেয়েছে। সবুজসাথী প্রকল্পেও ৪,৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ১ কোটি ২৬ লক্ষ ছাত্রছাত্রী সুবিধা পেয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রাজ্যের বাজেট বইয়ে।