Advertisement
E-Paper

বেতন বাড়বে কবে, দিশা নেই বাজেটে

বেতন কমিশন গঠন হয়েছে, কিন্তু বর্ধিত বেতন সরকারি কর্মচারীরা কবে থেকে পাবেন তার কোনও ইঙ্গিত রাজ্য বাজেটে নেই। বরং কর্মচারীদের বেতন-পেনশন খাতে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র যে সামান্য টাকা বরাদ্দ করেছেন, তাতে ২০১৬-১৭ সালে অন্তত বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হবে না বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা =

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৬ ০৯:২৯

বেতন কমিশন গঠন হয়েছে, কিন্তু বর্ধিত বেতন সরকারি কর্মচারীরা কবে থেকে পাবেন তার কোনও ইঙ্গিত রাজ্য বাজেটে নেই। বরং কর্মচারীদের বেতন-পেনশন খাতে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র যে সামান্য টাকা বরাদ্দ করেছেন, তাতে ২০১৬-১৭ সালে অন্তত বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হবে না বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ।

দ্বিতীয় দফায় জয়ের পর নবান্নে এসেই সরকারি কর্মচারীদের জন্য বেতনের ১০% অন্তর্বর্তিকালীন বৃদ্ধি ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পে-ব্যান্ডের উপর বর্ধিত সেই টাকা কর্মচারীরা পাবেন জুলাই মাস থেকে। মূল বেতনের পরিবর্তে পে-ব্যান্ডের উপর অন্তর্বর্তিকালীন ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে সরকারি কর্মচারীরা এমনিতেই খুশি নন। তার উপর আগেই ষষ্ঠ বেতন কমিশন গঠন হয়ে যাওয়ায় আপাতত মহার্ঘভাতার দাবিও আর মানবে না সরকার। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেতনের ফারাক প্রায় ৫০%-র বেশি রয়েই যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কর্মচারীদের আশা ছিল, রাজ্য বাজেটে এ ব্যাপারে স্পষ্ট দিশা মিলবে। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এ প্রসঙ্গে বলেন,‘‘আগে কমিশন সুপারিশ করুক! তার পর সরকার এ নিয়ে ভাববে। কমিশন যেমন বলবে সরকার তেমনই সিদ্ধান্ত নেবে। এখনই এ নিয়ে কিছু বলা অনুচিত।’’

রাজ্যের ষষ্ঠ বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার। দু’দফায় কমিশনের মেয়াদ বাড়ানোও হয়েছে। বিকাশ ভবনে কমিশনের অফিসও চলছে। এক অর্থ কর্তা জানান, বেতন কমিশনের কাজ এখনও পুরোদমে শুরু হয়নি। ফলে এ বছরের মধ্যে কমিশন রিপোর্ট জমা দেবে এমন সম্ভাবনা কম। সেই কারণেই বাজেটে বাড়তি বরাদ্দ রাখা হয়নি। যে সামান্য বরাদ্দ করা হয়েছে তা রুটিন ইনক্রিমেন্ট দিতেই চলে যাবে।

২০০৬ সালে পঞ্চম বেতন কমিশন গঠিত হয়েছিল। সেই কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করতে গিয়ে সরকারের বেতন-পেনশন খাতে খরচ গড়ে ৩০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। সেই ধাক্কা সামলাতে গিয়েই তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত বাজার থেকে দেদার ঋণ নেওয়া শুরু করেন। ১০ বছরের মেয়াদি সেই ঋণের আসল শোধের সময় আসছে চলতি আর্থিক বছর থেকেই। ফলে এক ধাক্কায় সরকারের ঋণ শোধের পরিমাণ বছরে গড়ে ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়াবে। এর মধ্যেই গঠিত হয়েছে আরও একটি বেতন কমিশন। আগামী পাঁচ বছরে এই খাতে খরচ ৭৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হতে পারে বলে সরকার আগাম হিসেব কষেছিল। সেই মতো চতুর্দশ অর্থ কমিশনের কাছে বাড়তি বেতনের জন্য অনুদানও চেয়েছিল সরকার। অর্থ কমিশন সেই দাবি মানেনি। উল্টে রাজ্যে আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে খরচ তুলতে বলেছে তারা। অন্য দিকে কেন্দ্রীয় সরকার সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে বর্ধিত বেতন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে।

আপাতত বাজেট বরাদ্দে ২০১৬-১৭ সালে বেতন খাতে ৩৬ হাজার ১৯০ কোটি টাকা ধরেছে রাজ্য সরকার। যা গত আর্থিক বছরের তুনায় মাত্র ৭% বেশি। অন্য দিকে পেনশন খাতে রাজ্যের বরাদ্দ ১৪ হাজার ৪১৬ কোটি। যা গত আর্থিক বছরের তুলনায় ৪% বেশি। ফলে কর্মচারীদের মনে সংশয় তীব্র হয়েছে। নতুন বেতন কমিশন গঠিত হলেও তার সুফল কবে পাবেন ভেবে দিশাহারা তাঁরা।

বাজেটের পরে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের প্রশ্ন, ‘‘কর্মসংস্থান নিয়ে রাজ্য সরকার বারবার একই তথ্য দিয়ে চলেছে। যার কোনও হিসাব মিলছে না। অথচ বেতন কমিশনের কী হল, তার কোনও উল্লেখই নেই।’’ বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীও বলেছেন, ‘‘বেতন কমিশন নিয়ে সরকারের মুখে কোনও কথাই নেই।’’

রাজ্য বাজেটে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মেটানোর প্রসঙ্গেও কিছু বলা নেই। তা নিয়ে বিজেপি-র সরকারি কর্মচারী পরিষদের নেতা দেবাশিস শীলের বক্তব্য, ‘‘দেশের মধ্যে আমাদের রাজ্যেই মহার্ঘভাতা সবচেয়ে কম। বাজেটেও কোনও আশ্বাস মিলল না। এর পর সরকার ঋণ শোধের অজুহাতে মহার্ঘভাতা পুরোপুরি বন্ধ (ফ্রিজ) করে না দেয়!’’

salary distress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy