Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

টানা বৃষ্টি, ধসে দুর্ভোগ পাহাড় থেকে সমতলে

প্রাকৃতিক দুর্যোগে রবিবার পাহাড় এবং সমতলে শিলিগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়। প্রবল বর্ষণে দার্জিলিঙের ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’জায়গায় ধস নামে। ধস নামে কালিম্পং থেকে সিকিম যাওয়ার পথে আরও কয়েকটি জায়গাতেও। তাতে দীর্ঘক্ষণ বন্ধ ছিল যান চলাচল। অন্য দিকে শনিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টির জেরে মহানন্দা, পঞ্চনই, মহিষমারির মতো নদীগুলির জলস্ফীতিতে শিলিগুড়ি শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়ে।

বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে মহানন্দা নদী।

বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে মহানন্দা নদী।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৪ ০২:০৬
Share: Save:

প্রাকৃতিক দুর্যোগে রবিবার পাহাড় এবং সমতলে শিলিগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়। প্রবল বর্ষণে দার্জিলিঙের ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’জায়গায় ধস নামে। ধস নামে কালিম্পং থেকে সিকিম যাওয়ার পথে আরও কয়েকটি জায়গাতেও। তাতে দীর্ঘক্ষণ বন্ধ ছিল যান চলাচল। অন্য দিকে শনিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টির জেরে মহানন্দা, পঞ্চনই, মহিষমারির মতো নদীগুলির জলস্ফীতিতে শিলিগুড়ি শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়ে। শহরে নানা এলাকায় জল জমে যায়। মহিষমারি নদীতে ভেসে যাওয়া কাঠ ধরতে গিয়ে ডুবে যান দুই তরুণ। এক জনকে পরে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও অপর জন তলিয়ে গিয়েছেন।

প্রবল বৃষ্টিতে সকাল দশটা নাগাদ ধস নামে সেবক আর ২৭ মাইলের দু’জায়গায়। রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। ধস সরাতে পথে নামে সেনাবাহিনী। হাত লাগান বাসিন্দারাও। দীর্ঘক্ষণ পর গাড়ি চলাচলের জন্য রাস্তার এক দিক খুলে দেওয়া হয়। তাতেও দীঘর্ক্ষণ যানজট ছিল। ঘণ্টা পাঁচেক পর পরিস্থিতি কিছু স্বাভাবিক হয়। দার্জিলিংয়ের অতিরিক্ত জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, “দু’জায়গাতে ধস সরিয়ে তিনটের পর থেকে যানজট সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়।” যদিও লাগাতার বৃষ্টির জেরে ২৭ মাইল এলাকায় বিকেলে ফের ধস নামে।

মহানন্দা উপচে জলমগ্ন শিলিগুড়ি পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের রাস্তা।

প্রবল বর্ষণের জেরে রবিবার ভোর রাত থেকে জলবন্দি হয়ে পড়েন শিলিগুড়ি ১ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ আম্বেদকর কলোনি, পঞ্চানন কলোনির অন্তত চারশো পরিবার। চতুর্থ মহানন্দা সেতু সংযোজক রাস্তার অন্যদিকে জলমগ্ন হয়ে পড়ে নদীর ধারে শিশুডাঙি, খোলাইবক্তিয়ারি জোতের বিস্তীর্ণ এলাকা। এক কোমর জল দাঁড়িয়ে যায় দক্ষিণ আম্বেদকর কলোনির বাসিন্দাদের বাড়ির ভিতরে। সকাল হতেই বাড়ির জিনিস পত্র বাঁচিয়ে সেগুলি নিরাপদ জায়গায় সরাতে তৎপর হন বাসিন্দারা। পুরসভা থেকে কোনও সাহায্য না মেলায় বাড়তে থাকে ক্ষোভ । মহানন্দার ধারে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গানগর-সহ অন্যান্য এলাকাতেও জল ঢুকে পড়ে। প্রবল বৃষ্টিতে শিলিগুড়ির বাড়িভাসায় একটি কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়ে। দেওয়াল চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন ৬৫ বছরের বৃদ্ধা জ্যোৎস্না পাল। তাঁর পিঠে, মাথায় ও কোমরে চোট লেগেছে। শিলিগুড়ি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন।

মহিষমারি নদীতে ভেসে যাওয়া কাঠ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান এক তরুণ। নাম মহম্মদ রসুল। তার বাড়ি শিবনগরের হাতিডোবা এলাকায়। এ দিন সকালে সুকান্তপল্লির বাসিন্দা সুশীল হেমব্রম এবং মহম্মদ রসুল নদীতে ভেসে যাওয়া কাঠ ধরতে জলে নামেন। সে সময় স্রোতে তলিয়ে যান। স্থানীয় এক বাসিন্দা তা দেখে একটি দড়ি ছুড়ে দেন। সুশীল দড়ি ধরতে পারলেও রসুল পারেননি। মহম্মদ রসুলের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।

প্রবল বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় সাহায্যের জন্য পুর কমিশনারকে ভোর থেকে ফোন করেও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ বাম কাউন্সিলর অমরনাথ সিংহের। তিনি বলেন, “মেয়র এবং পারিষদরা ইস্তফা দেওয়ার পর শহর অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। পুর কমিশনারের ফোনেও যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। ”

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২ জুলাই পর্যন্ত পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া ছুটিতে রয়েছেন। তাঁর জায়গায় দায়িত্বে রয়েছেন ফিনান্স অফিসার। তাঁকেও ফোন করে পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mahananda river natural disasters
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE