দু’টি মেয়ের মধ্যে সম্পর্ক কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি দুই পরিবারের কেউই। সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য বাড়ির অনেকেই বুঝিয়ে ছিলেন তাঁদের। আপত্তি জানিয়েছিলেন পড়শিদের একাংশও। ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়েই ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন দুই তরুণী। দার্জিলিং এর একটি হোটেল থেকে অচৈতন্য অবস্থায় তাদের উদ্ধারের পর এমনই অনুমান করছে পুলিশ।
নিউ ব্যারাকপুরের ওই দুই তরুণী কলকাতারই একটি কলেজের ছাত্রী। সময় মত তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোতেই এ যাত্রা বেঁচে গিয়েছেন দু’জনেই। একজন আপাতত সুস্থ। তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অপর জন বিপন্মুক্ত হলেও তার সুস্থ হতে আরও দিন কয়েক লাগবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। তাই আপাতত তিনি থাকছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই।
এদিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল একজন বেশ সুস্থ। তিনি বিছানায় বসে আছেন। নিজেই জানালেন, গত ২১ মার্চ কলেজে যাওয়ার নাম করে তৎকালে এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট কাটেন উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের। শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নেমেছিলেন। সেখান থেকেই পর্যটক তথ্যকেন্দ্র থেকে দার্জিলিংয়ের হোটেল বুক করেন। দু’দিন চুটিয়ে দার্জিলিংয়ে ম্যাল, চৌরাস্তা, চকবাজার ঘুরেছেনও। কিন্তু ঘুমের ওষুধ খেলেন কেন? প্রশ্নে তিনি জানিয়ে দেন ‘‘আমাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়েছিল। তাই ওষুধ খেয়েছি।’’ তবে কী কারণে তাঁরা ঘুমের ট্যাবলেট খেয়েছেন তা কিছুতেই জানাতে চাইলেন না। বললেন, ‘‘ওটা ব্যক্তিগত বিষয়।’’
এক তরুণীর বাবা পেশায় কলকাতা পুলিশের কর্মী। অপর তরুণীর বাবা পেশায় মোটর মিস্ত্রি জানান, দুই বন্ধু নিজেদের সোনার দুল বিক্রি করে টাকা জোগাড় করেন। এক বন্ধুর মা অনিদ্রার রোগী। চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ঘুমের ওষুধ খেতে হয়। তাঁর প্রেসক্রিপশন চুরি করে একাধিক দোকান থেকে কয়েকদিন ধরে ঘুমের ওষুধ কিনেছিলেন তাঁরা।
২১ মার্চ সকালে কলেজ যাওয়ার নাম করে ব্যাগে সামান্য জামাকাপড় নিয়ে বের হন দুজনেই। বিকেলে ফোন করে জানান পড়তে যাচ্ছেন। কিন্তু দু’জনেই ততক্ষণে শিলিগুড়িগামী ট্রেনে চেপে বসেছেন। রাতেও তাঁরা বাড়ি না ফেরায় ফোন করে সুইচড অফ পান এক তরুণীর মা। এরপরে খোঁজাখুঁজি করে জানতে পারেন, ওইদিন কলেজ বা টিউশন কোনও জায়গাতেই যাননি তাঁরা। রাত ১২টা নাগাদ নিউ ব্যারাকপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে দুই পরিবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy