ভোগান্তি: শিশুকে হাওয়া করছেন মা। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি হাসপাতালে। ছবি: সন্দীপ পাল
২৪ ঘণ্টারও বেশি বিদ্যুৎবিহীন রইল জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল৷ সোমবার দুপুরে কালবৈশাখি ঝড়ের পরে হাসপাতালে বিদ্যুৎ চলে যায়। রাতে জেনারেটরের সাহায্যে জরুরি পরিষেবা চালানোর চেষ্টা চললেও বন্ধ হয়ে যায় একাধিক পরিষেবা৷ সমস্যায় পড়েন কয়েকশো রোগী৷ মঙ্গলবার বেলা চারটে নাগাদ বিদ্যুৎ আসে।
সোমবার কালবৈশাখীর পরে জলপাইগুড়িতে৷ জেলা হাসপাতাল-সহ অনেক এলাকাই বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে৷ সন্ধের দিকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হলেও, বাদ থেকে যায় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল৷ যার জেরে বিভ্রাট সৃষ্টি হয় গোটা হাসপাতালে৷
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, লোডশেডিং হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কর্তৃপক্ষ পিডব্লিউডি-র বিদ্যুৎ বিভাগে খবর পাঠান৷ সেখানকার কর্মীরা রাত পর্যন্ত পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন৷ শেষ পর্যন্ত বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির কর্মীরা এসে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন৷ কিন্তু কারণ জানতেই চব্বিশ ঘণ্টা পার হয়ে যায়৷ এ দিন দুপুরে বিদ্যুৎ কর্মীরা বুঝতে পারেন হাসপাতালে বিদ্যুতের সাব স্টেশনে কেবল সমস্যার জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে৷
জেনারেটরের সাহায্যে জরুরি পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা হলেও এ দিন সকাল থেকে হাসপাতালে এক্স-রে, সিটি স্ক্যান ও আল্ট্রা সোনোগ্রাফি বন্ধ ছিল৷ বন্ধ ছিল ডায়ালিসিসও৷ লিফট বন্ধ থাকায় সিড়ি দিয়েই রোগীদের ওঠানো-নামানো করা হয়৷ এ দিনের মতো অস্ত্রোপচার হলেও পরবর্তী অস্ত্রোপচার নিয়ে ধন্দে স্বাস্থ্য কর্মীরা৷
বিদ্যুতের অভাবে পাম্প বন্ধ থাকায় হাসপাতালে পানীয় জলের সঙ্কটও দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামলাতে পুরসভার তরফে সকালবেলাই দুটো পানীয় জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হয়েছে৷ কিন্তু স্নানাগার বা শৌচাগারে জল না থাকায় সমস্যায় পড়েছেন রোগীরা৷
সেইসঙ্গে কোনও ওয়ার্ডে একটি তো কোন ওয়ার্ডে দু’টি টিউব লাইট জ্বললেও, সোমবার দুপুর থেকেই কোনও ওয়ার্ডে পাখা চলেনি৷ ফলে প্রায় সব ওয়ার্ডের রোগীরা, বিশেষ করে যে সব ওয়ার্ডে একেকটি বেডে দু’জন করে রয়েছেন তারা গরমে রীতিমত হাঁসফাঁস করছেন৷
সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে৷ হাসপাতালে ভর্তি ফাটাপুকুরের বাসিন্দা গৌতম রায় বলেন, ‘‘সোমবার দুপুর থেকে হাসপাতালে পাখা ঘুরছে না৷ গরমে মরে যাচ্ছি৷ কারও কোনও খেয়াল নেই৷’’ এক রোগীর আত্মীয় আদেশ রায় বলেন, ‘‘স্নানাগার ও শৌচাগারে জল না থাকায় সমস্যা হচ্ছে৷’’
ভারপ্রাপ্ত সুপার সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘ সমস্যা শুরুর পরই আমরা সংশ্লিষ্ট সব মহলে খবর দেই৷ জেনারেটর দিয়ে জরুরি সমস্ত পরিষেবা চালু রাখার চেষ্টা চলে৷’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy