Advertisement
E-Paper

দিনমজুরি করেও উচ্চ মাধ্যমিকে ৯২ শতাংশ পেলেন সৌরভ

ফুলহারের ও পারে রতুয়ার দিয়ারার চর জগবন্ধুটোলায় ভাঙাচোরা বেড়ার বাড়ি। বাবা বীরেন্দ্রবাবু দিনমজুর। নিয়মিত কাজ না মেলায় ভাঙাচোরা বাড়ি সংস্কার দূরের কথা, দু’বেলা ছেলেমেয়েদের পেট ভরা খাবার জোগাড় করা সম্ভব হয় না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ১৩:৩০
সফল: বাবা ও মায়ের সঙ্গে জগবন্ধুটোলায় নিজের বাড়িতে সৌরভ। ছবি: বাপি মজুমদার।

সফল: বাবা ও মায়ের সঙ্গে জগবন্ধুটোলায় নিজের বাড়িতে সৌরভ। ছবি: বাপি মজুমদার।

বাবা দিনমজুর। কিন্তু ফুলহার নদীর চর লাগোয়া গ্রামে কাজ মেলে না নিয়মিত। তাই পড়াশোনার খরচ চালাতে দিনমজুরি করতে হয় তাকেও। তারই ফাঁকে পড়াশোনা। আর তা করেই মাধ্যমিকে ৯১ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল মালদহের রতুয়ার কাটাহা দিয়ারা হাইস্কুলের ছাত্র সৌরভ মণ্ডল। কিন্তু বাড়ি ছেড়ে বাইরে গিয়ে ভালো স্কুলে ভর্তি হওয়া সম্ভব হয়নি। গ্রামের সেই স্কুল থেকেই উচ্চ মাধ্যমিকেও ৯২ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন সৌরভ।

তাঁর প্রাপ্ত নম্বর চাঁচল মহকুমার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সামসি সীতাদেবী গার্লস স্কুলের সায়ন্নি পাল ৪৬৪ পেয়েছে। আর সৌরভ পেয়েছেন ৪৬২। বাংলায় ৯১, ইংরেজিতে ৯৩, ভূগোলে ৯৬, ইতিহাসে ৯৪ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৮৮ পেয়েছে সে। কিন্তু এ বার বাইরে হস্টেলে থেকে আর পড়াশোনা সম্ভব কি না সেই দুঃশ্চিন্তা পেয়ে বসেছে তাকে। প্রধান শিক্ষক গোপাল প্রামাণিক বলেন, ‘‘স্কুলের তরফে ওকে সব রকম সাহায্য করা হত। অনটনের মধ্যে নিজের পরিশ্রম আর চেষ্টার ফল ও পেয়েছে।’’

ফুলহারের ও পারে রতুয়ার দিয়ারার চর জগবন্ধুটোলায় ভাঙাচোরা বেড়ার বাড়ি। বাবা বীরেন্দ্রবাবু দিনমজুর। নিয়মিত কাজ না মেলায় ভাঙাচোরা বাড়ি সংস্কার দূরের কথা, দু’বেলা ছেলেমেয়েদের পেট ভরা খাবার জোগাড় করা সম্ভব হয় না। কিন্তু অনটনের মধ্যেও দুই ছেলেমেয়ে পড়াশোনায় ভালো বলে তাদের পড়া বন্ধ হতে দেননি। সৌরভের দিদি বর্ণশ্রী সামসি কলেজে বাংলা অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করে। পরিবারটির অসহায়তার কথা ভেবে স্থানীয় স্তরে উদ্যোগ নিয়ে মা দীপালিদেবীকে আশাকর্মীর কাজ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই টাকায় সংসারও চলে না। তাই দিনমজুরি করে পড়ার খরচ যোগাতে হত সৌরভকে। সারাদিনের হাড়ভাঙা খাটুনি দমাতে পারেনি তাকে।

ইংরেজি অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করতে চায় সৌরভ। তিনি বলেন, ‘‘এ বার বাইরে থেকে পড়াশোনা করতে হবে। বাড়ি থেকে বলছে, খরচ চালানো সম্ভব নয়। কী হবে কে জানে।’’

Higher Secondary Results 2017 Day laborer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy