Advertisement
E-Paper

আত্মঘাতী, অভিযোগ মালদহে

স্ত্রীকে পিটিয়ে খুন করার পর বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদহের মহিষবাথানি গ্রামপঞ্চায়েতের গোয়ালপাড়ার রায়পুরে। এই ঘটনায় ব্যপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গ্রাম জুড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত স্বামীর নাম বিশ্বনাথ রায় (৪৫)। তাঁর স্ত্রীর নাম প্রমীলা রায় (৩৫)। দু’জনই দিনমজুরি করতেন। এই দম্পতির চার ছেলেমেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে বাপি ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। বাড়িতে তিন ছেলে মেয়ে নিয়ে থাকতেন দম্পতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৫ ০৩:৩৪
বিশ্বনাথ ও তাঁর স্ত্রী প্রমীলাদেবী। —নিজস্ব চিত্র।

বিশ্বনাথ ও তাঁর স্ত্রী প্রমীলাদেবী। —নিজস্ব চিত্র।

স্ত্রীকে পিটিয়ে খুন করার পর বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদহের মহিষবাথানি গ্রামপঞ্চায়েতের গোয়ালপাড়ার রায়পুরে। এই ঘটনায় ব্যপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গ্রাম জুড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত স্বামীর নাম বিশ্বনাথ রায় (৪৫)। তাঁর স্ত্রীর নাম প্রমীলা রায় (৩৫)। দু’জনই দিনমজুরি করতেন। এই দম্পতির চার ছেলেমেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে বাপি ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। বাড়িতে তিন ছেলে মেয়ে নিয়ে থাকতেন দম্পতি।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ১২ টা নাগাদ বাঁশ দিয়ে শোয়ার ঘরে স্ত্রী প্রমীলাদেবীকে বেধড়ক মারধর করেন বিশ্বনাথবাবু। ছেলেমেয়েরা বুঝতে পেরে চিৎকার করে প্রতিবেশীদের ডেকে নিয়ে গিয়ে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে রাতেই মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করেন ওই মহিলাকে। বৃহস্পতিবার ভোর চারটে নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। এরপরই এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ নিজের শোয়ার ঘর থেকে মৃতদেহ উদ্ধার হয় বিশ্বনাথের। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান জমিতে দেওয়ার কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হন তিনি। পুলিশ মৃতদেহ দুটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।

মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্ত্রীকে খুন করার পর স্বামী আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারা গিয়েছে। মৃতদেহ দুটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্ত হচ্ছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বনাথ বাবুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী প্রমীলাদেবী ২০ বছর আগে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। তাঁর একমাত্র ছেলে ছিল বাপি। স্ত্রী মারা যাওয়ার বছর দুয়েক পর গাজলের কাটিকান্দর গ্রামের বাসিন্দা প্রমিলা রায়কে তিনি বিয়ে করেন। তাঁর দুই মেয়ে এবং এক ছেলে রয়েছে। বড় মেয়ে রুমা দশম শ্রেণিতে এবং ছোট মেয়ে সীমা ওই প্রথম শ্রেণিতে পান্ডুয়া হাইস্কুলে পড়াশুনা করে। এবং বিশ্বজিৎ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণির ছাত্র। প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ছেলে বাপি গোয়াতে শ্রমিকের কাজ করেন। স্বামী-স্ত্রী দু’জনে অন্যের জমিতে চাষবাস করে সংসার চালাতেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক ধরে বিশ্বনাথবাবু স্ত্রী প্রমীলাদেবীকে মারধর করত বলে অভিযোগ। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ বিশ্বনাথবাবু প্রমীলাদেবীকে চরিত্র নিয়ে কথা বলে মারধর করত।

ওই দম্পতির মেয়ে রুমা জানায়, ‘‘মায়ের কান্নার শব্দ শুনতে পাই। প্রতিবেশীদের কাছে গিয়ে সব ঘটনা বললে তাঁরা ছুটে গিয়ে মাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। মারা গেছেন। বাবা মাকে প্রায় মারধর করত। আমরা অসহায় হয়ে গেলাম।’’ ছোট মেয়ে সীমার প্রশ্ন, ‘‘এখন আমরা কোথায় থাকব?’’ নিহতের বোন প্রভাতী রায় বলেন, ‘‘জামাইবাবু দিদির চরিত্র খারাপ বলে মারধর করত। আমরা জামাইবাবুকে নিষেধ করতাম। উনি শুনতেন না। এ দিন শুনি দিদিকে পিটিয়ে খুন করেছে। পরে জানতে পারি নিজেও বিষ খেয়ে মারা গিয়েছেন।’’ এ দিনই দুপুরে গ্রামে যান প্রঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের গুমানি শেখ। তিনি বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েগুলির সাহায্যের জন্য ব্লকে জানিয়েছি। পঞ্চায়েতের তরফ থেকে যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করব।’’

malda Suicide murder police hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy