Advertisement
E-Paper

মিড-ডে মিলে আধার চিত্র

আধার কার্ড না থাকলে মিড ডে মিল মিলবে না, এমন নির্দেশ দিয়েও পিছু হঠেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আধার কার্ড না থাকলেও মিড ডে মিল সহ স্কুলের সব সুযোগ সুবিধে মিলবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ০২:১২

আধার কার্ড না থাকলে মিড ডে মিল মিলবে না, এমন নির্দেশ দিয়েও পিছু হঠেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আধার কার্ড না থাকলেও মিড ডে মিল সহ স্কুলের সব সুযোগ সুবিধে মিলবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। এর ফলে আপাতত স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে অভিভাবকরা। কিন্তু জেলাগুলির পরিস্থিতি কী? প্রান্তিক সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলির কত পড়ুয়ার আধার কার্ড রয়েছে? যাঁরা মিড ডে রাঁধেন তাঁদেরও কী রয়েছে আধার কার্ড। কেন্দ্র সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে কতজন পড়ুয়া মিড ডে মিল থেকে বঞ্চিত হত?

শিলিগুড়ি

মিড ডে মিলের জন্য আধার কার্ড জরুরি বলে গত বছর মে মাসেই শিলিগুড়ির প্রাথমিক স্কুলগুলিকে চিঠি পাঠিয়ে পড়ুয়াদের কাদের আধার কার্ড নেই জানাতে চাওয়া হয় সর্বশিক্ষা বিভাগ থেকে। যাদের নেই তাদের শিবির করে কার্ড দেওয়ারও কথা ছিল। শিলিগুড়ির বাঘা যতীন পার্কে ডাবগ্রাম-২ জিএসএফপি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, তাদের পড়ুয়াদের জন্য সে সময়ই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। বিভিন্ন এলাকায় সে সময় আধার কার্ড করার প্রক্রিয়া চলছিল। অভিভাবকদের বলে কার্ড করানোর ব্যবস্থা করা হয়। তবে নতুন যারা ভর্তি হচ্ছে তাদের একাংশের ওই কার্ড নেই।

জলপাইগুড়ি

সরকারি নয়া বিজ্ঞপ্তিতে খানিকটা স্বস্তি মিলেছে৷ কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে ফের আধার কার্ড বাধ্যতামূলক বলে নির্দেশ জারি হলে পড়ুয়াদের মিড ডে মিলই বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কায় জলপাইগুড়ির হাটপুকুরি বিএফপি স্কুলে কর্তারা৷ গড়ালবাড়ির কাছে শোভারহাটের ওই স্কুলটিতে রয়েছে ৯২ জন পড়ুয়া৷ যাদের মধ্যে মাত্র সতেরো থেকে আঠারোজনের আধার কার্ড রয়েছে৷ তবে স্কুলের রাধুনিদের মধ্যে বেশিরভাগেরই আধারকার্ড রয়েছে৷ স্কুলের প্রধান শিক্ষক অসিত কুমার রক্ষিত বলেন, ‘‘মাঝে শোনা গিয়েছিল, এই এলাকার স্কুলে স্কুলে শিবিরের ব্যবস্থা করে পড়ুয়াদের আধার কার্ড তৈরি করে দেওয়া হবে৷ কিন্তু তারপর সেই কাজ আর হয়নি৷ যার ফলে আমাদের স্কুলের বেশিরভাগ পড়ুয়ারই আধার কার্ড নেই। ফলে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করা হলে আমাদের স্কুলের অনেকেরই মিড-ডে মিলই বন্ধ হয়ে যাবে।

দক্ষিণ দিনাজপুর

সকালে দু’মুঠো মুড়ি খেয়ে স্কুলে আসে প্রথম শ্রেণীর অলোক বর্মন, সঞ্জয় ওঁরাওরা। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকায় নিমগাছি প্রাথমিক স্কুলে গরিব খেতমজুর ঘরের ১১৩ জন কচিকাঁচা মিড ডে-র রান্না করা খাবারের উপর রোজ নির্ভর করে থাকে। এদের মধ্যে ৬৩ জনের আধার কার্ড হয়েছে। বাকি ৫০ জন শিশুর আধার কার্ড হয়নি। কিন্তু দুপুরে বাচ্চাদের মিড ডে-র গরম ডালভাত তরকারি মিলবে ভেবে নিশ্চিন্ত হয়ে বাবা মায়েরা সাতসকালে দিন মজুরি খাটতে বেরিয়ে যান। অভিভাবকদের বক্তব্য, আধার কার্ড ছাড়া স্কুলে মিড ডে-র ভাত না পেলে শিশুদের দুপুরে না খেয়ে থাকতে হবে। স্কুলের মিড ডে-র রান্নার দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য পার্বতী বর্মনের মতো অনেকের আধার কার্ড নেই। তাঁদের অভিযোগ, আধার কার্ড করতে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে তপন অথবা আরও দূরে বালুরঘাটে যেতে হয়।

মালদহ

মিড-ডে-মিলে কেন্দ্র আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করার কথা ঘোষণা করতেই হইচই পড়ে গিয়েছে মালদহের জেলার স্কুল গুলিতে। কারণ স্কুলের অধিকাংশ পড়ুয়াদের নেই আধার কার্ড। পুরাতন মালদহের সাহাপুর হাই স্কুলে মোট ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে ৩২০০ জন। পঞ্চম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া রয়েছে ১৭ জন। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ পড়ুয়াদেরই আধার কার্ড নেই। মিড-ডে-মিলের রান্নার কাজের সঙ্গে যুক্ত ৮০ জন মহিলার মধ্যে ৩৫ জনের নেই আধার কার্ড।

উত্তর দিনাজপুর

রায়গঞ্জের বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের দুলহর অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ১২১ জন পড়ুয়া। শিক্ষক ৫ জন। মিডডে মিলের রাঁধুনির সংখ্যা ২ জন। স্কুলের শিক্ষক কৃষ্ণেন্দু রায়চৌধুরীর দাবি, বেশির ভাগ শিশুর আধারকার্ড নেই। ফলে মিডডে মিলে স্বচ্ছতার প্রশ্নে আধারকার্ড বাধ্যতামূলক করা হলে বহু পড়ুয়া মিড ডে মিল খাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে। তাই আধার কার্ড কী ভাবে করা হবে, তা নিয়ে চিন্তায় তাঁরা।

Aadhaar card Midday Meal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy