গত ৪৮ ঘণ্টায় দুর্ঘটনা ঘটেছে চারটি। মৃতের সংখ্যাও ৪। জখম হয়েছেন ৫ জন।
দু’টি বড় দুর্ঘটনাই ঘটেছে জাতীয় সড়কে। এশিয়ান হাইওয়ে লাগোয়া রাস্তায়। একটি দুর্ঘটনা ঘটে সোমবার দুপুরে উত্তরকন্যার সামনে। আরেকটি রাতে। কলকাতাগামী রাস্তায়। বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন দুই পুলিশকর্মীও। মঙ্গলবার বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচেছেন দুই মোটরবাইক আরোহী। একে তো শীতের মরসুমে কুয়াশায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। উপরন্তু, দূষণের ফলে সৃষ্ট ধোঁয়াশাও বিপদ বাড়াচ্ছে। পুলিশ কর্তারা জানান, কুয়াশা, ধোঁয়াশা নিয়ন্ত্রণ তো সম্ভব নয়, তাই গাড়ির গতিবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কড়াকড়ি বাড়ানো হচ্ছে।
শীত পড়লেই ভোরবেলা ও রাতের দিকে তো বটেই দুপুরের দিকেও অনেক সময় হালকা কুয়াশায় ঢাকে অনেক এলাকা। ধূলিকণার জেরে ‘স্মগ’ বা ধোঁয়াশা তৈরি হয়। সোমবার রাতে ডিসির (সদর) গাড়ির চালক ধোঁয়াশার কারণেই দেখতে না পেয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পিছনে ধাক্কা মারে এবং দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সন্দেহ পুলিশেরই। ঘটনাচক্রে, বড়দিনের রাতেই ট্রাফিক আইন ভাঙায় ৪৩৫ জন গাড়ি-বাইকের চালককে ফাইন করা হয়েছে। আদায় হয়েছে, ১ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা।
কমিশনারেটের অফিসারেরা জানান, জরিমানা করলেও চালকদের একাংশের দ্রুতবেগে গাড়ি চালানোর মানসিকতার বদল হচ্ছে না বলেই বিপত্তি বাড়ছে। তাই গতি মাপতে ‘স্পিডগানে’র ব্যবহার বাড়ানোয় জোর দিয়েছে পুলিশ। বর্ধমান রোডের ঝংকার মোড় থেকে ফুলবাড়ি, ঘোষপুকুর বাইপাস, ফুলবাড়ি ক্যানাল রোড, শালুগাড়া থেকে দার্জিলিং মোড় হয়ে বিমানবন্দর, ইস্টার্ন বাইপাস, খাপরাইল ও শালবাড়ি, সুকনায় নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। তবে তাতে কাজের কাজ কতটা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েইছে।
৩১, ৩১-ডি এবং ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কে মধ্যে থাকা এলাকাগুলিতে ট্রাক, বাস, ছোট গাড়ির একাংশ বেপরোয়া ভাবে চলাচল করছে দেখা যায়। দুই লেন বা ফোর লেনে উঠলেই চালকদের একাংশ গাড়ির গতির স্পিডোমিটারে ৮০-১০০ ছুইঁছুই হয়ে যাচ্ছে। এটা ৪০ এর মধ্যে রাখার চেষ্টা হচ্ছে।
তা সত্ত্বেও এ দিনই বেলা বাড়তে হিলকার্ট রোডে এক বাইক আরোহীকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে একটি লোকাল বাস। মোটরবাইকটি বাসের সামনে অনেক ঢুকেও যায়। কোনওক্রমে চালক বাঁচেন। তেমনই, ফুলেশ্বরী থেকে এনজেপি যাওয়ার রাস্তায় রেলকর্মী একটি বাইক আরোহী পিছন থেকে ধাক্কা মারে একটি ছোট গাড়ি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাইক আরোহী নার্সিংহোমে ভর্তি। বাসিন্দারা গাড়িটি ভাঙচুর করে চালককে মারধর করেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় দেখা মেলে না পুলিশ কর্মীদের।
পুলিশ কমিশনার নীরজকুমার সিংহ জানান, বড় রাস্তায় কুয়াশা এবং ধোঁয়াশায় সমস্যা বাড়ছে। তবে মূল সমস্যা গাড়ির গতি। তা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাসিন্দাদেরও সচেতন হতে হবে।