অধ্যক্ষ নিগ্রহের তিন দিন পরেও অভিযুক্তদের কেন ধরা হল না, সেই প্রশ্ন উঠছে বালুরঘাট আইন কলেজের অন্দরে। কলেজের শিক্ষকদের অনেকেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কলেজ শিক্ষকদের তৃণমূল প্রভাবিত সংগঠনও বালুরঘাট আইন কলেজের ঘটনায় ক্ষুব্ধ। তাঁরাও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে কলেজ শিক্ষকদের আস্থা ফেরানোর দাবি জানিয়েছেন। প্রাক্তন বিধায়ক সত্যেন রায়ও ঘটনার নিন্দা করে নিগৃহীত অধ্যক্ষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সত্যেনবাবু বলেন, ‘‘যা হয়েছে তা নিন্দনীয়। পুলিশকে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে কলেজের শান্তিশৃঙ্খলার পরিবেশ বজায় রাখতে হবে।’’ জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এ দিন সন্ধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে নিগ্রহ, হুমকি, হেনস্থা, সরকারি কাজে বাধা দানের মতো একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
কলেজের শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, গত বছর ওই একই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দুর্জয় দেবকে ঘরবন্দি করে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ, হুমকির অভিযোগ থানায় করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও পুলিশ কাউকে ধরেনি। গত শুক্রবার ইস্তফা কাণ্ডের পর আতঙ্কে দুর্জয়বাবু বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। বাড়ি থেকে তাঁকে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তৃণমূল প্রভাবিত কলেজ শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি দেবজ্যোতি সরকার বলেন, ‘‘রাজ্য পর্যায়ে সব জানিয়েছি।’’
২০১১ সালে পরিবর্তনের সরকার ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের উদ্যোগে বালুরঘাটে আইন কলেজটি সরকারি অনুমোদন পায়। ২০১৪ সাল অবধি আইন কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি ছিলেন বিপ্লববাবু। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘কিছু মানুষ বিশৃঙ্খলা তৈরি করে বালুরঘাট থেকে আইন কলেজটি তুলে দেওয়ার চক্রান্ত করছেন। অথচ প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’’
দুর্জয়বাবুকে আটকে রেখে হুমকি ও ভয় দেখিয়ে জোর করে ইস্তফা লিখে নেওয়ার পরে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে কলেজ থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনায় শাশ্বত চাকির অনুগামী রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে মোট ৭ জনের বিরুদ্ধে বালুরঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। শাশ্বত বালুরঘাট টাউন তৃণমূল সভাপতি তথা ওই কলেজের প্রাক্তন পরিচালন সমিতির সদস্য সুভাষ চাকির ছেলে। সুভাষবাবু শঙ্কর চক্রবর্তী ঘনিষ্ঠ। বালুরঘাট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি)। তৃণমূল নেতা সুভাষবাবু বলেন, ‘‘কলেজের বিষয়ে দলে আলোচনা হলে কোনও অসুবিধা নেই। ঘটনার দিন পুলিশ হাজির ছিল। পুলিশের কাছ থেকেই জানা যাবে সেদিন গণ্ডগোলের সময় আমার ছেলে কলেজে উপস্থিত ছিল কি না। তা ছাড়া আমার ছেলের রেজাল্ট বের হয়নি। ফলে তার কলেজে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।’’ এ নিয়ে যে কোনও ধরনের তদন্তে তিনি রাজি বলে সুভাষবাবু দাবি করেন। তৃণমূল ছাত্রপরিষদের জেলা সভাপতি অতনু রায় বলেন, ‘‘অধ্যক্ষকে হেনস্থায় পুলিশের ব্যবস্থা নিতে কোথায় বাধা আমরা আঁচ করছি। রাজ্য নেতৃত্বকে সব জানানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy