ফাইল চিত্র
করোনা-কালে উন্নয়নের কাজ পিছিয়ে গিয়েছে অনেকটাই। তার উপরে স্বাস্থ্যকর্তাদের বিরোধ কয়েক দফায় প্রকাশ্যে এসেছে কোচবিহারে। পরিযায়ী শ্রমিকদের অনেকেই ফিরতে শুরু করেছেন ভিনরাজ্যে। তাদের কর্মসংস্থানের কী হল? তা নিয়েও উঠতে পারে প্রশ্ন। সব মিলিয়ে প্রায় সাত মাস পর মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে কার্যত ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছে প্রশাসন।
কোচবিহার রাজনৈতিক ভাবে শাসক দলের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ জেলা। সেই জেলার কাজে মুখ্যমন্ত্রী খুশি কি না, তা স্পষ্ট হবে ২৩ সেপ্টেম্বর। ওইদিন উত্তরকন্যায় দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের সঙ্গে কোচবিহারের প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়েও বৈঠকে বসার কথা তাঁর। যদিও এ নিয়ে বিশদে কেউ কিছু বলতে চাননি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চারদিনের সফরে উত্তরবঙ্গে আসছেন।” প্রশাসনের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, “করোনা কালে কোচবিহার খুব ভাল কাজ করেছে। তাই ভয়ের কোনও বিষয় নেই।” প্রশাসন সূত্রের খবর, এর আগে মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি ও পাহাড়ে এসেছিলেন গত জানুয়ারিতে, দু’দফায়। তখনও করোনা-পর্ব শুরু হয়নি দেশে বা রাজ্যে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়ি পৌঁছবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে দু’দিন উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করবেন তিনি। ২৩ সেপ্টেম্বর কোচবিহার নিয়ে বসবেন তিনি। এই তথ্য পেয়েই প্রশাসনিক স্তরে তৎপরতা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার তা নিয়ে বৈঠকও করেছেন প্রশাসনিক কর্তারা। এর আগে উত্তরকন্যার বৈঠকে একশো দিনের কাজ নিয়ে কোচবিহারের প্রশাসনিক কর্তাদের কার্যত ধমক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর থেকেই একশো দিনের কাজের অগ্রগতি শুরু হয়। বর্তমানে এই প্রকল্পের কাজে দেশে সেরার শিরোপা পেয়েছে কোচবিহার। তাই এখন সেই কাজের হাল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তো রিপোর্ট চাইবেন বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে।
তার বাইরে এ বারের পরিস্থিতিও অন্যরকম। লকডাউনে উন্নয়নের কাজ থমকে গিয়েছে। অর্থনৈতিক অবস্থাও তথৈবচ। কাজ হারিয়ে ভিনরাজ্য থেকে দেড় লক্ষাধিক মানুষ জেলায় ফিরেছেন। স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে জেলায় দিনকয়েক আগেই এক স্বাস্থ্যকর্তা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা পরিষেবা না পাওয়ার অভিযোগ তুলে বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি হন। কোভিড হাসপাতালেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও এক আধিকারিকের কথায়, “করোনা পরিস্থিতি কোচবিহার খুব ভাল মোকাবিলা করছে। প্রচুর পরীক্ষা যেমন হচ্ছে, তেমন ভাবে আক্রান্তের গ্রাফও কমানো সম্ভব হয়েছে।”
এই সমস্ত নানা বিষয় নিয়ে যে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চাইবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া, মুখ্যমন্ত্রী বরাবর কন্যাশ্রী, সবুজ সাথীর মতো প্রকল্পের হাল নিয়েও খোঁজ নেন। অভিযোগ, লকডাউনের পর থেকে কন্যাশ্রী প্রকল্প কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। এবারে আনাজের দাম আকাশছোঁয়া। আলুর দামও বাড়ছে। কেন এমন অবস্থা, তা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী রিপোর্ট চাইতে পারেন ধরেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy