জমি দখল কাণ্ডে মদতের অভিযোগে পানিট্যাঙ্কির চা বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়ে দিল জেলা প্রশাসন। সূত্রের খবর, চা বাগানের লিজ বাতিলের কথাই ভাবছে প্রশাসন। তার আগে আইনি সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নেপাল সীমান্তবর্তী সতীশচন্দ্র চা বাগানের জমি দখল করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল। মাস কয়েক ধরে চা বাগানের জমিতে বাঁশ-কংক্রিটের খুঁটি পুঁতে প্লট ভাগ করা হলেও চা বাগান কর্তৃপক্ষ কেন পদক্ষেপ করেননি, সে প্রশ্ন জানতে চায় জেলা প্রশাসন। সেই সঙ্গে আরও কয়েক দফা প্রশ্ন পাঠিয়ে জেলা ভূমি দফতর চা বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চায় যে, কেন তাদের লিজ বাতিল করা হবে না? ‘শো কজে’র উত্তর পাঠায় চা বাগান কর্তৃপক্ষ। রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘পানিট্যাঙ্কিতে জমি দখল নিয়ে অনিয়ম রুখতে প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপ করার আর্জি জানানো হয়েছিল। যাবতীয় আইন মেনেই প্রশাসন পদক্ষেপ শুরু করেছে।’’
সরকারের থেকে লিজে পাওয়া জমি যথাযথ ভাবে ধরে রাখতে তথা বেদখল হয়ে যাওয়া রুখতে যা করণীয় ছিল তা চা বাগান কর্তৃপক্ষ করেননি বলে মনে করছে প্রশাসন। ভূমি দফতর থেকে ইতিমধ্যে জেলাশাসকের দফতরে রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে। বিধি ভাঙায় চা বাগানের লিজ বাতিল করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
তবে পুরো চা বাগানের লিজ বাতিল হতে পারে নাকি বেদখল হয়ে যাওয়া জমির ক্ষেত্রেই পদক্ষেপ হবে তা এখনও স্থির হয়নি। প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘জেলাশাসক বাইরে রয়েছেন। তিনি ফেরার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’’ দার্জিলিং জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক সঞ্জীব চাকী বলেন, ‘‘চা বাগান কর্তৃপক্ষের উত্তর সন্তোষজনক নয়। এর থেকে বেশি কিছু এখন বলা সম্ভব নয়।’’
পানিট্যাঙ্কির চা বাগানের অন্তত ১৫ একর জমি প্রকাশ্যে প্লট তৈরি করে দখল করার অভিযোগ ওঠে। জমি দখলের সঙ্গে জড়িয়ে যায় এলাকার তৃণমূল নেতাদের নামও। শাসক দলের জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে প্রভাবশালী যুব নেতার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ ওঠে। এমনকী এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধানকেও জমি দখল নিয়ে মহকুমা শাসকের আদালতে হলফনামা দিতে হয়। জমি দখল নিয়ে প্রথমে দলগত ভাবে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় জেলা তৃণমূলের অন্দরেই আলোচনা শুরু হয়। শিলিগুড়িতে দলের জেলা কমিটির বৈঠকে নকশালবাড়ি নেতাদের একাংশ জমি দখল নিয়ে সরব হয়। ঘরে-বাইরে চাপে পড়ে জেলা কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় জমি দখলের প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু হবে। যে নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের কোনও রকম মদত করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নয়। শাসকদলের কড়া ভূমিকা দেখে তৎপরতা শুরু হয় প্রশাসনেরও।
শুধু তৃণমূল নেতারাই নন জমি দখলে জড়িয়ে যায় বামপন্থী নেতাদের নামও। জোনাল কমিটির সম্পাদক সহ একাধিক ছোট বড় নেতার নাম জড়িয়ে পড়ায় জেলা সিপিএমও দলীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তবে চা বাগান কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ দিনও সংবাদমাধ্যমে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। চা বাগান কর্তৃপক্ষকে ফোন করা হলে জবাব মেলেনি। এসএমএস পাঠালেও উত্তর আসেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy