এক নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে আটকে দু’পক্ষের পরিবারকে বুঝিয়ে শিক্ষার আঙ্গিনায় ফেরাল ব্লক প্রশাসন। সোমবার দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের চালুন অঞ্চলের কানাপুকুর এলাকার ঘটনা। ছাত্রীর বাবা মণীন্দ্র রায় তপন ব্লকের আজমতপুর এলাকার একটি ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করেন। দুঃস্থ পরিবারটির তিন ছেলেমেয়ে বালুরঘাটের বিভিন্ন সরকারি স্কুলের হস্টেলে থেকে নিখরচায় লেখাপড়া করে। দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে বড় মেয়েটি এ বছর মাধ্যমিকে ভাল ভাবে পাশ করে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছে।
ভূতকুঁড়ি এলাকার বাসিন্দা পেশায় ইটভাটার শ্রমিক এক যুবকের সঙ্গে মণীন্দ্রবাবু আগামী বৈশাখের ২০ তারিখে বড় মেয়ের বিয়ে পাকা করেছিলেন। কয়েকদিন আগে বালুরঘাটের একটি গার্লস স্কুলের ছাত্রী আবাস থেকে একাদশ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়েকে তার বাবা জোর করে বাড়িতে নিয়ে যান বলে অভিযোগ। ছাত্রীটি বিয়েতে আপত্তি জানিয়ে লেখাপড়া করবে বলে জানালেও অভিভাবকেরা কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ। গঙ্গারামপুরের বিডিও বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, স্কুল শিক্ষকদের কাছ থেকে ওই খবর পেয়ে ছাত্রীটির বাড়িতে গিয়ে পরিবারটির দৈন্য দশা দেখি। ভাঙাচোরা কুঁড়ে ঘরের বাসিন্দা তাঁরা।
অভাবের কারণেই মেয়ের বিয়ে দিতে চান বলে বিডিওকে জানান ছাত্রীর পরিবার। ব্লক প্রশাসন তাঁদের বোঝান, নাবালক মেয়ের বিয়ে দেওয়া অপরাধ। তারপরে ছাত্রীর পড়াশনাতে সমস্ত রকম সহায়তা ব্লক প্রশাসন থেকে করা হবে বলে বিডিও আশ্বাস দেন। পাশাপাশি ওই দুঃস্থ পরিবারের জন্য গীতাঞ্জলি প্রকল্পে বড়ি তৈরি করে দেওয়া থেকে ছাত্রীটির কন্যাশ্রী প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানোর পর ছাত্রীর বাবা মেয়ের বিয়ে দেবেন না বলে রাজি হন। বিডিও বলেন, এরপর পাত্রের বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি বোঝানোর পর তারাও বিয়ে থেকে সরে আসতে রাজি হয়। ওই ছাত্রীর বক্তব্য, ‘পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। প্রশাসন পাশে দাঁড়ানোয় এবং অভিভাবকেরা বিয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরায় ভরসা পাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy