বুধবার আস্থাভোটে শিলিগুড়ি লাগোয়া আঠারোখাই পঞ্চায়েতে ক্ষমতা দখল করল তৃণমূল। এই পঞ্চায়েত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সিপিএমের হাতেই ছিল। প্রশাসন সূত্রে খবর, ২৯ জন সদস্যের মধ্যে তৃণমূল শিবিরের ১৯ জন উপস্থিত ছিলেন। বিরোধী সদস্যরা কেউ সভায় আসেননি। তৃণমূল ২০ অগস্ট প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিল।
গোলমালের আশঙ্কায় বুধবার সকাল থেকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় লাগোয়া এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। কিন্তু তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা তা মানেননি বলেই অভিযোগ। ভোটের ফল ঘোষণা হতেই গোটা এলাকায় তৃণমূল কর্মীরা উৎসব শুরু করে দেন। সবুজ আবির মেখে ঢাকঢোলে নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন শাসক দলের নেতানেত্রীরা। দুপুরেই এলাকায় পৌঁছন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব, পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার, কৃষ্ণ পাল।
গৌতমবাবু বলেন, ‘‘দীর্ঘ ৪১ বছর আঠারোখাইকে বঞ্চিত করে রেখেছে সিপিএম। বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের টাকা পেলেও কাজ হয়নি।’’ তাঁর দাবি, এলাকার উন্নয়নের কথা ভেবে মানুষ তৃণমূলে সামিল হচ্ছেন।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩০ আসন বিশিষ্ঠ আঠারোখাই পঞ্চায়েতে ১৬টি আসনে জিতেছিল সিপিএম। প্রধান হন সিপিএমের অসিত কর নন্দি। তৃণমূল পেয়েছিল ৭টি, কংগ্রেস ৬টি এবং ১টি আসন জেতে বিজেপি। কিছুদিন আগে তৃণমূলের এক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। প্রথমে বিজেপি সদস্য পরে দফায় দফায় গত সপ্তাহ অবধি সিপিএমের ৯ জন শাসক দলে যোগ দেন। কংগ্রেসের তিনজনও নাম লিখেছিলেন তৃণমূলে। দলীয় সূত্রের খবর, গত কয়েকদিন ধরে মাটিগাড়া ব্লকের কার্যকরী সভাপতি দুর্লভ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ১৯ জনকে শহরের বাইরের এলাকায় নিয়ে রাখা হয়েছিল। এ দিনের সভায় সিপিএমের ৭ জন এবং কংগ্রেসের ৩ জন আসেননি।
মাটিগাড়ার বিডিও রুনু রায় বলেন, ‘’২৯ জন পঞ্চায়েত সদস্যের মধ্যে তলবি সভায় ১৯ জন উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সকলেই প্রধানের বিরুদ্ধে আনাস্থা এনেছেন। দ্রুত প্রধান গঠনের দিন ঘোষণা করা হবে।’’ পরে অসিতবাবু ফোনে বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনের সক্রিয় মদতে ভয় দেখিয়ে সদস্যেদের তৃণমূলে যোগদানে বাধ্য করা হয়েছে।’’ এলাকাটি মহকুমা পরিষদের সভাপতি তাপস সরাকারের নির্বাচনী ক্ষেত্র। তিনি বলেন, ‘‘সর্বত্র তৃণমূলের জবর দখলের রাজনীতি চলছে। আঠারোখাইতেও হল।’’