Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দলমত ভুলে রাসমেলার মিছিলে ডান-বামেরা

ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ বাসিন্দা, স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, ক্রীড়াবিদ, শিক্ষকদের অনেকেই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।

সূচনা: রাসচক্র ঘোরাচ্ছেন  জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র

সূচনা: রাসচক্র ঘোরাচ্ছেন  জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১১
Share: Save:

রাসমেলা উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রায় সামিল হলেন ডান-বাম দুই শিবিরের জনপ্রতিনিধিরাই। শুক্রবার, কোচবিহার পুরসভার উদ্যোগে ওই শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। তাতে রাজনৈতিক মতবিরোধ সরিয়ে রেখে একসঙ্গে হেঁটেছেন যুযুধান সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের অনেকেই।

ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ বাসিন্দা, স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, ক্রীড়াবিদ, শিক্ষকদের অনেকেই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। ওই প্রসঙ্গে সব শিবিবেরই প্রায় একসুরে বক্তব্য, রাসমেলার সঙ্গে কোচবিহারের রাজাদের ইতিহাস, বাসিন্দাদের আবেগ জড়িয়ে আছে। নির্দিষ্ট রাজনৈতিক গণ্ডির আওতায় ওই মেলা রাখা ঠিক নয়। এটা সর্বজনীন উৎসব। এ বার মেলার ২০৫ বর্ষ। ৩-১৯ নভেম্বর মেলা চলবে।

পুরসভার তৃণমূলের চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ বলেন, “রাসমেলার সকালে অভিনব কর্মসূচির আয়োজনের ভাবনা থেকেই এ দিন ওই শোভাযাত্রার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। দলমত নির্বিশেষে সবস্তরের বাসিন্দারা তাতে যোগ দেন। রাসমেলা সবার জন্য, শাসক-বিরোধী ব্যাপার নেই।” বিরোধী দলনেতা, সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা বলেন, “পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনার ভিত্তিতেই মেলা শুরুর দিন সকালে শোভাযাত্রা করা হবে বলে ঠিক হয়েছিল। তাই শোভাযাত্রাতেও ছিলাম।”

এ দিন রাজবাড়ি সংলগ্ন এলাকা থেকে ওই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়। ঢাকের বোলের ছন্দে শহরের মীনাকুমারী চৌপথি, বিশ্বসিংহ রোড, হরিশপাল চৌপথি হয়ে শোভাযাত্রা এগিয়ে চলে মদনমোহন মন্দির লাগোয়া রাস্তায়। বৈরাগী দিঘি পাড়ের ওই মন্দিরেই একসময় রাসচক্র ঘুরিয়ে উৎসবের সূচনা করতেন মহারাজা স্বয়ং। এখন সেই দায়িত্ব সামলাতে হয় দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি, তথা জেলাশাসককে। ওই পথেই রাসমেলা ময়দান লাগোয়া চত্বরে গিয়ে শোভাযাত্রা শেষ হয়। দীর্ঘ শোভাযাত্রার জেরে বিভিন্ন মোড়ে কিছুক্ষণ যানজটও হয়। পুলিশের এক কর্তার অবশ্য দাবি, শোভাযাত্রার রুটে অনুযায়ী নজরদারি-সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ছিল। তাই দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থাকা, চরম ভোগান্তি হয়নি। শোভাযাত্রায় সামিলদের রাস্তা পেরোতে যতটা সময় লেগেছে, ততটা সময় হাতেগোনা কিছু মোড়ে যাতায়াত স্তব্ধ হয়েছে মাত্র।

পুরসভার চেয়ারম্যান, বিরোধী দলনেতা ছাড়াও ওই শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়, পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ, সিপিএম কাউন্সিলর রঞ্জন ভট্টাচার্য, ফরওয়ার্ড ব্লক কাউন্সিলর চন্দনা মহন্ত, জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নারায়ণ মোদক প্রমুখ। বাম শিবিরের অবশ্য অভিযোগ, রাসমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে জেলার একমাত্র বিধায়কের নাম রাখা হয়নি। ওই ক্ষেত্রেও সৌজন্য বজায় রাখা উচিত ছিল। পুচেয়ারম্যানের বক্তব্য, ওই ত্রুটি মুদ্রণজনিত। ওই ব্যাপারে দুঃখপ্রকাশ করে বিধায়ককে আমন্ত্রণ পত্র তিনি নিজেই দিয়ে এসেছেন।

রাস উপলক্ষে রাজ্যের তো বটেই, দেশের নানা প্রান্ত থেকে বহু মানুষ এসেছেন এখন কোচবিহার শহরে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, প্রশাসনের উচিত, এত মানুষের জন্য পরিষেবার ব্যবস্থা করা। বিশেষ করে এখন ডেঙ্গির আক্রমণ বাড়ছে। তার ব্যবস্থা দরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

party members Ras Mela
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE