Advertisement
১৮ মে ২০২৪

অঙ্কিতের স্মরণে মিছিলে তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার ব্যানার

ক্রিকেট মাঠে ক্যাচ ধরতে গিয়ে সংঘর্ষে মৃত ক্রিকেটার অঙ্কিত কেশরীকে সামনে রেখে নিজের সমর্থনে মিছিল করিয়ে বিতর্কে জড়ালেন শিলিগুড়ি পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অরূপরতন ঘোষ মঙ্গলবার বিকেলে শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে ৬ নম্বর ওয়ার্ড ঘোরানো হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:০৪
Share: Save:

ক্রিকেট মাঠে ক্যাচ ধরতে গিয়ে সংঘর্ষে মৃত ক্রিকেটার অঙ্কিত কেশরীকে সামনে রেখে নিজের সমর্থনে মিছিল করিয়ে বিতর্কে জড়ালেন শিলিগুড়ি পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অরূপরতন ঘোষ মঙ্গলবার বিকেলে শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে ৬ নম্বর ওয়ার্ড ঘোরানো হয়। তাতে অংশ নেন ক্রীড়া পরিষদের ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল, অ্যাথলেটিক্সের খেলোয়াড়রা। অভিযোগ, মিছিলের সামনে ছিল, ‘অঙ্কিত কেশরীর অকাল প্রয়াণে আমরা শোকাহত’ লেখা ব্যানার। পিছনে ক্রীড়া পরিষদ সচিব অরূপরতন ঘোষকে জেতাতে ব্যানার। এভাবে মৃত ক্রিকেটারকে সমবেদনা জানানোর মিছিলে বোটের প্রচার অনৈতিক বলে দাবি করেন অরূপবাবুর প্রতিপক্ষ প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। যদিও তিনি মিছিলের ব্যপারে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন অরূপবাবু। তবে খেলোয়াড়দের অনেকেই তাঁদের জোর করেই মিছিলে হাঁটানো হয়েছে বলে দাবি করেন।

বিরোধীরা যদিও বলছেন, প্রতিপক্ষ হেভিওয়েট, রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। তাতে লড়াই কঠিন। লড়াই ফিরিয়ে দিতে অরূপবাবু চেষ্টার ত্রুটি রাখছেন না। তিনি আইএনটিটিইউসির দার্জিলিং জেলা সভাপতির পাশাপাশি শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিবও। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি সহানুভূতি আদায়ের জন্য খেলোয়াড়দের দিয়ে মিছিল করান বলে অভিযোগ করেন অশোকবাবু। তবে শোকের মিছিলকে কী ভাবে ভোটের প্রচারে লাগানো যায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের নীতিই হল কোনও নীতি না মানা। এভাবে শোক মিছিলে ভোটের প্রচার করা কোনও ভাবেই উচিত হয়নি ক্রীড়া পরিষদের। তা ছাড়া ক্রীড়া পরিষদের কর্তাদের মিছিলে থাকাটাও অনুচিত।’’

যদিও তিনি মিছিলের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেন অরূপরতনবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমি মিছিলের কথা জানতাম না। পরে জেনেছি। যারা আমাকে ভালবেসে আমাকে সমর্থন করেছে তাঁদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’ তিনি জানতেন না বলে এড়িয়ে গেলেও ছাড়ছেন না বিরোধীরা। বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি রথীন বসু অভিযোগ করেন, ‘‘ক্রীড়া পরিচালন সংস্থার নিরপেক্ষ সংগঠন। সেখানে সরাসরি রাজনীতি ঢোকানোর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তারপরে কারও মারা যাওয়া নিয়ে রাজনীতি করাকে সমর্থন করি না।’’ জেলা কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সরকারও এই ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘কোনও খেলোয়াড় কাউকে সমর্থন করে মিছিলে হাঁটতেই পারেন। কিন্তু কোনও খেলোয়াড়ের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজনীতি ভাবাই যায় না।’’

যদিও ক্রীড়া পরিষদের পক্ষ থেকে কোনও মিছিল করা হয়নি বলে দাবি করা হয়। যদিও সেখানে উপস্থিত ক্রীড়া পরিষদের অনেক পদাধিকারীরাই ছিলেন। ক্রীড়া পরিষদের সহ সভাপতি মদন ভট্টাচার্য, সংগ্রাম সিংহ মিত্র, মানস দে সহ ক্রীড়া পরিষদের পদাধিকারীরা মিছিলে ছিলেন। তাঁদের অনুরোধেরই মিছিলে অংশ নিতে হয় বলে খেলোয়াড়দের অনেকেই জানিয়েছেন। এমনকী মিছিল শুরু হওয়ার নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে তা শুরু হয় বলেও অনেকেই জানান। যদিও মদনবাবু অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে অরাপবাবুর জয় চাইছি। তাই মিছিল হয়েছে। ক্রীড়া পরিষদ নয় ক্রীড়াপ্রেমী মানুষের মিছিল ছিল। আমরা অঙ্কিত কেশরীর মৃত্যুতেও শোকবার্তা দিয়েছি। এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE