Advertisement
E-Paper

কোথাও টাকা নেই, কোথাও যন্ত্র খারাপ

কয়েকটি এলাকায় তো এটিএম ‘আউট অব অর্ডার’ বলে নোটিস টাঙানো রয়েছে। শহরের এটিএমে তাও টাকা মিলছে।

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩২
বেহাল: খোলা এটিএম। কিন্তু টাকা নেই। নিজস্ব চিত্র

বেহাল: খোলা এটিএম। কিন্তু টাকা নেই। নিজস্ব চিত্র

আচমকাই এটিএমে নগদের টান পড়েছে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায়। হাতে গোনা কয়েকটি এটিএমে টাকা মিলছে। কোথাও আবার দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে এটিএমে পৌঁছে দেখা যাচ্ছে টাকা ফুরিয়ে গিয়েছে। কয়েকটি এলাকায় তো এটিএম ‘আউট অব অর্ডার’ বলে নোটিস টাঙানো রয়েছে। শহরের এটিএমে তাও টাকা মিলছে। গ্রামের অনেক এটিএমেই নগদ বাড়ন্ত। উত্তরবঙ্গের পাহাড়-সমতলের এটিএমের হালের ছবিটা তুলে ধরল আনন্দবাজার:

কোচবিহার

শহর ও লাগোয়া এলাকা মিলিয়ে অন্তত ৫০টি এটিএম রয়েছে। মেশিন সচল থাকলেও অনেকগুলিতেই টাকা মিলছে না। সাগরদিঘি পাড়ে ব্যাঙ্কের এটিএমের সামনে এ দিনই বিরাট লাইন ছিল। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “কেন্দ্র সরকারের নোটবন্দির সময় থেকেই মানুষের ভোগান্তির শুরু হয়। এতদিনেও অবস্থা বদলায়নি। গ্রামাঞ্চলের অবস্থা আরও খারাপ।” কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ বলেন, “টাকাই তো ঠিকঠাক মেলে না। এটিএমে গ্রাহক ভোগান্তি মেটেনি। কেন্দ্রের উদাসীনতার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে মানুষের ভোগান্তি চলছে।” কোচবিহার ডিসট্রিক্ট চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সম্পাদক রাজেন বৈদ জানান, প্রতিদিনই ব্যবসায়ীদের থেকে অভিযোগ পাই। তুফানগঞ্জ মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক জগবন্ধু সাহা বলেন, “এটিএমে পরিষেবা তলানিতে ঠেকেছে।”কোচবিহারের লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সঞ্জয় কুমারের বক্তব্য জানা যায়নি। মোবাইল বেজে গিয়েছে।

দার্জিলিং

জেলা সদরের পোস্ট অফিস লাগোয়া এলাকায় এটিএমে সকাল থেকেই ভিড়। বেলা বাড়লে লাইনও বেড়েছে। রামবাহাদুর থাপা, বিষাণ লামা, দুর্গা শর্মার মতো অনেকেই জানান, টাকা পেতে অনেক সময়ই লাইন দিতে হচ্ছে। দুর্গা বলেন, ‘‘মাঝে মধ্যেই টাকা ফুরিয়ে যাওয়ায় এক এটিএম থেকে আর এক জায়গায় ছুটতে হচ্ছে।’’

আলিপুরদুয়ার

আলিপুরদুয়ার জেলা সদরে এটিএম ১৫টি। গোটা জেলায় ৯৯টি। ফি মাসের প্রথম দিকে শহরের এটিএমে টাকা থাকলেও গ্রামে ফুরিয়ে যায় দু’দিনেই। এবারও তেমনই হয়েছে বলে গ্রাহকদের অভিযোগ। পেনশন প্রাপকদের সমস্যা বেশি আলিপুরদুয়ারে। জেলা লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার তুষারকান্তি রায় জানান, মাসের প্রথমে সবাই টাকা তুললে টাকা শেষ হতে পারে। তবে তা ভরে দেওয়া হয়। এ নিয়ে কোনও অভিযোগ পাননি বলে দাবি করেছেন।

ইসলামপুর

উত্তর দিনাজপুরের ব্যস্ততম মহকুমা সদর ইসলামপুরে এটিএমে-এ ঢোকার আগে গ্রাহকদের প্রায় ‘টস’ করে ঢুকতে হয়। কারণ, কখন কোন এটিএমে টাকা থাকবে তার নিশ্চয়তা নেই। কোথাও ‘লিঙ্ক ফেল’ নোটিস দেওয়া থাকে। কোথাও টাকা নেই। ইসলামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল অগ্রবাল জানান, নগদের টানের জন্য কেন্দ্রই দায়ী। গ্রাহকদের ভোগান্তি দূর না হলে তাঁরা আন্দোলনে নামবেন বলে জানিয়েছেন।

বালুরঘাট

মঙ্গলবার শহরের মোক্তারপাড়া এলাকা থেকে সাড়ে তিন নম্বর মোড় পর্যন্ত প্রায় ১০০ মিটার এলাকার মধ্যে তিনটি এটিএম। তার দু’টি মাঝে মধ্যেই অকেজো হয়ে থাকে। যেটি ঠিক থাকে, সেখানে কিছু ক্ষণের মধ্যে টাকা ফুরিয়ে যায়। বালুরঘাট শহর জুড়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের একাধিক এটিএম কাউন্টার থেকে সুষ্ঠু পরিষেবা না মেলায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন নাগরিকরা। তপন থানার লস্করহাট মোড়েও একই ভোগান্তি। এলাকার মানুষের অভিযোগ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে নালিশ জানিয়েও কোনও কাজ হচ্ছে না। বালুরঘাটে সচল এটিএমগুলোতে লম্বা লাইন চোখে পড়ছে। কিন্তু দু’শো টাকা নোটের পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই বলে গ্রাহকদের অভিযোগ।

রায়গঞ্জ

রবিবার থেকে শহরের বেশিরভাগ এটিএম মেশিনে টাকা মিলছে না বলে অভিযোগ। কোনও এটিএম মেশিনের সামনে নো-ক্যাশ বোর্ড লাগানো রয়েছে। কোনও এটিএম মেশিনের ঘরের সাটার অর্ধেক বন্ধ। কিছু এটিএম চালু থাকলেও কিছ ক্ষণের মধ্যেই টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার শহরের মোহনবাটী, সুপারমার্কেট, মহাত্মা গাঁধী রোড, শিলিগুড়িমোড়, কলেজপাড়া ও দেবীনগর এলাকার একাধিক এটিমে টাকা ছিল না বলে অভিযোগ। শহরের তুলসীতলা এলাকার বাসিন্দা পেশায় প্রাথমিক স্কুলশিক্ষক দীপঙ্কর চাকি এ দিন দুপুরে শহরের একাধিক এটিএম ঘুরে শেষ পর্যন্ত শিলিগুড়িমোড় এলাকার একটি এটিএম-এ দীর্ঘ ক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা তুলতে সক্ষম হন।

শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি

এই দুই শহরে তুলনায় এটিএম-এ নগদের পরিমাণ পর্যাপ্তই ছিল। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি শহরতলির কয়েকটি এটিএমে টাকা ফুরিয়ে যায় বিকেলের দিকে। পরে রাতে তা ভরা হয়। জলপাইগুড়িতে শহরের মধ্যে এটিএম-এ তেমন সমস্যা হয়নি। কিন্তু, শহরের উপকণ্ঠে কয়েকটি এটিএমে নগদ ফুরিয়ে যাওয়ায় বাসিন্দারা সমস্যা পড়েন।

ATM Money crisis
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy