Advertisement
০৫ মে ২০২৪
ভোটের মুখে বাবুলেও মাতল শিলিগুড়ি

বিমান বন্দর থেকে সোজা চায়ের আসরে বাবুল

তিনি দলের কিছু নেতার কাছে শুনেছিলেন, শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিধানমার্কেট এলাকায় বহুদিনের পুরানো একটি কাঠের দোতলা চায়ের দোকান রয়েছে। দোকান থেকে বেশি আড্ডা বলাই ভাল। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে চা-কফি, টোস্ট, ডিমের ওমলেট নিয়ে মেতে থাকেন বাসিন্দারা। রাজনীতি থেকে খেলা, সংস্কৃতি-চায়ের আড্ডায় কেউ কোনও কিছুই বাদ রাখেন না। তরণী, মহিলাদের ভিড়ও থাকে চোখে পড়ার মত। অনেকটাই যেন শিলিগুড়ির কফি হাউস। তাই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে সোজা পাড়ায় পাড়ায় না ঢুকে চলে গেলে সেই চায়ের আসরেই।

শিলিগুড়িতে ভোটের প্রচারে বাবুল সুপ্রিয়।

শিলিগুড়িতে ভোটের প্রচারে বাবুল সুপ্রিয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:১১
Share: Save:

তিনি দলের কিছু নেতার কাছে শুনেছিলেন, শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিধানমার্কেট এলাকায় বহুদিনের পুরানো একটি কাঠের দোতলা চায়ের দোকান রয়েছে। দোকান থেকে বেশি আড্ডা বলাই ভাল।

ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে চা-কফি, টোস্ট, ডিমের ওমলেট নিয়ে মেতে থাকেন বাসিন্দারা। রাজনীতি থেকে খেলা, সংস্কৃতি-চায়ের আড্ডায় কেউ কোনও কিছুই বাদ রাখেন না। তরণী, মহিলাদের ভিড়ও থাকে চোখে পড়ার মত। অনেকটাই যেন শিলিগুড়ির কফি হাউস। তাই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে সোজা পাড়ায় পাড়ায় না ঢুকে চলে গেলে সেই চায়ের আসরেই।

ভিড়ে জমজমাট বাজারে কেন্দ্রীয মন্ত্রীর গাড়িতে একটু যানজট হল বটেই, কিন্তু সেল্ফি থেকে দুই কলি জনপ্রিয় গানের দুই কলি আর সঙ্গে লাল চা, বাসিন্দাদের আবদারে কোনও কিছুই বাদ রাখলেন না বাবুল।

কথা বললেন, হাত মেলালেন সব কিছুই করলেন। শেষে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে গাড়িতে ওঠার আগে বলে গেলেন, ‘‘ভোটটা কিন্তু এবার বিজেপি’কে।’’ আর তা দেখে মাথাও নাড়াতে দেখা গেল বাবলু সাহা, বিনয় মুন্সি, ভগত প্রসাদ বা রোজি তামাঙ্গদের।

আগামী ২৫ এপ্রিল, পুরভোট। ভোটবাক্সে বাবুলের কাছে রাখা বাসিন্দাদের মাথা নেড়ে সম্মতি কতটা কার্যকরী হবে তা সময়ই বলবে। কিন্তু দিনভর গায়ক-রাজনীতিবিদ বাবুলকে নিয়ে শহর শিলিগুড়ির উন্মাদনা, ভোটের বাজারে বিজেপিকে প্রচারে কিছুটা সাহায্য যে করলই, তা বিজেপি বিরোধী শিবিরগুলিও মনে করছে। বাবুল এদিন রাতেই দার্জিলিং মেলে বাবুল কলকাতার উদ্দ্যেশে রওনা হয়ে যান।

রাতের দিকে বহু বিজেপি নেতাকেই বলতে শোনা গিয়েছে, উনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সাংসদ। খুব ব্যস্ত। তাও যদি আর একটা দিন পাওয়া যেত। একইভাবে জেলা বিজেপির সভাপতি রথীন বসু বলেছেন, ‘‘বাবুল আসবে একেবারে ঠিক ছিল। আসানসোলের সাংসদ যদি আরও একটা দিন প্রচার করতে পারতেন তাহলে তো কথাই ছিল না।’’ এপ্রিলের গরমে ফিনফিনে সাদা লম্বা কুর্তা, ডেনিম জিন্স এবং বাঁ হাতের কব্জিতে কমলা স্ট্রাপের ঘড়ি। হাতে বড় মোবাইল। বিমাবন্দরে নেমেই আবদারের শুরু ছবি তোলার, অনেকেকেই নিরাশ করেননি। তার পরে সাদা লম্বা গাড়িতে বিধানমার্কেট। ঘন্টাখানেক কাটিয়ে সোজা হুডখোলা গাড়িতে ইস্টার্ন বাইপাস লাগোয়া ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে।

প্রথম প্রচার। বাবুল সুপ্রিয় আসছেন শুনে, বিজেপির পার্টি অফিসের সামনে দলীয় নেতা কর্মীদের ভিড় তো ছিল, ৪টার মধ্যেই উপচে পড়ে বাসিন্দাদের ভিড়। কিছুক্ষণ এলাকার রোডশো করে গাড়ি ঢোকে ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে। এলাকাগুলি বিজেপির ‘শক্তিঘাঁটি’ বলেই পরিচিত। ঘোঘোমালি
মেইন রোড ধরে রবীন্দ্রনগর মোড়ের দিকে যতই গাড়ি এগিয়েছিল, রাস্তার দুই ধার থেকে আওয়াজ উঠেছে বাবুল, বাবুল। হাত নেড়ে, নমস্কার করে, অটোগ্রাফ অকাতরে বিলিয়েছেন বিজেপির সাংসদ। ঘোঘোমালি বাজারের আগে অভিনেতা তথা তৃণমূল সাংসদ দেবের অপেক্ষার বিকাল থেকেই দাঁড়িয়েছিলেন মনা সেন, বিউটি
সাহা বা স্কুল ছাত্রী মোনালিসা রায়ের মত মহিলা, মেয়েরা। অনেকের গলায় আবার তৃণমূলের ব্যাজও দেখা গিয়েছে। তাঁদের অনেকে আবার এগিয়ে গিয়ে হাতও
নেড়েছেন বাবুলকে। পাল্টা বিজেপিকে ভোট দেওয়ার কথাও বলে গিয়েছেন বাবলু।

এর পরে একে একে ১০, ১৪, ১৫, ১৯ এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বাবলু যান। কোথাও রাস্তার ধারে ছোট সভায় বক্তব্য রাখেন। আবার কোথাও হুডখোলা গাড়ি এগিয়েছে। বাবুল বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি পুরসভায় মানুষ শান্তিতে, গণতান্ত্রিকভাবে ভোট দিতে পারলে, বিজেপি ভাল ফল করবেই। আর কেন্দ্র রাজ্যের মাধ্যমেই তো স্থানীয়স্তরে
উন্নয়ন করতে হবে। বিজেপি এ ব্যাপারে বদ্ধপরিকর।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE