Advertisement
১১ মে ২০২৪

শিক্ষকের সংগ্রহে হারিয়ে যাওয়া বৈদ্যুতিন সামগ্রীও

তাঁর বাড়ির নীচের তলার ছোট্ট ঘরটি অঙ্কের গ্রন্থাগারের পাশাপাশি সেজে উঠেছে পুরনো বৈদ্যুতিন বিভিন্ন যন্ত্রে

ভালবাসা: মিহিরবাবুর সংগ্রহশালা। ছবি: অমিত মোহান্ত

ভালবাসা: মিহিরবাবুর সংগ্রহশালা। ছবি: অমিত মোহান্ত

অনুপরতন মোহান্ত
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৯ ০৫:০২
Share: Save:

গণিত নিয়েই সারা বছর ধরে তার চর্চা। রাজ্যের যেখানেই বইমেলা হোক না কেন, নিজের লেখা অঙ্কের বইয়ের সম্ভার নিয়ে স্টল দেওয়া চাই-ই। অঙ্কেও যে জাদু রয়েছে, তা যে একেবারেই ভয় পাওয়ার বিষয় নয়, তা-ও তিনি ব্যাখ্যা করেন পড়ুয়াদের কাছে। সকলকে অঙ্কে আকৃষ্ট করে তোলার চেষ্টা করেন। বালুরঘাটের অভিযাত্রীপাড়ার বাসিন্দা অঙ্কের-জাদু নামে পরিচিত মিহির সমাজদার এ বার পুরনো বৈদ্যুতিন সামগ্রী জড়ো করে গড়ে তুলেছেন সংগ্রহশালা। প্রাচীন রেডিও, ট্রানজিস্টার, টেপ রেকর্ডার, ক্যাসেট প্লেয়ার, সিডি, ডিভিডি থেকে ছোট-বড় ওয়াকম্যান, ক্যামেরা ও ঘড়ির সংগ্রহশালা গড়ে নজর কেড়েছেন।

তাঁর বাড়ির নীচের তলার ছোট্ট ঘরটি অঙ্কের গ্রন্থাগারের পাশাপাশি সেজে উঠেছে পুরনো বৈদ্যুতিন বিভিন্ন যন্ত্রে। তাঁর বক্তব্য, মোবাইলের দুরন্ত গতির যুগে প্রায় হারিয়ে গিয়েছে রেডিও, ক্যাসেট-ভিডিও-ডিভিডি। গান ও ছবি দেখতে একদা ওই যন্ত্রগুলির কদরের বিষয়ও জানা নেই নতুন প্রজন্মের অনেক ছেলেমেয়ের। এখন স্মার্টফোনেই বন্দি গোটা বিশ্ব ও তার সুলুক সন্ধান। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মিহিরবাবুর কথায়, ‘‘এর পরে এগুলি অ্যান্টিক বলে চিহ্নিত হবে।’’ জানালেন, অঙ্কের মতো বৈদ্যুতিন সামগ্রী সংগ্রহ তাঁর নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মিহিরবাবুর গ্রন্থাগারে ১৯৩৮ সালের আলিগড়ের অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজের ষষ্ঠশ্রেণির পাটিগণিত সমাধান, দেবপ্রসাদ ঘোষের লেখা অঙ্ক বই রয়েছে। পাশাপাশি, ১৯৫৪ সালের নলিনীকান্ত চক্রবর্তী লিখিত মাধ্যমিক গণিতের মতো পুরনো আমলের শতাধিক অঙ্কের বইও যত্নে সাজানো আছে। তার এক ধারে থরে থরে সাজানো ব্রিটিশ থেকে পুরনো আমলের বিভিন্ন কোম্পানির নানা ধরনের ঘড়ি। রয়েছে নানা ধরনের ট্রানজিস্টর, টেপ রেকর্ডার থেকে পিন রেকর্ড কাম অ্যাম্পলিফায়ার। একই সঙ্গে ওই রেকর্ড যন্ত্রে রয়েছে ক্যাসেট প্লেয়ারও। সেটি জাপানের সার্ক কোম্পানির ক্রাউন প্লেয়ার বলে জানালেন মিহিরবাবু। তার সংগ্রহে রয়েছে এমন ৬০টির বেশি বৈদ্যুতিন যন্ত্র। যার সমস্তই সচল।

গ্রন্থাগারে বসে জাপানের ওই ক্রাউন প্লেয়ারের ঢাউস রেকর্ডে পিন পড়তেই চোঙা মাইকে বেজে উঠল দ্বিজেন্দ্রলালের গান। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা স্ত্রী মাধবীদেবী বললেন, ‘‘বইমেলার রোজগারের টাকাতেই পুরনো যন্ত্রপাতি কেনেন। কলকাতা থেকে মেদিনীপুর, কোচবিহার থেকে বর্ধমান, সর্বত্রই তাঁর বইমেলার স্টল খুবই জনপ্রিয়। জানা গেল, পুরনো ট্রানজিস্টার, ঘড়ি, ক্যামেরা বা রেডিও— যা দেখেন, কিনে ফেলেন অঙ্ক-পাগল মাস্টারমশাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Balurghat Museum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE