ফাইল চিত্র।
কামাখ্যাগুড়ি বাজারে এক ক্রেতা আনাজ কেনার পর খুচরো দিতে চাইলেন। বিক্রেতা খুচরো নিতে রাজি নন। এই নিয়ে তুমুল ঝগড়া। প্রায় হাতাহাতি বেধে যাওয়ার উপক্রম।
শামুকতলা বাজারে এক মুদির দোকানের দোকানদারের থেকে ছশো টাকার চাল-ডাল-তেল নিলেন এক ক্রেতা। পুরোটাই খুচরো পয়সায় দিতে চাইলেন তিনি। দোকানদার জানালেন, ‘‘একে খুচরো গোনার সময় নেই। তার উপরে প্রচুর খুচরো জমা হয়ে আছে। সেগুলোর ব্যবস্থা না হলে খুচরো নিয়ে কী করব?’’ এ কথা বলতেই ওই ক্রেতা ঝগড়া শুরু করলেন দোকানদারের সঙ্গে।
শুধু কামাখ্যাগুড়ি বা শামুকতলা নয়, এ ছবি এখন ডুয়ার্সের প্রতিটি বাজারেই। খুচরো নেওয়া নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে সামান্য ঝগড়া বাধছে না এমন দিন কাটছে না। তাই অতিরিক্ত খুচরো পয়সার সমস্যায় রীতিমত দুর্ভোগে শামুকতলা, কুমারগ্রাম, কামাখ্যাগুড়ি ও বারবিশা এলাকার ব্যবসায়ীরা। খুচরোর পাহাড় জমছে।
কিন্তু সেই খুচরো না নিচ্ছে ব্যাঙ্ক, না দিতে পারছেন কোনও মহাজন বা পাইকারকে। এর ফলে খুচরো ব্যবসায়ী, হকারদের ব্যবসা করতে গিয়ে প্রচণ্ড সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, খুচরোর জন্য তাঁদের ব্যবসা বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়েছে।
শামুকতলার সব্জি ব্যবসায়ী সুজিত গোস্বামী জানালেন, ‘‘প্রতিদিনই খুচরো নিয়ে ঝগড়াঝাটি চলছেই।’’
খবরের কাগজ কিনতে খুচরো পয়সাই লাগে। তাই এই সমস্যায় রীতিমত নাজেহাল হতে হচ্ছে খবর কাগজ বিক্রেতাদের। কামাখ্যাগুড়ি এলাকার কাগজ বিক্রেতা বিজন কর্মকার জানালেন, ‘‘কাগজের দাম চার টাকা। কাগজ নিয়ে কেউ চার টাকা খুচরো দিলে তো আমরা খুচরো নেব না বলতে পারছি না। এ ভাবে প্রতিদিন প্রচুর খুচরো জমছে। কিন্তু সেই খুচরো কাগজের এজেন্টকে দিতে গেলে তিনি বলছেন ব্যাঙ্ক এবং কাগজ কোম্পানি খুচরো নিচ্ছে না। তাই খুচরো দেওয়া যাবে না।’’ এ ভাবে রোজ সমস্যা হচ্ছে সব ব্যবসায়ীদেরই। আরেক কাগজ বিক্রেতা রতন সরকারের কথায়, ‘‘আমরা কাগজ বিক্রি করে খাই। পুঁজিও নেই। এজেন্টকে কাগজের দাম মেটাতে গিয়ে প্রচণ্ড সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ ভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে দিনমজুরির পথেই যেতে হবে।’’
কুমারগ্রাম ব্লকের খবরের কাগজের এজেন্ট গৌর সাহা জানান, ‘‘কামাখ্যাগুড়িতে কোনও ব্যাঙ্ক খুচরো নিচ্ছে না। প্রচুর খুচরো জমে থাকলেও সেগুলি কোনও কাজে লাগছে না। তাই হকারদের থেকে আর খুচরো নিতে পারছি না। খুচরোর সমস্যা না মিটলে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে।’’
কামাখ্যাগুড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বাদল সাহা বলেন, ‘‘খুচরো পয়সা জমা নেওয়ার জন্য ব্যাঙ্কগুলিকে বলেছি। দু-একটি ব্যাঙ্ক অল্প কিছু খুচরো জমা নিলেও সেটা দিয়ে সমস্যা মিটছে না। পর্যাপ্ত পরিমাণে খুচরো জমার ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে ব্যবসায়ীরা আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy