শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টে। ইংরেজবাজার ব্লকের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মহদিপুর পঞ্চায়েতের পিয়াসবাড়িতে হাজির কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। ওই এলাকা থেকে রামকেলি, বারোদুয়ারি হয়ে মহদিপুরের মতো প্রায় চার কিলোমিটার পায়ে হেঁটে মালদহের ডিএসপি বিপুল মজুমদারের নেতৃত্বে রুটমার্চ করলেন জওয়ানেরা।
পুলিশ জানিয়েছে, নির্বাচনের দেড় মাস আগেই জেলার হাজির হয়েছে এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ওই কোম্পানিতে ১১৪ জন জওয়ান রয়েছেন। ইংরেজবাজার শহরের রেলওয়ে ইনস্টিটিউটে থাকবেন জওয়ানেরা। তার জন্য অস্থায়ী জলাধার তৈরি করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী রান্নাঘরও। এ দিনই সকালে রেলওয়ে ইনস্টিটিউটে হাজির হন জওয়ানেরা। ইনস্টিটিউটে অস্থায়ী ক্যাম্প গড়ে তোলা হয়।
তার পরেই এ দিন ডিএসপি বিপুল মজুদার, ইংরেজবাজার থানার আইসি শান্তনু মৈত্রের নেতৃত্বে মহদিপুর জুড়ে চলে টহলদারি। ওই এলাকার একাধিক বুথ পরিদর্শনও করা হয়। মহদিপুরে পুকুর দখলকে কেন্দ্র করে দু’গোষ্ঠীর মধ্যে লাগাতার বোমাবাজি চলছে। উত্তপ্ত পুরো গ্রাম। এ দিন ওই এলাকাতেও টহলদারি চালানো হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’দিন আগেই কালিয়াচকের চোরি অনন্তপুরের কামাত গ্রাম থেকে বিপুল পরিমাণে কার্তুজ, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় এক জন গ্রেফতারও হয়েছে। তাই সীমান্তবর্তী থানা কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগর, হবিবপুর, পুরাতন মালদহ, বামনগোলা রুটমার্চ চলবে। কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগরে বাড়তি টহলদারি চলবে। মালদহের জেলা পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “লাগাতার রুটমার্চ ও নাকা চেকিং করা শুরু হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই থানায় সবচেয়ে বেশি স্পর্শকাতর বুথ রয়েছে। ফলে এ দিন থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী টহলদারি শুরু করায় জেলায় ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ে গেল বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের। এক কোম্পানির কেন্দ্রীয় বাহিনী জেলায় আসায় স্বস্তি বিরোধী শিবিরে। তবে আরও বাড়তি কোম্পানির দাবি তুলেছেন তাঁরা।
বিজেপির জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী আসায় জেলায় মানুষ স্বস্তি পেয়েছেন। কারণ পঞ্চায়েত ভোট লুঠ হয়েছিল। এ বারে তা আর হবে না।”
মালদহ জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মোস্তাক আলম বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী জেলায় এলেই হবে না, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ব্যবহার করতে হবে। বুথে বুথে ঘুরতে দিতে হবে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “বিরোধীদের জেলায় সংগঠন নেই। কেন্দ্রীয় বাহিনীর অপেক্ষায় বসে না থেকে বুথে গিয়ে সংগঠক তৈরিতে জোর দিক বিরোধীরা।”