কালিয়াচক ২ ব্লকের বাঙিটোলা গ্রামীণ হাসপাতালের ওটিতে এক মহিলার গর্ভপাতের ভিডিও রেকর্ডিং করার অভিযোগ উঠেছে ওই হাসপাতালেরই এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
ওই মহিলার স্বামী এ ব্যাপারে জেলার মুখ্য ও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ, সেই ছবি সোস্যাল মিডিয়াতেও ছড়ানো হয়েছে। এ দিকে হাসপাতালের ওটি ব্যবহার করে টাকার বিনিময়ে গর্ভপাত করানোর অভিযোগ উঠেছে ওই ব্লক হাসপাতালের বিএমওএইচেরও বিরুদ্ধেও। দু’জন চিকিৎসকই তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তবে এলাকার বাসিন্দারাই এ ব্যাপারে জেলাশাসক থেকে শুরু করে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ পেয়ে দুটি ঘটনারই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। পাশাপাশি, গর্ভপাতের ভিডিও রেকর্ডিং করার অভিযোগ ওঠায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে বদলিও করা হয়েছে। তাঁকে কালিয়াচক ৩ ব্লকের বেদরাবাদ গ্রামীণ হাসপাতালে বদলি করা হয়। জানা গিয়েছে, শুক্রবার সেই বদলির নির্দেশ ব্লকে পৌঁছে গিয়েছে। মালদহ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ মণ্ডল বলেন, দু’টি অভিযোগই গুরুতর। জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ ৩ কেই দুটি অভিযোগের তদন্ত করতে বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৬ ডিসেম্বর বাঙিটোলা গ্রামীণ হাসপাতালে অনকল ডিউটি ছিল চিকিৎসক বিশ্বেশ্বর সাহার। সে দিন বিএমওএইচ কৌশিক মিস্ত্রি হাসপাতালেরই ওটি ব্যবহার করে এক মহিলার গর্ভপাত করেন। বাঙিটোলা এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিএমওএইচ টাকার বিনিময়ে গর্ভপাতের মতো ‘অপরাধমূলক’ কাজ করে চলেছেন। যে মহিলার সেদিন গর্ভপাত করানো হয়েছিল, তাঁর বাড়ি মালদহের মানিকচকে। তাঁদের প্রশ্ন, মানিকচকে গ্রামীণ হাসপাতাল থাকতেও ওই মহিলা কেন এই হাসপাতালে গর্ভপাত করলেন। তাদের আরও অভিযোগ, ওই গর্ভপাত করানো নিয়ে বিশ্বেশ্বরবাবু ও কৌশিকবাবুর মধ্যে সেদিন বচসাও হয়েছে। কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘গর্ভপাত করার জন্য প্রয়োজনীয় কম্প্রিহেনসিভ অ্যাবোরশন কেয়ার ট্রেনিং আমার রয়েছে। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই আমি সেই মহিলার গর্ভপাত করেছি। এখানে টাকার কোনও ব্যাপার নেই। আমার বদনাম করার জন্য এসব করা হয়েছে।’’
এদিকে গত ১৬ তারিখ যে মহিলার গর্ভপাত ওটিতে করা হয়েছে, সেই গর্ভপাতের ভিডিও রেকর্ডিং করার অভিযোগ উঠেছে সেদিন হাসপাতালে অনকলে থাকা চিকিৎসক বিশ্বেশ্বর সাহার বিরুদ্ধে। ওই মহিলার স্বামী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও বিএমওএইচের কাছে অভিযোগ করেন, ওই চিকিৎসক সেই ছবি তুলে স্ত্রীর সম্মানহানি করেছেন। আরও অভিযোগ, ওই ছবি সোস্যাল মিডিয়াতেও ছড়ানো হয়েছে।
বিশ্বেশ্বরবাবু বলেন, ‘‘আমি কোনও ভিডিও রেকর্ডিং করিনি বা সোস্যাল মিডিয়াতে ছড়ানোরও ব্যাপার নেই।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিএমওএইচ দীর্ঘ দিন ধরে টাকার বিনিময়ে হাসপাতালের ওটি ব্যবহার করে বেআইনি গর্ভপাত করে চলেছেন। আমি তার প্রতিবাদ করেছি। সেদিনও প্রতিবাদও করি, এবং বিএমওএইচ আমাকে সেদিন বদলির হুমকি দিয়েছিলেন। শুনেছি বদলিরও নির্দেশ এসেছে।’’ পাল্টা, বিএমওএইচ বলেন, ‘‘হুমকির কোনও ঘটনাই ঘটেনি বরং ওই মহিলার স্বামী সেই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যে গর্ভপাতের ভিডিও রেকর্ডিং করার অভিযোগ করেছেন তা মারাত্মক ও অনৈতিক কাজ। স্বাস্থ্য দফতর তদন্ত করুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy