E-Paper

‘আমি যে গান গেয়েছিলেম’, অঞ্জনা-স্মৃতিতে ভাসল জেলা

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার শহরের পাটাকুড়া এলাকায় অভিনেত্রীর পৈতৃক বাড়ি ছিল। পরে, সে বাড়ি অবশ্য বিক্রি করে দেওয়া হয়।

অরিন্দম সাহা

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৫৯
অস্তাচলে: কোচবিহারের ঘরের মেয়ে আরতী।

অস্তাচলে: কোচবিহারের ঘরের মেয়ে আরতী। নিজস্ব চিত্র।

‘ঘরের মেয়ে’ আরতিই পরে হয়েছিলেন বাংলার খ্যাতনামা অভিনেত্রী। উত্তম কুমারের সঙ্গে একাধিক ছবিতে ‘নায়িকা’র ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। জুটি বেঁধেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। শনিবার দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল সেই অঞ্জনা ভৌমিকের। মৃত্যুসংবাদ ছড়াতেই শোকের আবহ ছড়িয়ে পড়ে রাজনগরে। স্মৃতিতে ভাসছেন অনেকেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার শহরের পাটাকুড়া এলাকায় অভিনেত্রীর পৈতৃক বাড়ি ছিল। পরে, সে বাড়ি অবশ্য বিক্রি করে দেওয়া হয়। শহর লাগোয়া ডাউয়াগুড়ি এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতেও এক সময় যাতায়াত ছিল তাঁর। সেখানে থাকতেনও। স্কুলজীবন শেষ করে জাদুকর পি সি সরকারের দলের সঙ্গে যুক্ত হন আরতি। পরে, তিনি অঞ্জনা নামে পরিচিত হন।

পাটাকুড়ার বাসিন্দা, প্রবীণ মলয় কুমার বসু বলেন, “আমার বাড়ির কাছেই ওদের বাড়ি ছিল। ছোটবেলা থেকে দেখেছি। ওকে আরতি নামেই ডাকতাম। সুনীতি অ্যাকাডেমিতে পড়াশোনা করত। যত দূর মনে পড়ছে, সম্ভবত তখন সে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। পাড়ার দুর্গাপুজো উপলক্ষে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মহেশ নাটকে আমিনার চরিত্রে দারুণ অভিনয় করেছিল। নাটকটি খুব প্রশংসিত হয়েছিল। আমি দেখেছিলাম। ওঁর মৃত্যুর খবরে ভীষণ খারাপ লাগছে।”

শহরের দেবীবাড়ি লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব নিলিমেশ ধরের কথায়, “আত্মীয়তা থাকায় আমি ওঁকে ছোড়দি বলেই ডাকতাম। কলকাতায় চাকরি জীবনের শুরুতে কিছু দিন ছোড়দির বাড়িতে থাকতাম। অনেক স্মৃতি মনে আসছে। এক দিন ছোড়দি সিঁথি এলাকায় সিনেমা হলে আমাকে নিয়ে ধন্যি মেয়ে ছবি দেখতে নিয়ে গিয়েছিলেন। তখন পরিচিত মুখ উনি। ছবি শুরুর পরে হলে যান। সিনেমা শেষের আগে বেরিয়ে বাড়িতে ফেরেন।”

কোচবিহার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মিনা চক্রবর্তীও স্মৃতিমেদুর। তাঁর কথায়, “আমার বাপের বাড়ির কয়েকটা বাড়ি পরেই ছিল ওঁর বাড়ি। সুনীতি অ্যাকাডেমিতে পড়াশোনা করতেন। তৃতীয় শ্রেণিতে আমি ওই স্কুলে ভর্তি হই। সেই সময় সিনিয়র দিদি হিসেবে আমাকে সঙ্গে করে তিনি স্কুলে নিয়ে যেতেন।”

ঘরের মেয়ের মৃত্যুতে রাজনগরের নাট্যজগতেও শোকের আবহ। কোচবিহারের বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব দীপায়ন ভট্টাচার্য বলেন, “১৯৫১ সালে কোচবিহারের ল্যান্সডাউন হলে ‘ছেঁড়া তার’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। ওই নাটকে অভিনেত্রীদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। পরে, উত্তমকুমারের সঙ্গে তাঁকে সিনেমায় দেখেছি। নাট্যজগৎ তো বটেই, সিনেমা জগতেরও অপূরণীয় ক্ষতি হল।”

এক সময়ে যে বাড়িতে দিন কেটেছে আরতির, সে বাড়িতে এখন থাকেন তপন দত্ত। তাঁর কথায়, “আমার বাবা ওঁর বাবার থেকেই বাড়িটা কিনেছিলেন।”

কোচবিহারের ডাউয়াগুড়ি থেকে সুনীতি অ্যাকাডেমিতেও ছড়িয়ে তাঁর নানা স্মৃতি। সুনীতি অ্যাকাডেমি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মৌমিতা রায় বলেন, “উনি স্কুলের প্রাক্তনী। খারাপ লাগছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Cooch Behar Tollywood

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy