চাহিদা: জলপাইগুড়ি বাজারে ইলিশ। নিজস্ব চিত্র
দেখা মিললেও কি নাগালে কুলোবে, এই সংশয়েই বাজারে ঢুকেছিলেন অনেকে। কেউ খানিকটা কুণ্ঠা নিয়েই দর জিজ্ঞেস করেছিলেন। পাঁচশো টাকা কেজি শুনে হাসি ফুঁটেছে তাঁদের মুখে। দাঁড়িপাল্লায় চাপানোর আগে পরিচিত ক্রেতাকে বিক্রেতা সতর্কীকরণও করেছেন, ‘‘দাদা, হিমঘরের কিন্তু।’’ মুখ খানিকটা বেজার হলেও, ইলিশ নিতে ব্যাগ এগিয়ে দেওয়া বাসিন্দার সংখ্যা সকাল থেকে জলপাইগুড়ি স্টেশন বাজারে মোটেই কম নয়।
শনিবার থেকে হিমঘর থেকে দেদার ইলিশ বার করা হয়েছে বলে মাছ বিক্রেতাদের দাবি। সরস্বতীয় পুজোয় ইলিশের চাহিদা বাড়ে বলেই হিমঘরে রাখা হয়। এ দিন যে ইলিশ বিক্রি হয়েছে তার প্রায় সবই এক কেজির কম ওজনের। ডায়মন্ডহারবার থেকে আনা ইলিশ হিমঘরে দীর্ঘদিন থাকায় স্বাদ তেমন না হলেও, দেদার বিক্রি হয়েছে। স্টেশন বাজারের মাছ ব্যবসায়ী রাজেশ শাহ বলেন, “অনেকদিন পর ভাল পরিমাণে ইলিশ উঠেছিল, বিক্রিও হল ভালই।” সরস্বতী পুজোয় অনেক বাড়িতেই ইলিশ হয়। এই সময় দীঘা থেকে কিছু মাছ জলপাইগুড়ি বাজারে গত বছরও আনা হয়েছিল। তবে এ বছর তাজা মাছের জোগান না থাকায় হিমঘরের মাছ বের করেছেন ব্যবসায়ীরা। মাছের দামও ছিল কম। দিনবাজারের মাছের পাইকারি ব্যবসায়ী মিঠু শাহ দাবি করেন, শনিবার যে ইলিশ বাজারে বিক্রি হয়েছে তার স্বাদ ভালই ছিল। আজ রবিবারেও বাজারে ইলিশ মিলবে বলে জানা তিনি। রবিবারে চাহিদা বেশি থাকায় দাম বাড়তে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
সরস্বতী পুজোর সঙ্গে বাঙালিদের বিশেষত পূর্ববঙ্গীয়দের অনেকদিনের প্রথা। এর সঙ্গে শাস্ত্রের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি প্রবীণ হোটেল ব্যবসায়ী অজিত দাস। বিজয়া দশমীর পর থেকে ইলিশ খাওয়া পূর্ববঙ্গে বন্ধ থাকত। এর কারণ হিসেবে যে ব্যাখ্যা প্রচলিত তা হল দুর্গাপুজোর পর অক্টোবর থেকে খোকা ইলিশ সমুদ্রে ফিরে যায়। সে সময় মাছ ধরলে ইলিশের বংশবৃদ্ধি আটকে যায়। সেই খোকা ইলিশ সমুদ্রের নোনাজলে স্বাদু হয়ে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ফের নদীর মিঠে জলে ফিরে আসে। সে কারণেই সরস্বতী পুজো থেকে ইলিশ খাওয়া যায় বলে প্রলিত রয়েছে। অজিতবাবুর কথায়, “সরস্বতী পুজোর নিরামিষ খিচুড়ির সঙ্গে এক টুকরো ইলিশ মাছের ভাজাকে প্রসাদ মনে করেই খাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy